রাকিব শান্ত, উত্তরবঙ্গ ব্যুরো প্রধানঃ বগুড়ায় অটোরিকশা হারানো হায়দার আলীর পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা পুলিশ, বগুড়া। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ‘কান্না থামছে না হায়দারের’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর হায়দারের অটোরিকশা চুরির ঘটনা নজরে আসে বগুড়া জেলার সম্মানিত পুলিশ সুপার জনাব সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বিপিএম, পিপিএম মহোদয়ের। পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে আজ ১৫ জুলাই (শনিবার) বগুড়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে তার হাতে নগদ অর্থ ও খাদ্য সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। এসময় হায়দারের চুরি হওয়া অটোরিকশা দ্রুত উদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব মোঃ সিগ্ধ আখতার পিপিএম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরে গোহাইল রোড থেকে হায়দারের ইজিবাইক চুরি হয়। এ ঘটনায় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর তার মানবিক আবেদন পুলিশের নজরে আসে। এজন্য পুলিশ সুপারের নির্দেশে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে হায়দারকে নগদ ১০ হাজার টাকা ও খাদ্য সামগ্রী উপহার দেওয়া হয়েছে। এই চুরির ঘটনায় শনিবার বগুড়া সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শনাক্তে কাজ করা হচ্ছে। থানা পুলিশের পাশাপাশি জেলা গোয়েন্দা পুলিশ গুরুত্বসহ ইজিবাইক উদ্ধারে কাজ করছে। হায়দারের সবরকম মানবিক আবেদনে পুলিশ কাজ করবে। এছাড়াও দ্রুত সময়ে তার ইজিবাইক উদ্ধার ও জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে।
এ সময় হায়দার আলী বলেন, ‘আমার খারাপ সময়ে পুলিশ যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে তাঁর জন্য কৃতজ্ঞ। অটোরিকশা চুরির পর থেকে স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তবে পুলিশ আমাকে আশ্বাস দিয়েছে অটোরিকশা তারা উদ্ধার করে দিবেন। তারা আমাকে যে সহযোগিতা করেছে তাতে আপাতত পরিবার নিয়ে খেয়ে-পরে থাকতে পারবো। জমিজমা ও ধারদেনা করে গত রোববারে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় অটোরিকশা কিনেছিলাম। এখন আমি নিঃস্ব।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে শহরে সাতমাথায় প্রবেশ করায় হায়দার আলীর অটোরিকশার সিট খুলে নিয়ে জব্দ করে ট্রাফিক পুলিশ। পরে শহরের গোহাইল রোডে অটোরিকশা রেখে তিনি ট্রাফিক পুলিশের বক্সে যান সিট ছাড়িয়ে নিতে। অনেক কাকুতি-মিনতি করেও সিট না পেয়ে হায়দার ফিরে এসে দেখেন, অটোরিকশা নেই। পরে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও অটোরিকশাটি আর পাননি। জীবিকার একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে কান্না থামছিলো না হায়দারের। হাঁপানি রোগে আক্রান্ত হায়দারের তিন সদস্যের সংসারের জীবিকার একমাত্র উৎস ছিল ইজিবাইকটি।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) জনাব মোঃ আব্দুর রশিদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) জনাব মোঃ মোতাহার হোসেন, বগুড়া সহ জেলা পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।