রাকিব শান্ত, উত্তরবঙ্গ ব্যুরো প্রধান: মৌসুমের শেষেও আমদানির সাড়ে তিনগুণ দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে আলু। ভারত থেকে মাত্র ২১ টাকা ৬০ পয়সা কেজি দরে আমদানি করা আলু পাইকারি ও খুচরা বাজারে যথাক্রমে সর্বোচ্চ ২৮ ও ৩৫ টাকায় বিক্রির কথা থাকলেও বাস্তবে তা ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে কৃষকের নতুন আলু বাজারে প্রবেশ করলেও সিন্ডিকেটের কারসাজিতে দামে কোনো প্রভাব পড়ছে না। ব্যবসায়ীদের অবৈধ মুনাফা অর্জনের গভীর ষড়যন্ত্র ক্রেতাদের পকেটে চাপ তৈরি করছে। জানা গেছে, শ্যামবাজারের আড়তদার সিন্ডিকেট আমদানিকারকদের সহযোগিতায় আলুর দাম ইচ্ছেমতো নির্ধারণ করছে। আমদানিকারকরা ২১ টাকা দরের আলু আড়তদারদের কাছে ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রির নির্দেশ দিচ্ছেন। ফলে খুচরা বাজারে সেই আলুর দাম পৌঁছে যাচ্ছে ৭৫ টাকায়।
কেবল আমদানি নয়, দেশীয় কোল্ড স্টোরেজেও চলছে আরেক দফা সিন্ডিকেট। সংরক্ষিত পুরাতন আলুর দাম এক মাস আগে যেখানে ৩৫-৪০ টাকা ছিল, সেখানে তা এখন ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই আলু খুচরা পর্যায়ে ক্রেতাদের কিনতে হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকায়।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাজার করতে আসা মো. রবিউল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “প্রতি বছর এই সময়ে আলুর দাম ২৫ টাকার নিচে থাকে। এখন ৭৫ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের পক্ষে খাবার জোগানো অসম্ভব হয়ে যাবে।”
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, “বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের হাতে সব তথ্য থাকা সত্ত্বেও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে গাফিলতি স্পষ্ট। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য থামাতে না পারলে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস বাড়তেই থাকবে।”
বাজারে চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেটের কারণে ক্রমাগত বেড়ে চলা আলুর দাম ভোক্তাদের জন্য ভয়াবহ বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বাজার ব্যবস্থাপনায় কার্যকর নজরদারি এবং সিন্ডিকেট ভাঙার কঠোর পদক্ষেপের তাগিদ দিয়েছেন।