1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : Rakibul Hasan Shanto : Rakibul Hasan Shanto
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

আমার হাত দুটি ধরে তুমি নিয়ে চলো সখা : পর্ব ৪

  • Update Time : রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ৪৪২ Time View

উপমন্যু রায়

‌আমার চোখের সামনে ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠলে তুমি। এতক্ষণ সে–ভাবে তোমার দিকে খেয়াল করিনি। তাই হয়তো বুঝতে পারিনি। এখন তুমি যেন আমার বোধ স্পর্শ করতে শুরু করলে।
তখনই প্রথম আমার দৃষ্টিতে আসে তোমার পোশাক। একটা ফিনফিনে ম্যাক্সি পরেছিলে। ভিতরে কোনও অন্তর্বাস ছিল না। তোমার শরীরের বিভিন্ন উপত্যকা ভয়ঙ্কর ভাবে ম্যাক্সির সেই পাতলা আস্তরণ ভেদ করে বের হতে চাইছিল।
কয়েক মুহূর্ত মাত্র। তার পরেই ম্যাক্সির সামনের অংশে তুমি হালকা টান দিলে। আর দারুণ ক্ষিপ্রতার সঙ্গে ম্যাক্সিটা তোমার শরীর থেকে খসে পড়ল। বাইরে তখন হঠাৎই যেন বৃষ্টির তীব্রতা বেড়ে গিয়েছিল।
এই পরিস্থিতির জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। কেমন যেন বোকা হয়ে গেলাম। তার চেয়েও অসহায় চোখে তাকিয়ে রইলাম তোমার নগ্নতার দিকে।
সেই প্রথম কোনও নগ্নিকাকে এত সামনে থেকে আমি দেখি। একটা ভয় যেন গ্রাস করল আমাকে। আজ বুঝি, তোমার সেই নগ্ন সৌন্দর্য দেখলে বিশ্বামিত্রও হয়তো পাগল হয়ে যেতেন! জানি না মেনকার নগ্নতা তোমার চাইতেও সুন্দর ছিল কিনা!
তুমি এগিয়ে এসে আমার মুখটা চেপে ধরলে নিজের বুকে। আমি অস্ফূটে বলার চেষ্টা করলাম, ‘‘কী করছিস অনসূয়া?’’
— ‘‘কেন?’’ পাল্টা প্রশ্ন করলে, ‘‘তা হলে আমাকে লুকিয়ে দেখতিস কেন? পুজো করতে? তুই কি রামকৃষ্ণ? আমাকে পেতে ইচ্ছে করে না?’’
তোমার এই কথার জবাব আমার কাছে ছিল না। সুযোগ পেলেই যে লুকিয়ে তোমাকে দেখতাম, সে কথা সত্য।
… দেখতাম। কারণ, তোমাকে আমার ভালো লাগত। আর ভালো লাগা থেকেই তো আসে ভালবাসা। যেখানে হৃদয়–মন–সত্তা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। কিন্তু, তোমার কাছে লুকিয়ে দেখার অর্থ যে তোমাকে এ ভাবে পেতে চাওয়া এবং সেই পেতে চাওয়ার একমাত্র মানে যে এ–ই, তা কখনও ভেবে দেখিনি।
তবে সেদিন এতসব ভাবিনি। বলা বাহুল্য, ভাবার সময় তুমি দাওনি। আমার মুখটা কঠিন ভাবে চেপে ধরে তুমি নিজের বুকের দু’পাশে ঘষতে শুরু করলে। আমার মুখের চাপে তোমার নরম স্তন দুটি যেন ভেঙেচুরে যেতে থাকে। তার পর পাগলের মতো আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লে। কী যে তখন শুরু করলে, তা আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না।
