আজ এমন এক মহান ব্যাক্তির কথা বলছি,
যিনি ছিলেন বাংলাদেশে ইসলামী জাগরণের কবি। তিনি তার লেখনীর মাধ্যমে ইসলামিক ধারাকে ফুটিয়ে তুলেছেন। তিনি আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সহজ সরল প্রকৃতির। তার সময়ের সেরা লেখকদের একজন হলেও খুব স্বাভাবিক জীবনযাপন করতেন।। তার ভিতরে বিন্দুমাত্র অহংকার ছিলনা।
হ্যাঁ বলছি মহান কবি আল মাহমুদ সাহেবের কথা।। বলছি প্রকৃতি প্রেমি এক মহান কবির কথা।
মহান এই ব্যাক্তিটির জন্ম ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে। তার পুরো নাম মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ। সাহিত্য প্রেমীদের কাছে আজ তিনি আল মাহমুদ নামেই পরিচিত।
কবির লেখালেখির হাতেখড়ি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় থেকেই।
১৯৫০ এর দশকে তিনি বাংলা ভাষা আন্দোলন, জাতীয়তাবাদ, অর্থনৈতিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে লেখালেখির মাধ্যমে অগ্রণী ভুমিকা পালন করেন।
সংবাদপত্রে লেখালেখির সূত্র ধরেই তিনি ঢাকায় আগমন করেন এবং পরবর্তীতে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। ১৯৫৫ সালে ”সাপ্তাহিক কাফেলা” পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি ” দৈনিক গণকন্ঠ” পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেন।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত গমণ করেন এবং প্রবাসী সরকারের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখেন।
১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু তাকে বাংলা একাডেমির গবেষণা ও সহ-পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেন। দীর্ঘদিন এই দায়িত্ব পালনের পর তিনি বাংলা একাডেমির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর অবসর গ্রহণ করেন।।
তার প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমুহ- লোক লোকান্তর( ১৯৬৩), কালের কলস (১৯৬৬), সোনালী কাবিন( ১৯৭৩), বখতিয়ারের ঘোড়া, দিনযাপন, প্রেমের কবিতা সমগ্র, নদীর ভেতর নদী, কবিতা সমগ্র, তোমার গন্ধে ফুল ফুটেছে (২০১৫), Selected poems – Al Mahmud (১৯৮১)
তার লেখা বিখ্যাত মহাকাব্য – ”এ গল্পের শেষ নেই শুরুও ছিল না।”
পুরস্কার ও সন্মাননা- তিনি ১৯৫৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হয়।
জয় বাংলা পুরস্কার -১৯৭২,,
জীবনানন্দ স্মৃতি পুরস্কার -১৯৭২,,
কাজী মোতাহার হোসেন সাহিত্য পুরস্কার -১৯৭৬,,
একুশে পদক-১৯৮৬,,
ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার -১৯৮৬,,
নাসির উদ্দীন স্বর্ণপদক -১৯৯০,,
বাসাসপ কাব্যরত্ন-২০১৭ প্রভৃতিসহ অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেন।।
২০১৯ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি ৮২ বছর বয়সে নিউমোনিয়া ও বার্ধক্যজনিত কারণে ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।।
আব্দুর রহিম।
শিক্ষার্থী, দিনাজপুর সরকারি কলেজ।
দ্বিতীয় বর্ষ, ইংরেজি সাহিত্য বিভাগ ।