কানাডার বিভিন্ন প্রদেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে দেশটির সরকার, নীতিনির্ধারক ও প্রদেশের প্রিমিয়াররা। একের পর এক বিধিনিষেধ, কঠোর পদক্ষেপে আর গৃহবন্দী থাকায় সাধারণ নাগরিকরাও হতাশ হয়ে পড়েছেন।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কানাডায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৭ হাজার ৯৯২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে মারা গেছেন ৩৯ জন। দেশটিতে মোট করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৬৫ হাজার ৩২০ জনে। আর এ পর্যন্ত মোট মারা গেছেন ২৪ হাজার ৪৮৯ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৫০৬ জন।
অন্যদিকে কানাডার বৃহত্তম প্রদেশ অন্টারিওর ফোর্ড সরকারের অনুরোধের প্রেক্ষিতে গত সপ্তাহে টরন্টোতে সেনাবাহিনী মোতায়েনে সম্মত হয় ফেডারেল সরকার। সবমিলিয়ে কানাডার সশস্ত্র বাহিনী টরন্টোতে নয়জন আইসিইউ নার্স এবং বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা সেবায় তিনটি দল মোতায়েন করেছে। প্রয়োজন অনুসারে পালাক্রমে কাজ করবেন তারা।
কানাডার জন নিরাপত্তামন্ত্রী বিল ব্লেয়ার বলেন, ফেডারেল সরকারের তরফ থেকে ৬২ জন স্বাস্থ্যকর্মী টরন্টোর হাসপাতালগুলোকে সহায়তা করেছেন। কারাগারে অথবা ইনডিজিনাস সার্ভিস কানাডায় কাজ করা চিকিৎসক ও নার্সও রয়েছেন তাদের মধ্যে। কোভিড-১৯ মহামারির তৃতীয় ঢেউয়ের ব্যাপকতার মধ্যে কাজ শুরু করলেন তারা। ক্রিটিক্যাল কেয়ার নার্সও রয়েছেন এই টাস্কফোর্সে। কানাডিয়ান সেনাবাহিনীর মোট ৫৮ জন সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে। আইসিইউ সেবাসহ সাময়িকভাবে তৈরি ফিল্ড হাসপাতালেও সেবা দেবেন তারা।
বিশিষ্ট কলামিস্ট, উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মো. মাহমুদ হাসান বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছার কোনো ঘাটতি আছে বলে আমি মনে করি না। যৌক্তিক নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে প্রথম দিকে ভ্যাকসিনেশনের গতি একটু মন্থর হলেও, এখন দ্রুত গতিতেই তা এগিয়ে চলছে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে নাগরিকদের আরও বেশি যত্নশীল না হলে পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি সম্ভব নয়।’
অন্যদিকে কানাডার ভ্যাকসিন সনদের ব্যাপারে ফেডারেল সরকারের মধ্যে যে অনাগ্রহ তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সঙ্গে মিলে যায়। ভ্যাকসিন সনদকে নিরুৎসাহিত করে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানায়, আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রবেশ ও বহির্গমনের জন্য ভ্যাকসিন নেয়ার প্রমাণপত্রের শর্ত আরোপ করা জাতীয় কর্তৃপক্ষ ও উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থাগুলোর উচিত হবে না। কারণ, সংক্রমণ হ্রাসে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সম্পর্কে অনেক কিছুই এখনও অজানা। কানাডা এ ধরনের প্রমাণপত্র তৈরির জন্য কোনো দিনক্ষণ এখনও নির্ধারণ করেনি। তবে ভ্যাকসিন গ্রহণের বিষয়টি সীমান্তে কীভাবে নিশ্চিত করা যায় সে ব্যাপারে সহায়তা প্রদানে জনস্বাস্থ্য বিভাগ সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।