স্পোর্টস ডেস্ক: মাঠের বাইরে চলছে মেসি-ম্যানিয়া, আর মাঠে লিওনেল মেসির অবিরাম ঝলক। গোল পেলেন টানা ছয় ম্যাচে। যা লিগস কাপের অনন্য এক রেকর্ড। তার ওপর ভর করেই বড় জয় নিয়ে প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠে গেছে ইন্টার মায়ামি। কিছুটা চোট থাকায় ম্যাচের আগে আর্জেন্টাইন মহাতারকার খেলা নিয়ে শঙ্কা ছিল। সেই অনিশ্চয়তা কাটিয়ে মেসি তো খেললেনই, দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোলও করেছেন।
আজ (১৬ আগস্ট) ভোরে পেনসিলভানিয়ার সুবারু পার্ক স্টেডিয়ামে ফিলাডেলফিয়া ইউনিয়নের মুখোমুখি হয় মায়ামি। মাত্র তিন মিনিটেই গোলের যাত্রা করা দলের স্কোরলাইনে শেষ পর্যন্ত চারবার নাম তুলেছেন মায়ামি ফুটবলাররা। এর মধ্যে ২০তম মিনিটে ছিল দলের সবচেয়ে বড় তারকার গোলটি। তাও সেটি ছিল ডি-বক্সের অনেক বাইরে থেকে মাটি ছুঁয়ে নেওয়া শটে। শেষ পর্যন্ত ফিলাডেলফিয়াকে ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে মায়ামি।
এদিন ফ্লোরিডার ক্লাবটির হয়ে প্রথম গোলও পেয়ে গেছেন বার্সেলোনা থেকে যোগ দেওয়া জর্দি আলবা। এছাড়া একটি করে গোল করেছেন জোসেফ মার্টিনেজ ও ডেভিড রুইজ। ফিলাডেলফিয়ার হয়ে একমাত্র গোলটি করেন আলেহান্দ্রো বেদয়া। ঘরের মাঠে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হয়েও মায়ামির সামনে পাত্তাই পায়নি ক্লাবটি। ফিলাডেলফিয়াকে বিধ্বস্ত করা গোলে মায়ামি প্রথমবারের মতো কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স লিগেরও টিকিট পেয়ে গেছে।
ম্যাচের মাত্র তৃতীয় মিনিটেই নিজেদের অর্ধ থেকে দারুণ এক থ্রু বল বাড়ান সার্জি ক্রিস্তভ। এরপর বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডান প্রান্ত ধরে এগিয়ে দারুণ এক কোনাকুনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন মার্টিনেজ। চলমান প্রতিযোগিতায় এটি তার তৃতীয় গোল। তবে আগের দুটি ছিল পেনাল্টি থেকে, মেসিই নিজের সুযোগ ছেড়ে তাকে দিয়ে দেন। এরপর ২০তম মিনিটে ব্যবধানে দ্বিগুণ করে মায়ামি। সতীর্থের কাছ বল পেয়ে মার্টিনেজ বাঁ পাশে থাকা মেসিকে পাস দেন। তার বাঁ পাশে ছিলেন রবার্ট টেইলর। সবাই ভেবেছিলেন হয়তো তাকেই পাস দিবেন অধিনায়ক। কিন্তু তা না করে প্রায় ৩২ গজ থেকে আচমকা বুলেট গতিতে গড়ানো শট নেন মেসি। গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে হাতে লাগালেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি। আসরে এটা মেসির নবম গোল। এ নিয়ে টানা ছয় ম্যাচেই তিনি গোল পেলেন।
এরপর নিজের স্কোরের খাতা খুলেন আলবাও। বিরতিতে যাওয়ার আগমুহূর্তে টেইলরের কাছ থেকে পাওয়া বল নিয়ে তিনি বাঁ প্রান্ত ধরে এগিয়ে যান। এরপর ডি-বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে বল জালে পৌঁছান স্বাগতিক গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে। ৩-০ ব্যবধান নিয়ে বিরতির আগেই জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলে মায়ামি। এরপর অবশ্য জিততে হলে ফিলাডেলফিয়াকে অবিশ্বাস্য কামব্যাক করতে হতো।
দ্বিতীয়ার্ধে গোল শোধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে স্বাগতিক দলটি। অন্যদিকে অনেকটা রিল্যাক্স মুডে খেলতে থাকা মায়ামি দুটি বড় সুযোগ হাতছাড়া করে অফসাইডের বাধায়। এরপর নিজেদের ভুলে বল পেয়ে যায় ফিলাডেলফিয়া। কর্নার ঠিকভাবে ক্লিয়ার করতে না পারায় বল পেয়ে বেদয়া জোরালো শটে তাদের ব্যবধান কমান। এরপর অবশ্য মায়ামিও কিছুটা গতি বাড়ায়। ডিয়ান্দ্রে ইয়াদলিনের কাছ থেকে পাওয়া গোলে চতুর্থ গোলটি করেন বদলি খেলোয়াড় রুইজ। যা টানা মার্টিনোর দলের বড় জয় নিশ্চিত করে।
আমেরিকান লিগ সকারে (এমএলএস) টেবিলের তলানিতে থাকা মায়ামি একের পর এক টানা জয় পাচ্ছে। অথচ মেসি পা রাখার আগে দলটি ছিল টানা ১১ ম্যাচের পরাজিত। ডেভিড বেকহামের সেই ক্লাবটি প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছিল, সেই জয়যাত্রা তারা টেনে নিয়ে গেছে সেমিফাইনাল অবধি। অন্যদিকে এমএলএসের তিন নম্বরে থাকা ফিলাডেলফিয়া লিগস কাপেও শিরোপার প্রত্যাশায় খেলে আসছিল।
আগামী শনিবার (১৯ আগস্ট) মায়ামি প্রথম কোনো শিরোপার আশায় মন্টেরি কিংবা ন্যাশভিলের বিপক্ষে মাঠে নামবে।