মো.সফিকুল আলম দোলন,প্রতিনিধি,পঞ্চগড়ঃ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে খালি চোখে দেখা যাচ্ছে হিমালয় পর্বতমালার সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কা নজঙ্ঘার। প্রতিবছর নভেম্বরে শুরুর দিকে কা নজঙ্ঘা দেখা গেলেও এবার অক্টোবরের শেষের দিকের থেকে সকালে দেখা মিলেছে অপরূপ কা নজঙ্ঘার মনোরম দৃশ্য।
বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) সকালে তেঁতুলিয়া উপজেলার ডাকবাংলোসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে খালি চোখে দেখা মিলেছে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য। এই হিমালয় পর্বত খালি চোখে দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তেঁতুলিয়ায় আসতে শুরু করেছে পর্যটকরা। গত শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) ভোর ৫ টায় দেখা যায় তেঁতুলিয়া পিকনিক কর্ণারে প্রচুর পর্যটকের সমাগম। তারা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে একদিন আগেই এসেও অবস্থান করছে এই হিমালয় পর্বত কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য উপভোগ করার জন্য।
মাউন্ট এভারেস্ট ও কে২ এর পরে পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা , যার উচ্চতা ৮,৫৮৬ মিটার (২৮,১৬৯ ফুট)। জানা যায়, দুই মেরু রেখার বাইরে সবচেয়ে বেশি বরফ ধারণ করে রেখেছে হিমালয় পর্বতমালা। আর সূর্যের সব রঙেই যেন নিজের মধ্যে ধারণ করে রেখেছে হিমালয়ের সর্বোচ্চ পর্বত কাঞ্চনজঙ্ঘা। তাই সূর্যের আলো বাড়ার সঙ্গে ক্ষণে ক্ষণে পাল্টাতে থাকে হিমালয় ও কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ। প্রথমে লাল রঙ দেখা গেলেও সেই রং লাল থেকে পাল্টে গিয়ে কমলা রঙের হয় তারপর হলুদ রঙ হয় সর্বশেষ সাদা দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা অপরূপ সৌন্দর্য্য।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস ও উইকিপিডিয়ার তথ্যানুযায়ী, কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গ নেপাল ও ভারতের সিকিম সীমান্তে অবস্থিত। বাংলাদেশের সর্ব-উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর থেকে নেপালের দূরত্ব ৬১ কিলোমিটার, ভুটানের দূরত্ব ৬৮ কিলোমিটার, চীনের দূরত্ব ২শ কিলোমিটার, ভারতের দার্জিলিংয়ের দূরত্ব ৫৮ কিলোমিটার, শিলিগুড়ির দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। অন্যদিকে হিমালয়ের এভারেস্ট শৃঙ্গের দূরত্ব ৭৫ কিলোমিটার আর কাঞ্চনজঙ্ঘার দূরত্ব ১১ কিলোমিটার। কিন্তু মেঘ-কুয়াশামুক্ত আকাশের উত্তর-পশ্চিমে তাকালেই দেখা মেলে বরফ আচ্ছাদিত সাদা পাহাড় কাঞ্চনজঙ্ঘার। হিমালয়ের পাদদেশে তেঁতুলিয়া উপজেলা অবস্থিত হওয়ায় খালি চোখে দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। প্রতিবছর নভেম্বর মাসের শুরু বা মাঝামাঝিতে দেখা গেলেও আকাশ পরিস্কার হওয়ার কারণে অক্টোবরের শেষের দিকের থেকে সকালে দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, সকালে আকাশ পরিস্কার থাকার কারণে খালি চোখে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মিলেছে।
তেঁতুলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলু বলেন, প্রতি বছর শীতকালে তেঁতুলিয়ায় হাজার হাজার পর্যটক খালি চোখে হিমালয় পর্বত চূড়া কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে আসে। এবছর করোনা ভাইরাসের মধ্যেও অনেক পর্যটক তেঁতুলিয়ায় আসতে শুরু করেছে।
এছাড়াও তেঁতুলিয়ার সমতলের চা বাগান পর্যটকদের আকর্ষণ করেছে, সরকারি পৃষ্টপোষকতা পেলে তেঁতুলিয়া দেশের অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে।