অপ্রতিরোধ্য ধর্ষণ, উত্তরণের উপায় কী?
ধর্ষণ বাংলাদেশের প্রধান একটি সামাজিক ব্যাধি। সকালে ঘুম থেকে উঠে সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চোখ মিললেই দেখা যায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষণের ভয়ালো থাবা থেকে রেহাই পাচ্ছে না পাঁচ বছরের শিশু থেকে আশি বছরের বৃদ্ধরাও।
ধর্ষণের বেশিরভাগ ঘটনাই ধামাচাপা দেয়া হয়। ইতোপূর্বে একাধিক ধর্ষণ তার কোনো শাস্তিই হয়নি। আমরা জানতেও পারিনি। বিচ্ছিন্নভাবে দু’একটি ঘটনা মিডিয়াতে এলে আমরা কিছু সময়ের জন্য প্রতিবাদ করি। তারপর যার যার কাজে ব্যস্ত হয়ে যাই।
আসকের (আইন ও সালিশ কেন্দ্র) হিসেব মতে, চলতি বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯৪৮টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে৷
গত বছর সারা দেশে ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার ১ হাজার ৪১৩ নারী ও শিশু। ২০১৮ সালে সংখ্যাটি ছিল ৭৩২।
ধর্ষণপ্রবণতা বৃদ্ধি হওয়ার মূল কারণগুলো হলো, নগ্নতা, অতৃপ্ত যৌন আকাংক্ষা, বেহায়াপনা, অবাধ যৌনাচার, ক্ষমতাসীন ব্যক্তির সুযোগ পেয়ে কোনো দুর্বল মেয়ে, শিশু বা ছেলের ওপর ক্ষমতার প্রয়োগ, রাস্তার পাশে দেয়ালে কিংবা বিদ্যুতের খুঁটিতে নগ্ন পোস্টার, যৌন উত্তেজক অবৈধ বইয়ের রমরমা ব্যবসা, পাঠ্য বইয়ে যৌন শিক্ষার সুড়সুড়ি, অশ্লীল ছায়াছবি প্রদর্শন, ইন্টারনেটে অশ্লীল সাইটগুলো উম্মুক্ত করে দেয়া ইত্যাদি । এমন কি ধর্ষণের আরো একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে বিয়ের বয়স পেরিয়ে গেলেও ছেলে-মেয়েকে বিয়ে দেয়ার ব্যাপারে অভিভাকদের উদাসীনতা।
প্রতিকারঃ
১.আমাদের মন-মানসিকতা ঠিক করতে হবে।
২.পরিবারের উচিত, এ রকম যে কোনো জঘন্য অপরাধ গোপন না করে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা।
৩.অশ্লীল পত্রপত্রিকা ও বইয়ের ব্যবসা বন্ধ করতে হবে।
৪.ছেলে-মেয়েদেরকে যথাসময়ে বিয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
সর্বোপরি দলমত নির্বিশেষে কঠোর আইন প্রয়োগ করে ধর্ষকদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে তবেই মহামরি ব্যাধি ধর্ষণ সমাজ থেকে নির্মূল করা সম্ভব।
শাকিল আহমেদ
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়