গাজী তাহের লিটন,ভোলা: সময় ও জীবনের গতির সাথে তাল মেলাতে পারেননি তৈয়ব আলী।নিম পাতার তেতো স্বাদ মুখে নিয়ে অভাবের সংসারে তার জন্ম।ছোটবেলা থেকেই রিকশার প্যাডেলে পা চালিয়ে সংসারে অর্থের যোগান দিচ্ছে সে।ভাঙ্গা রিকশা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এই মানুষটির সাথে আজ বুধবার উপকূলীয় জেলা ভোলার প্রধান সড়কে তার সাথে দেখা। তখনও টপটপ করে তার শরীর থেকে ঘাম ঝরছে।
তৈয়ব আলী(৪৫) এ প্রতিবেদককে আকুতি জানিয়ে রিকসায় তোলেন। গন্তব্যে পৌঁছার পর সে জানায় দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে রিকশা চালানোর গল্প। ভোলার বোরহানউদ্দিন ০৪ নং কাচিয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মৃত মহর আলী করাতির পুত্র সে। বিবাহিত জীবনে সে দুই ছেলে ও দুই মেয়ের বাবা।মাথা গোঁজার ঠাঁই থাকলেও রিকশা চালিয়ে ২-৩ শত টাকায় অনেক কষ্টে সংসার চালান।উপার্জন করতে না পারলে, মাঝেমধ্যে উপোসও করতে হয় পুরো পরিবারকে।
তৈয়ব আলী জানান,’শরীরে কুলোয় না, প্যাডেল চেপে রিকশা চালাতে গিয়ে প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়ি।আগের মতো এসব গতিহীন রিকশায় যাত্রীরা এখন আর উঠতে চায় না।ব্যাটারি চালিতো রিকশার ভীড়ে আমি খুব একা।পুরো উপজেলায় পায়ে চাপা রিকশা মনে হয় আমারই আছে।’
জানাগেছে, সরকারি ভিজিডি, রেশনকার্ডসহ কোনো অনুদান সে পায় না।অভাব, অনটনে তার সংসারে সবসময় রোগবালাই লেগেই থাকে।
তৈয়ব আলী, জীবন-সংগ্রামে ব্যর্থ এক গল্পের নাম। কষ্টের ঘাম ঝরানো উপার্জনে জীবনের অনেকটা সময় সে পার করেছে।ভোগবলাসীদের কাছে হয়তো অস্তমিত এ জীবনের গল্প হৃদয়ে এতোটুকু বরফ গলাবে না! কিন্তু, ঘুণেধরা সমাজে এখনো মানবিক বিত্তবান মানুষ রয়েছে, যাঁদের মহানুভবতায় সমাজের হতদরিদ্র মানুষ খুঁজে পায় আলোকিত জীবনের সন্ধান। তেমনি সমাজের মানবিক বিত্তবানদের মহানুভব আর্থিক সহায়তায় দরিদ্র রিকশা চালক তৈয়ব আলীর সংসার জীবনেও আসতে পারে নতুন আশার আলো।