যখন বুঝতে পারলাম, তখন আমিও নগ্ন। আর তোমাকে পাগলের মতো আদর করে চলেছি! শেষে তোমার নারী–শরীরে আমার পুরুষ–শরীর প্রবেশ করার কিছুক্ষণ পর যখন ক্লান্তি আসে, তখন তোমার উপর আমি শুয়ে। সেই সময় তোমাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলাম, ‘‘অনসূয়া, আমি তোমাকে খুব ভালবাসি।’’
সেই প্রথম কাউকে ভালবাসার কথা বললাম! এবং, বললাম তাকেই, যাকে সত্যিই মনে মনে আমি ভালবেসে ফেলেছি।
কিন্তু, আমার কথা শুনে তুমি খিলখিল করে হেসে উঠলে। বললে, ‘‘তাই?’’
আমি বললাম, ‘‘হ্যাঁ। কিন্তু, তুই?’’
খুব সহজ গলায় তুমিও বললে, ‘‘বাসি তো!’’
কিন্তু, আজ মনে হয়, তোমার গলায় সেই আবেগ ছিল না, যে আবেগ নিয়ে আমি তোমায় ভালবাসার কথা বলেছিলাম। তোমার কাছে আমার আবেগ যে মূল্যহীন, তা তখনই আমার বুঝে যাওয়া উচিত ছিল। তবু তা নিয়ে তখন খুব বেশি ভাবতে চাইনি। ভেবেছিলাম, তুমিও হয়তো সত্যিই আমাকে ভালবাসো! তোমার প্রকাশ ভঙ্গিটাই হয়তো এই রকম!
সেই প্রথম, এবং বৃষ্টির দুপুর থেকে সন্ধে পর্যন্ত তিনবার। ভাবা যায়! কী করে যে এতবার সম্ভব হল, আজও তা ভেবে পাই না।
পড়া হল ছাই। আমাকে তোমার শরীরী মাদকতায় বুঁদ করে রাখলে। তবে.‌.‌.‌ তোমার বাড়ি থেকে ফেরার পথে বুঝতে পারলাম, আমি তোমার মধ্যে কতখানি হারিয়ে গিয়েছি!
…সত্যিই তার পর ভালবেসে ফেলেছিলাম তোমাকে। পাগলের মতোই। আমার মন–প্রাণ জুড়ে তখন শুধু তুমি। কিন্তু অপ্রিয় সত্য হল, তুমি ছিলে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। আগের মতোই। যেন শুধুই বন্ধু মাত্র!
তোমার সেই আচরণ আমাকে আহত করত। তবু কখনও কোনও অভিযোগ করিনি। ভেবে নিয়েছিলাম সেই স্বাভাবিকতা হয়তো তোমার স্বভাব। নিশ্চয়ই তুমি আমায় ভালবাসো। না হলে নারীত্বের সেই গোপন অহঙ্কার অবলীলায় আমাকে বিলিয়ে দিতে না!
এরই মধ্যে একদিন একটা ঘটনা ঘটল।
ঘটনাটা যদিও সামান্যই। যদিও ঘটনার সঙ্গে আমি বা তুমি, কারও সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু ওই ঘটনা থেকে একটা নতুন খবর জানা গেল। আমাদের বন্ধুদের গ্রুপেও যে অনেকের মধ্যেই ব্যক্তিগত কিছু গল্প আছে, তার খোঁজ পেলাম আমি।
ইউনিভার্সিটি যাচ্ছিলাম। কলেজ স্ট্রিট মোড়ে দেখা হয়ে গেল শম্পার সঙ্গে। শম্পাও ইউনিভার্সিটি যাচ্ছিল।
প্রেসিডেন্সির সামনে পৌঁছে ফুচকাওয়ালা দেখে দাঁড়িয়ে পড়ে সে। জিজ্ঞাসা করি, ‘দাঁড়ালি কেন?’’
শম্পা বলে, ‘‘ফুচকা খাব।’’
আমি বিরক্ত হই। বলি, ‘‘ক্লাস শুরু হয়ে যাবে!’’
শম্পা বলে, ‘‘এখনও কুড়ি মিনিট দেরি আছে।’’
বলি, ‘‘ফুচকা খেতে তার চেয়েও বেশি সময় লাগবে।’’
