আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আর জি করের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় প্রায় ২৪ দিনেরও বেশি সময় ধরে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গসহ সমগ্র ভারত। প্রতিবাদে চলছে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি। এবার নবান্ন ও রাজভবনের মধ্যে ফের সংঘাত দেখা দিয়েছে। গত রোববার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জরুরি ভিত্তিতে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকতে বলেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
এবার ফের বার্তা দিলেন রাজ্যপাল। সোমবার রাতে রাজভবন থেকে জানানো হয়, মুখ্যমন্ত্রীকে সংবিধানের ১৬৭ (সি) অনুচ্ছেদ মেনে চলতে অনুরোধ করা হচ্ছে। এর ফলে মনে করা হচ্ছে নবান্ন ও রাজভবনের সংঘাত চরমে উঠতে পারে। এর আগেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পর সংবিধানের এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাজ্যপাল রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চেয়েছিলেন।
সংবিধানের ১৬৭ অনুচ্ছেদে রাজ্যপালকে যে কোনও সিদ্ধান্ত জানানোর ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বগুলো সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। ১৬৭ অনুচ্ছেদের অধীনে, রাজ্যপাল এবং রাজ্য মন্ত্রিসভার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী সংযোগকারী হিসাবে কাজ করেন। যে কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব হলো রাজ্যের প্রশাসন এবং আইনি প্রস্তাব সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার সব সিদ্ধান্ত রাজ্যপালকে জানানো।
এ ছাড়াও, রাজ্যপাল যদি চান, তা হলে মন্ত্রিসভার বিবেচনার জন্য এমন কোনও বিষয় পেশ করতে হবে যার বিষয়ে কোনো মন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিন্তু মন্ত্রিসভা বিবেচিত করেনি।
এদিকে গত মঙ্গলবারই রাজ্যের বিধানসভায় পাশ হয়েছে ধর্ষণ-বিরোধী বিল ‘দ্য অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড (ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৪’। বিধানসভায় পাশ হওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী তা পাঠানো হয়েছিল রাজ্যপালের কাছে।
কিন্তু রাজভবনের তরফ থেকে জানানো হয় বিলের সঙ্গে প্রয়োজনীয় ‘টেকনিক্যাল রিপোর্ট’ না থাকায় রাজ্যপাল সেই বিলে সম্মতি দিতে পারছেন না। গত শুক্রবার রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ রাজ্যপালকে সেই রিপোর্ট জমা দেন। তার পরেই সেই বিল বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল। এর পরে গত রোববার সন্ধ্যায় রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং অবিলম্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকতে বলেন।
রাজ্যপাল জানান, তিনি চান মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের অপসারণ নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক।