রাতের আঁধারে অসহায় ও দরিদ্র মানুষদের ঘরে নিজের অর্থায়নে ত্রাণ-সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে মানবিক ছাত্রলীগ নেতা শওকত।
তিনি কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। একটা সময় কঠিন সময় পার করেছে। এই ত্যাগী নেতাকে পুরস্কার স্বরুপ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সদ্য হওয়া কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করে।
নিজ জন্মস্হান কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার লোকজনের কাছে তিনি মানবিক শওকত’ হিসেবে পরিচিতি।করোনার কবলে সারা বিশ্ব এক প্রকার অচল বললে ও চলে।বাংলাদেশে চলছে কঠোর লকডাউন।এই সময়ে খেঁটে খাওয়া মানুষের জীবন-ধারন করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে।এসব অসহায় ও দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে এই মানবিক ছাত্রলীগ নেতা। উপজেলায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিয়ে খাদ্যসামগ্রী দিয়ে আসেন এই ছাত্রলীগ নেতা। তাঁর এই উদ্যোগকে এলাকাবাসী স্বাগত জানিয়েছে। বুধবার (২১এপ্রিল) পর্যন্ত তিনি পাঁচ শতাধিক পরিবারের কাছে এক মাসের খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে।
এইচ.এম শওকত হোসেন বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রভাবে নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ অনেকটা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এজন্য কর্মহীন হয়ে পড়া খেটে খাওয়া মানুষদের কথা চিন্তা করে আমি গোপনে খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছি। এছাড়াও অসহায় গরীব, বিধবা ও প্রতিবন্ধী মানুষদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করছি।’
তিনি বলেন, ‘আসলে সাধারণ মানুষের কাতারে গিয়ে তাঁদের পাশে থাকতে পছন্দ করি। ছাত্রলীগ আমাদের মানবিকতা আমাদের শিখিয়েছে। এই মানবতা মানুষের সাথে ভাগ করতে চেষ্ঠা করছি। মুলত একদম ছিন্নমুল মানুষের পাশে থেকে তাদের সহযোগিতা করতে চেষ্ঠা করছি।’
আজ ২১ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তার একটি ফেসবুকে পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে।ফেসবুকে তিনি এক বৃদ্ধ মহিলার পাশে দাঁড়ানোর ভিডিও পোস্ট করেন। পাঠকদের জন্য স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
এই মহিলাকে আমি চিনি না, কখনো দেখছি বলেও মনে হয় না। আজকে সকাল থেকে তিন চারবার অফিসে এসেছে। কে যেন বলেছে, আমার দেওয়া ইফতারিতে এক মাস চলে যাবে। খুশিতে মহা আনন্দে আমার বাসায় এসেছে, সকালে দুইবার অফিসে আসলেও আমার অফিসের লোকজন প্রত্যেকবার কিছু টাকা হাতে দিয়ে বিদায় দেন। কারণ আমার নিজ বাড়ি থেকে ইফতারি বিতরণ করা হয়, অফিস থেকে নয়। আমার অফিসের লোকজন এই মহিলাকে শত অনুরোধ করার পরও উনি বাড়িতে যাবে না, অফিস থেকেই দিতে হবে।
ইফতারের পরে আমি অফিসে বসলে সিসিটিভিতে দেখতে পায় একটি মহিলা অফিসের দরজার সামনে বসে আছে। আমার অফিসের একজন লোক দরজা খুলে ঐ মহিলাকে একশত টাকার নোট হাতে দিয়ে বলে, আপনি চলে যান। কিন্তু আমি সিসিটিভিতে খেয়াল করলাম, মহিলাটি টাকা ফেরত দিচ্ছে এবং কান্না করে বলতেছে আমার সাথে দেখা করবে। আমি যদি চলে যেতে বলি তাহলে চলে যাবে।
আমি মহিলাটাকে ভেতরে আসতে বললাম, উনি আামকে দেখাতে চিৎকার দিয়ে কেঁদে উঠে বলে, “অবাজি ইতারা আরে দুয়ারে দে…..ইফতারি ন দিই..” আমি কৌতূহল হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি আমাকে চিনেন? উনি বললো, মোবাইলে কে যেন আমার ছবি দেখিয়েছে তাই উনি আমাকে চিনে। এমনকি উনি আল্লাহর কাছে কান্না করে বলেছে, আমার থেকে ইফতারি পেলে পেকুয়ার একজন বড় ওলি (হাশেম ফকির) এর দরবারে কিছু টাকা দিবে বলে নিয়ত করেছে!
কিছুক্ষণ স্থির থেকে চোখ বন্ধ করে রইলাম! সৃষ্টিকর্তা আমাকে দিয়েছে, এমনভাবে দিয়েছে যা আমি কখনো আশা করিনি! এরপরও সবসময় মনে করি, আমার এই হাত দিয়ে একটা মানুষের মুখে একমুঠো খবারা তুলে দেওয়ার ক্ষমতা নেই। কারণ এই পৃথিবীতে আসমান এবং জমিনে যা জীবজন্তু রয়েছে সকলের রিজিকের মালিক একমাত্র আল্লাহ। আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করলাম, আর বললাম মহান রাব্বুল আলামীন হয়তো আমার দানকে কবুল করেছে।
তাৎক্ষণিক বাড়িতে লোক পাঠিয়ে উনার জন্য একটি ইফতারের প্যাকেট ব্যবস্থা করে দিলাম। আল্লাহর কাছে দোয়া করে বললাম ‘ আমাকে সবসময় গরিব, অসহায়, বিধবা এবং এতিমদের দলে রেখো খোদা। আমি যেন আজীবন তাদের খেদমতে নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারি। ধন্যবাদ সবাইকে।
এভাবে অসহায় ও দরিদ্র মানুষের পাশে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন এই ছাত্রলীগ নেতা।