শম্পা বলে, ‘‘লাগুক। তবু খাব। তোর যদি আপত্তি থাকে, যেতে পারিস।’’
অগত্যা আমিও দাঁড়িয়ে পড়ি।
শম্পা হাসিমুখে ফুচকার অর্ডার দিয়ে বলে, ‘‘আরে বাবা, কটা আর খাব! বেশি সময় লাগবে না।’’ তার পর ফুচকাওয়ালাকে বলে, ‘‘আমাদের একটু তাড়াতাড়ি দাও।’’
ফুচকা খেতে খেতে শম্পা বলে, ‘‘জানিস, আমি ফুচকা খেতে খুব ভালবাসি।’’
মনে মনে বলি, তাতে আর আশ্চর্য কী! অধিকাংশ মেয়েই ফুচকা খেতে পছন্দ করে।
আমার জবাবের প্রতীক্ষা না করে সে বলে, ‘‘তবে তোর সঙ্গে ফুচকা খেয়ে মজা নেই।’’
আমি হাসি। রসিকতা করে জিজ্ঞাসা করি, ‘‘তা হলে কার সঙ্গে ফুচকা খেতে তোর ভালো লাগে শুনি?’’
শম্পা বলে, ‘‘সঞ্জয়।’’
একটু বিস্মিত হয়ে বলি, ‘‘সেটা আবার কে?’’
প্রতিবাদ করে শম্পা। বলে, ‘‘ঠিক করে কথা বল। সঞ্জয় কোনও জিনিসপত্র নয় যে, ‘সেটা’ হয়ে যাবে!’’
বলি, ‘‘স্যরি, আমি অত ভেবে কথাটা বলিনি।’’
শম্পা একটু যেন বেশি ‘স্বাভাবিক’ গলায় বলে, ‘‘আমার বয়ফ্রেন্ড।’’
প্রায় লাফিয়ে উঠলাম আমি। বললাম, ‘‘তাই? কখনও বলিসনি তো!’’
শম্পা বলে, ‘‘প্রয়োজন পড়েনি তাই।’’
জানতে চাই, ‘‘তা হলে আজ বললি যে!’’
শম্পা বলে, ‘‘ইচ্ছে হল।’’
ফুচকা গিলে ফেলে বলি, ‘‘তোরা সব মেয়েরা খামখেয়ালি।’’
শম্পা জিজ্ঞাসা করে, ‘‘কেন এ কথা বলছিস?’’
শম্পার কথার সরাসরি উত্তর দিই না। বলি, ‘‘তোদের যে কখন কী ইচ্ছে হয়, বোঝা দায়!’’
শম্পা ভুরু কুঁচকে বলে, ‘‘তোর এই কথার মধ্যে কারও প্রতি যেন ইঙ্গিত আছে!’’ একটু থেমে জানতে চায়, ‘‘কে রে সে?’’
আমি কী উত্তর দেব ভেবে পাই না। সত্যিই কি কাউকে ইঙ্গিত করে আমি এ কথা বলেছি? বুঝতে পারি না। তবু কেন যেন একটু সতর্ক হয়ে যাই। আড়াল করতে চাই নিজেকে। বলি, ‘‘কাকে আর ইঙ্গিত করব? তোর কথা শুনে মনে হল। তাই বললাম।’’
শম্পা বলে, ‘‘তা হলে তো ‘আমাকে’ বলবি! তুই তো বহুবচনে ‘আমাদের’ বললি। তাই মনে হল—।’’
আমাদের ফুচকা খাওয়া শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমি দাম দিতে গেলে শম্পা বাধা দিল। বলল, ‘‘আমি দেব।’’
প্রশ্ন করি, ‘‘কেন, আমি দিলে অসুবিধে কী?’’
শম্পা বলে, ‘‘আমিই ফুচকা খেতে চেয়েছিলাম।’’
জিজ্ঞাসা করি, ‘‘তাতে কী হল?’’
ব্যাগ খুলতে খুলতে শম্পা বলে, ‘‘তর্ক করিস না। তুই তো দাম দেওয়ার ভয়ে খেতেই চাইছিলি না!’’
বিরক্ত হয়ে বলি, ‘‘তুই কিন্তু আমাকে ইনসাল্ট করছিস!’’
শম্পা হেসে বলে, ‘‘কী বলেছি আমি? যা সত্যি, তা–ই তো বলেছি।’’ দাম দিতে যায় সে।
আমি বাধা দিই। বলি, ‘‘আমিই দামটা দিচ্ছি।’’
এবার বিরক্ত হয় শম্পা। বলে, ‘‘কেন দিবি? তুই কি আমার প্রেমিক?’’
আমার আর কিছু বলার ছিল না। (‌ক্রমশ)‌

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..