প্রবাস: দীর্ঘমেয়াদি লকডাউনে হাঁপিয়ে উঠেছেন অস্ট্রেলিয়ার বেশ কয়েকটি শহরের বাসিন্দারা। তাই আবারও দলবেঁধে নেমে এসেছেন রাজপথে।
বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে জড়িয়েছেন সহিংসতায়, উপেক্ষা করেছেন স্বাস্থ্যবিধিও। দেশটির পূর্বাঞ্চলের মেলবোর্ন, সিডনি, ব্রিসবেন ও পশ্চিমের পার্থ শহরের বিক্ষোভে অংশ নিতে দেখা গেছে সহস্রাধিক মানুষকে।
মেলবোর্ন
অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মেলবোর্নে প্রায় চার হাজারেরও বেশি লোকসমাগমে লকডাউন বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভে পুলিশ বাধা দিলে সহিংস হয়ে উঠে উত্তেজিত জনতা। এক পর্যায়ে তারা পুলিশের উপর হামলে পড়ে এবং বিভিন্ন জিনিস ছুড়ে মারে।
এতে ছয়জন পুলিশ আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ২১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। প্রায় ৫ হাজার ডলার জরিমানা করা হয়েছে তাদের।
মেলবোর্ন শহরের স্প্রিং স্ট্রিটে সংসদ ভবনের কাছে বিক্ষোভটি শুরু হয়েছিল। ভিক্টোরিয়া পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, যদিও কিছু শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারী মিছিলে অংশ নেন, তবে যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের অধিকাংশই সহিংসতার কথা মাথায় রেখে এসেছিলেন, যেটি অস্ট্রেলিয়ার ভাবমূর্তির অন্তরায়।
সিডনি
অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম শহর সিডনিতেও লকডাউন বিরোধী সমাগম দেখা যায়। বিক্ষোভ দমাতে তৎপর প্রশাসন প্রায় দেড় হাজারের বেশি অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এছাড়া শনিবার বিকেল তিনটা পর্যন্ত ট্যাক্সি এবং উবারে যাত্রীদের মূল শহরে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার আদেশ জারি করে কর্তৃপক্ষ।
সিটি সেন্টার স্টেশনে ট্রেন থামতেও দেওয়া হয়নি। সিডনি শহরের অভিমুখে আসা প্রায় আটত্রিশ হাজার গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি করে পুলিশ। ২৬১ জনকে জরিমানা করা হয়, ৪৭ জনকে পাঠানো হয় জেলে।
ব্রিসবেন
ব্রিসবেন শহরের প্রায় দুই হাজারের বেশি লকডাউন বিরোধী বিক্ষোভকারী বোটানিক গার্ডেনে সমবেত হন। অংশগ্রহণকারীদের অভিযোগ, লকডাউন তাদের জীবনযাত্রার মানকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে; যা সহ্যসীমার বাইরে। তাই তারা রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছেন।
পার্থ
অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় রাজ্য, ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী শহর পার্থেও দেখা গেছে লকডাউন বিরোধী সমাবেশ। যদিও শহরটিতে বর্তমানে কোন ধরনের লকডাউন নেই। তবু অস্ট্রেলিয়ার বাকি শহরের সাথে সংহতি প্রকাশ করতে শহরটির কিংস পার্ক স্মৃতিসৌধে লকডাউন বিরোধী প্রতিবাদের জন্য প্রায় এক হাজার জন মানুষ জড়ো হন।
বিক্ষোভকারীরা লকডাউন পদক্ষেপের নিন্দা করেন এবং রাজ্যটির প্রিমিয়ার মার্ক ম্যাকগোয়ানের কট্টরপন্থী নীতি ও আন্তঃরাজ্যের সাথে সীমান্ত বন্ধ রাখার প্রতিবাদ জানান।
উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৪ হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা ৯৮১।