আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আয়ারল্যান্ড সরকার ইসরাইলের অবৈধ বসতি স্থাপনকে ফিলিস্তিনি ভূমির কার্যত দখল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ নিয়ে আইরিশ পার্লামেন্টে উত্থাপিত প্রস্তাবটি পাস হলে দেশটি থেকে ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করা হতে পারে, এমনকি অবরোধও আরোপ করা হতে পারে। ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোনো ইউরোপিয়ান দেশের এ ধরনের প্রস্তাব এটাই প্রথম।
আইরিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিমন কভনি মঙ্গলবার বলেন, বিরোধী সিন ফেইন প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছে। আর প্রস্তাবটির প্রতি পুরো আয়ারল্যান্ডের গভীর অনুভূতি রয়েছে।মধ্য-ডানপন্থী ফিন গেল পার্টির সদস্য কোভনি পার্লামেন্টে বলেন, ইসরাইল যে গতিতে, মাত্রায় ও কৌশলে বসতি সম্প্রসারণ করছে, তাতে করে বাস্তবে কী ঘটছে, সে ব্যাপারে আমাদের সৎ থাকতে হবে। এটা আসলে কার্যত দখলদারিত্ব।
তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা সহজভাবে নিতে পারছি না। আমরা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত প্রথম রাষ্ট্র হিসেবে তা করতে চাচ্ছি। আমরা কিছু করার জন্যই এ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছি।সিন ফেইনের পররাষ্ট্রবিষয়ক মুখপাত্র জন ব্র্যাডলি পার্লামেন্টে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছেন। তিনি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন। আরো কয়েকটি দল প্রস্তাবটি সমর্থন করেছে।
প্রস্তাবটি পাস হলে আইরিশ সরকারকে সে দেশে আয়ারল্যান্ডে নিযুক্ত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করতে হবে। এছাড়া ইসরাইলের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অবরোধ আরোপ করতে হবে।বেশির ভাগ দেশই ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে দখল করা জায়গায় ইসরাইলি বসতি স্থাপনকে অবৈধ মনে করে। তাদের মতে, এসব কাজ ফিলিস্তিনিদের সাথে শান্তি স্থাপনে বাধা।
কোভনি বলেন, প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হতে পারে যদি তাতে গাজা থেকে ইসরাইলে সাম্প্রতিক নিক্ষেপ করা রকেটের নিন্দা করা হয়। কিন্তু বাম-ঘেঁষা সিন ফেইন দল হামাসের হামলাকে নিন্দা করে আনা সরকারি সংশোধনী প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।ব্র্যাডলি বলেন, গত জানুয়ারি থেকে ইসরাইল আরো ২,৫০০ বসতিকে অনুমোদন করেছ। এসবের মধ্যে ৪৬০টি পূর্ব জেরুসালেমে।
অর্গ্যানাইজেশন পিস নাও ২০২০ সালে জানিয়েছিল, ইসরাইল ১২ হাজার বসতি ইউনিটের অনুমোদন দিয়েছে বা তা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। ২০১২ সালের পর এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যা।
ইসরাইল ও হামাসের মধ্য ১১ দিনের যুদ্ধের পর অস্ত্রবিরতির পর আয়ারল্যান্ডে এই প্রস্তাব উত্থাপিত হলো।
ইসরাইলি হামলায় গাজায় অন্তত ২৫৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। এদের মধ্যে ৬৬ জন শিশু। আর ইসরাইলে নিহত হয়েছে অন্তত ১২ জন।
সূত্র : আল জাজিরা ও গার্ডিয়ান