প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক: প্রবীণ ব্রিটিশ সাংবাদিক ও লেখক রবার্ট ফিস্ক মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে সাংবাদিকতার দায়িত্ব পালন করেছেন।
গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার অসুস্থ হয়ে পড়ায় আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনের ভিনসেন্ট হাসপাতালে এই সাংবাদিককে ভর্তি করা হয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট-এর একটি সূত্র তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ওই সংবাদমাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন ফিস্ক।
আইরিশ টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি স্ট্রোক করায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
২০১৫ সালে নিউইয়র্ক টাইমস তাকে ব্রিটেনের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক সবচেয়ে জনপ্রিয় সাংবাদিক হিসেবে আখ্যা দেয়। সাংবাদিক জীবনে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিভিন্ন প্রতিবেদনের জন্য বেশ কিছু সম্মানজনক পুরষ্কারে ভূষিত হন ফিস্ক।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন অভিযানের তথ্য সংগ্রহ এবং নিরপেক্ষতার সঙ্গে তা প্রকাশের জন্য এই ব্রিটিশ সাংবাদিক বিশ্বজুড়ে খ্যাতি লাভ করেছিলেন। কৈশোরেই তার সাংবাদিকতার যাত্রা শুরু। মাত্র ১২ বছর বয়সেই তিনি সাংবাদিক হওয়ার বিষয়ে মনস্থির করেন।
ছাত্রজীবন থেকেই সাংবাদিকতা শুরু করেন ফিস্ক। প্রথমে সানডে এক্সপ্রেসের ডায়েরি কলামে লেখালেখি করতেন তিনি। পরবর্তীতে তিনি যোগ দেন দ্য টাইমসে। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত টাইমসের বেলফাস্ট প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন তিনি। ১৯৭৬ সালে তিনি ওই পত্রিকার মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদদাতা হিসেবে কাজ শুরু করেন।
যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল এবং পশ্চিমা পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে সমালোচনা করায় তাকে নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। বলকান, মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকায় ব্রিটেনভিত্তিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের হয়ে পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন তিনি।
১৯৪৬ সালে ইংল্যান্ডের কেন্ট শহরের মেডস্টোনে জন্মগ্রহণ করেন এই খ্যাতনামা সাংবাদিক। পরবর্তীতে তিনি আয়ারল্যান্ডের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন এবং ডাবলিনের বাইরে ডালকে শহরে বসবাস শুরু করেন। রবার্ট ফিস্কের মৃত্যুতে রোববার গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আয়ারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট মাইকেল ডি হিগিনস।
১৯৯০ এর দশকে তিনি তিনবার ওসামা বিন লাদেনের সাক্ষাতকার নিয়েছেন। ১৯৯৩ সালের প্রথম সাক্ষাতকারে তিনি ওসামাকে লাজুক ব্যক্তি বলে উল্লেখ করেছেন।
১৯৯৪ সালে মার্কিন সাংবাদিক লারা মারলোয়েকে বিয়ে করেন রবার্ট ফিস্ক। ২০০৬ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তাদের কোনো সন্তান নেই। সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকরা তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।