ওয়েব ডেস্ক: করিডর নিয়ে বাংলাদেশ কাজ করেছে, এমন মন্তব্য করেন নি গোয়েন লুইস। জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইসের ইংরেজিতে বলা বক্তব্যের সম্পূর্ণ ভুল অনুবাদ করেছে জর্মন সংবাদ সংস্থা ডয়েচে ভেলে। যেন “করিডর” প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ কাজ করছিল, কিন্তু জাতিসংঘ এতে জড়িত নয়। কিন্তু ঠিক কী বলেছিলেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস?
৪ জুন জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি আলোচনায় নির্বাচন, রাজনীতি নিয়ে তিনি কথা বলেন। প্রশ্নোত্তরে তিনজন সাংবাদিক ‘করিডর’ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেন। প্রথম প্রশ্নের যে উত্তর দিয়েছেন লুইস, সেটিই ভুল ভাবে বুঝেছে ডি ডব্লিউ। গোয়েন লুইসকে উত্তরোত্তর প্রশ্ন করার পর তিনি বলেন, এটা দুই দেশের বিষয়। “হিউম্যানিটারিয়ান করিডর একটি ফরমাল, লিগাল ইস্যু। এর জন্য সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে চুক্তি প্রয়োজন। বাংলাদেশ, মিয়ানমার, এবং সম্ভাব্য যেসব গ্রুপ এতে জড়িত তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে একমত হতে হবে। যদি হয়, জাতিসংঘ তখন সাপোর্ট দিতে পারবে। কিন্তু সেই চুক্তি, আমি যতদূর বুঝি, এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যে কোনো ধরনের আন্তসীমান্ত সম্পর্কের উন্নতি, সংঘাতের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের সাহায্য করার জন্য যেকোনো উদ্যোগকে জাতিসংঘ স্বাগত জানায়। কিন্তু সেখানে হিউম্যানিটারিয়ান করিডর প্রতিষ্ঠিত হয় নি, এবং এরকম কোনো করিডর প্রতিষ্ঠা করার আলোচনায় আমরা যুক্ত হইনি।” তার এই বক্তব্যে কোথাও “করিডর প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ কাজ করছে” এরকম কোনো ইঙ্গিতও নেই।
গত ১৩ মার্চ প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নে “করিডর” শব্দের উল্লেখ থাকলেও উত্তরের বেলায় জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব corridor এর বদলে aid channel বলেছিলেন।
এরপর ৮ এপ্রিল এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান তার বক্তব্যে “মানবিক সহায়তা”র কথা বলেছিলেন; করিডর না। ২৭ এপ্রিল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা “হিউম্যানিটেরিয়ান প্যাসেজ” এর কথা বলেছিলেন, করিডর-এর কথা কেউ বলেননি।
গত ২১ মে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ড. খলিলুর রহমান বলেন যে, যুদ্ধবিধ্বস্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতিতে ‘করিডর’ তৈরির কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। সেখানে শুধু ত্রাণ পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। তিনি আরো বলেছিলেন, “করিডর নিয়ে আমাদের সঙ্গে কারোর কোনো কথা হয় নাই। এবং তাদের সঙ্গে কথা হবে না।”
সুতরাং এটি স্পষ্ট, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে করিডর-এর কথা কখনো বলা হয়নি। বরং ত্রাণ পাঠানো এবং সেটি করতে হিউম্যানিটারিয়ান প্যাসেজ-এর ব্যাপারে বিভিন্নবক্তব্য দেয়া হয়েছে। গোয়েন লুইস প্রেস ক্লাবের আলোচনায় এক পর্যায়ে বলেন, “আমি জানি না হিউম্যানিটারিয়ান করিডরের প্রশ্ন কোত্থেকে এলো।”