প্রত্যয় ডেস্ক, হাফিজুল হক চৌধুরী, কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের ভাদাইরদেউল গ্রামের দিনমজুর তাহির মিয়ার একমাত্র কন্যা আয়েশা বেগম যৌতুকের জন্য শারীরিক নির্যাতনের জন্য ন্যায় বিচার পেতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৩নং আমল আদালত মৌলভীবাজারে একটি মামলা করেন বিগত ১/১১/২০২০ইং তারিখে।
বাবা মার পছন্দের পাত্রের সাথে আয়েশা বেগমের বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী কেছুলুটি গ্রামের মৃত কাপ্তান মিয়া পুত্র মোঃ দিলু মিয়ার সাথে প্রায় দুই বছর আগে। বিয়ের কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর হইতে স্বামী দিলু মিয়া, শ্বাশুড়ি ও দেবর মিলে যৌতুকের জন্য শুরু করেন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। দিনমজুর আয়েশার বাবা মেয়ে সুখের কথা ভেবে ধানের জমি বন্ধক দিয়ে ৪০,০০০/- টাকা জামাতার হাতে তুলে দেন।
তাহির মিয়া জানান কিছুদিন ভালভাবে চলার পর আবার এক লক্ষ টাকা দিতে আয়েশাকে চাপ প্রয়োগ করে দিলু মিয়া। গরীব বাবা এত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে শুরু হয় নানা রকমের অত্যাচার। সর্বশেষ ২৮/১০/২০২০ ইং তারিখে গভীর রাতে স্বামী দিলু মিয়া, শ্বাশুড়ি ও দেবর মিলে শারীরিক নির্যাতন করে আয়েশাকে জখমি করে তার প্রায় ৩ ঘটিকার সময় তার কোলের বাচ্চা রেখে আয়েশাকে ঘর থেকে বের করে দেয়। গভীর রাতে ঘর থেকে বের করে দিলে সে তার এক আত্মীয় একই গ্রামের মানিক মিয়া বাড়ী আশ্রয় নেয়। মানিক মিয়া সকাল ৯ঘটিকার সময় আয়েশাকে তার বাবার হাতে তুলে দেন।
হতবাক তাহির মিয়া সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউ,পি সদস্য হাফিজুল হক চৌধুরীকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি প্রথমে চিকিৎসা দেয়ার পরামর্শ দেন। কমলগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে আয়েশাকে তার বাবা তার নিজ বাড়ীতে নিয়ে আসেন। চার দিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও যখন ১৮ মাসের শিশু সন্তানকে ফেরত না দেয়ায়, বিগত ১/১১/২০২০ই তারিখে যৌতুক নিরোধ ৩ ধারা অনুযায়ী আয়েশা বেগম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজেষ্ট্রিট ৩নং আমল আদালতে মামলা দায়ের করেন, মামলা নং পি ৩১৭/২০২০।
অভিযোগটি আমলে নিয়ে আদালত গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেন। আয়েশা বেগম বলেন তার স্বামী একজন লম্পট প্রকৃতির, পরধনলোভী ও অত্যাচারী মানুষ, কথায় কথায় প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়, এরা অত্যাচারী পরিবার। আয়েশা বেগম ন্যায় বিচার পেতে আশাবাদী। তিনি তার ১৮ মাসের বাচ্চাকে তার কোলে ফিরে পেতে চান এবং তার উপর করা নির্যাতনের ন্যায় বিচার দাবী করছেন।
অপর দিকে আয়েশা বেগমের স্বামীর মোবাইলে কল দিয়ে বিষয়টি জানার চেষ্টা করলে দিলু মিয়ার মোবাইলে বন্ধ পাওয়া যায়।