অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিনকে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ কমিটিতে সদস্য করায় এ নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা এসেছে। বিএনপির দাবি, এটি সাংবিধানিক পদ। সাংবিধানিক পদধারী ব্যক্তিকে রাজনৈতিক দলের উপ-কমিটির সদস্য করা ‘বেআইনি’ হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আইন বিশেষজ্ঞ ড. সেলিম মাহমুদের মতে অ্যাটর্নি জেনারেল কোনো সাংবিধানিক পদ নয়।
সোমবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে গণমাধ্যমে বিষয়টির ব্যাখ্যা দেন ড. সেলিম মাহমুদ।
তিনি বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল পদটি সাংবিধানিক নয়। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর সব দেশে অ্যাটর্নি জেনারেল পদটা হচ্ছে একটি রাজনৈতিক পদ। বিএনপির বক্তব্য অসত্য এবং ভুল।
সেলিম মাহমুদ আরও বলেন, সাংবিধানিক পদ হচ্ছে সেসব পদ, যেগুলোর মেয়াদ সংবিধান দ্বারা সংরক্ষিত। বিএনপি মনে করছে অ্যাটর্নি জেনারেল পদের নাম যেহেতু সংবিধানে উল্লেখ আছে এবং সংবিধানে অ্যাটর্নি জেনারেল সংক্রান্ত একটা পরিচ্ছেদ আছে, সেজন্য অ্যাটর্নি জেনারেল পদটা সাংবিধানিক। এটা সম্পূর্ণ ভুল ব্যাখ্যা।
তিনি বলেন, ‘সংবিধানে উল্লেখ থাকা অনেক পদই আসলে সাংবিধানিক নয়। যেমন আমাদের সংবিধানে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী সংক্রান্ত একটি অধ্যায় রয়েছে। সংবিধানে সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে উল্লেখ আছে, জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ, ম্যাজিস্ট্রেট পদগুলোর উল্লেখ রয়েছে। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল সংক্রান্ত একটি অধ্যায় রয়েছে। এসব পদ সাংবিধানিক নয়। সাংবিধানিক বলতে সেসব পদকে বোঝায় যেগুলোর মেয়াদকাল সংবিধান দ্বারা রক্ষিত। এসব পদধারী ব্যক্তিকে তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে অপসারণ করা যায় না। যেমন সুপ্রিম কোর্টের বিচারক, কিছু কিছু কমিশনের সদস্য, কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল এই পদগুলো সাংবিধানিক পদ।’
অ্যাটর্নি জেনারেল পদটি পৃথিবীর সব দেশেই রাজনৈতিক পদ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক বলেন, সারা বিশ্বে অ্যাটর্নি জেনারেলদের কাজ হচ্ছে সেই দেশের সরকারের রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করা। আমেরিকাতে অ্যাটর্নি জেনারেল হচ্ছেন মন্ত্রী। আমাদের এখানে যে রকম মিনিস্ট্রি অব ল’। ওখানে হচ্ছে ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস। এটার প্রধান হচ্ছেন অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি হচ্ছেন একজন মন্ত্রী।
সেলিম মাহমুদের মতে, রাজনৈতিক নেতা হিসেবে নয়, একজন বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসেবে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দীনকে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটিতে রাখা হয়েছে। দলের গঠনতন্ত্রে বলা আছে, বিষয়ভিত্তিক উপ-কমিটিগুলোতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সংসদীয় কমিটির সদস্যরা থাকতে পারবেন।
‘সেই হিসেবে আমাদের উপ-কমিটিতে দুজন সদস্য রয়েছেন। একজন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি, আরেকজন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তারা দুজনই সংসদীয় কমিটির সদস্য।’