প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক: ছেলে হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে নিহত রায়হান আহমদের মা সালমা বেগম। মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে অনশনে বসেছেন রায়হানের পরিবারের সদস্যরা।
রোববার (২৫ অক্টোবর) বেলা ১১টা থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির সামনে অনশনে বসেন সালমা বেগম। অনশনস্থলে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন ধরনের ফেস্টুন প্রদর্শন করেন।
প্রসঙ্গত, ১১ অক্টোবর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে রায়হানের মৃত্যু হয়।
রায়হান সিলেট নগরের আখালিয়ার নেহারিপাড়ার বিডিআরের হাবিলদার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি নগরের রিকাবিবাজার স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের চেম্বারে চাকরি করতেন।
এ ঘটনায় ১২ অক্টোবর রাতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু আইনে এসএমপির কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি।
মামলাটি পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে পিবিআইতে স্থানান্তর হয়। তদন্তভার পাওয়ার পর পিবিআইর টিম ঘটনাস্থল বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি, নগরের কাস্টঘর, নিহতের বাড়ি পরিদর্শন করে। সর্বোপরি লাশ কবর থেকে তোলার পর পুনরায় ময়নাতদন্ত করা হয়।
এ সময় নিহত রায়হানের মরদেহে ১১১ আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এসব আঘাতের ৯৭টি ফোলা আঘাত ও ১৪টি ছিল গুরুতর জখমের চিহ্ন। এসব আঘাতগুলো লাঠি দ্বারাই করা হয়েছে।
অসংখ্য আঘাতের কারণে হাইপোভলিউমিক শক ও নিউরোজেনিক শকে মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, কিডনিসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো কর্মক্ষমতা হারানোর কারণে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে বলে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়।
এ ঘটনায় গত ২০ অক্টোবর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদ হত্যা মামলায় ওই ফাঁড়ির পুলিশ কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে গ্রেফতারের পর পাঁচদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
রায়হানের মৃত্যুর জন্য ‘দায়িত্বহীনতার দায়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে তাদের পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।