প্রত্যয় ঢাকা ডেস্ক : শীত এলেই পাখির আঘাতে বিমান দুর্ঘটনার ঝুঁকি অন্য সময়ের তুলনায় বেশি থাকে। তবে দেশের প্রধান বিমানবন্দর শাহজালাল অন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ থেকে সুরক্ষায় নেই কার্যকর পদক্ষেপ। গত কয়েক বছর ধরেই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা কর্তৃপক্ষ বললেও দৃশ্যমান কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি। পাখি তাড়াতে ৬ জন বার্ড শুটার থাকলেও বন্দুক আছে মাত্র ২টি। বেবিচক বলছে, শিগগিরই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বার্ড হিট থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সারা বিশ্বের বিমানবন্দরগুলোতে পাখি তাড়াতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। যা দেশের বিমানবন্দরগুলোতে নেই। ৬ জন বার্ড শুটার আছেন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। তাদের কাজ বিমানবন্দরে পাখি তাড়ানো। তবে ৬ জন বার্ড শুটারের জন্য বন্দুক মাত্র ২টি। ফলে বিশাল এলাকাজুড়ে পাখি তাড়ানোর কাজে হিমশিম খাচ্ছেন শুটাররা।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে খোলা জায়গায় সারা বছর পাখি বিচরণ থাকে। তবে শীতের মৌসুমে অতিথিসহ নানা ধরনের পাখির আগমন বাড়ে। এতদিন বিমানবন্দরের চারপাশে জলাশয়ের আসতো পাখি। তবে বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনালের কাজের জন্য জলাশয় কমলেও সৃষ্টি হয়েছে নতুন সংকট। মাটির কাটার ফলে নিচের পোকা ওপরে আসায় খাবারের জন্য আসছে পাখি। অন্যদিকে বিমানবন্দরের আশপাশের এলাকায় ঘাস, ঝোপঝাড় থাকায় পাখিদের বিচরণ বেশি। ফলে বাড়ছে বার্ড হিটের (পাখির আঘাত) ঝুঁকি। বিমানবন্দরে বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণের সময় কম উচ্চতায় নেমে আসার কারণে বার্ড স্ট্রাইক ঘটার ঘটতে পারে। বার্ড স্ট্রাইকের কারণে বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার ঝুঁকিও রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ-উল আহসান বলেন, শীতকাল চলে আসছে, দিনে দিনে বার্ডের হ্যাজার্ড বাড়ছে। ম্যানুয়ালি বার্ড শুটার দিয়ে আমরা কার্যক্রম বাড়িয়ে দেবো। আমাদের বন্দুকের সংকট আছে। বন্দুক সংগ্রহ করতে আইনগত কিছু নিয়ম আছে, সেগুলো অনুসরণ করে বন্দুক সংগ্রহ কিছুটা সময় সাপেক্ষ। এজন্য আমার বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহায়তা নিচ্ছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পাইলট বলেন, আমাদের দেশে প্রায় বার্ড হিটে হচ্ছে, কিন্তু এর জন্য স্থায়ী কোনও সমাধান দেখছি না। বিশ্বে এখন নতুন নতুন অনেক প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। লেজার লাইট, আলট্রা সাউন্ডসহ অনেক ধরনের ব্যবস্থা আছে পাখি তাড়ানোর জন্য। বন্দুক দিয়ে পাখি হত্যা জীববৈচিত্র্যের জন্যও হুমকি, ফলে প্রাচীন এ পদ্ধতি থেকে সরে আসাও উচিত।
জানা গেছে, বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণের সময় বার্ড হিটের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। বিমানের ইঞ্জিনে পাখি প্রবেশ করলে আগুন ধরে যেতে পারে। এছাড়া, ইঞ্জিনের ফ্যান ব্লেড ও স্পিনার ক্ষতিগ্রস্ত হলে ইঞ্জিন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, বহুদিন ধরে আমাদের এখানে এ (বার্ড হিট) সমস্যা আছে। আমাদের অ্যান্টি বার্ড সিস্টেম করা হয়েছিল, কিন্তু বেশি দিন টেকেনি। আমরা আধুনিক অ্যান্টি বার্ড সিস্টেম খুঁজছি, গত ৬ মাস ধরে এজন্য টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন করা হয়েছে। এ কাজটি প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে, করোনার কারণে আমাদের কিছুটা দেরি হয়েছে। শিগগিরই প্রকিউরমেন্টে যাবো।
সূত্র :বাংলা ট্রিবিউন