সায়েম আহমেদ,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু ও বিসিএস ট্যাক্সেশন ক্যাডারের ২৭ তম ব্যাচের কর্মকর্তা সুধাংশু কুমার সাহা করোনার সাথে লড়াই করে গত ৮ জুন ২০২০ মারা গেছে। আহ, বড় ভালো মানুষ ছিলো! কিছু কিছু প্রস্থান খুব বেশি নাড়া দেয়। সেই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিকেই পরিচয়। রুমমেট এনায়েত Enayet Hossain আর ও একাউন্টিং বিভাগের সহপাঠী। সে সুবাদে, মুহসিন হলে আমাদের রুমে মাঝে মধ্যে আসতো। লেখাপড়া আর সৃষ্টিশীল বিষয় ছাড়া তাকে অন্য আলাপ করতে দেখিনি কখনও।
ক্যাম্পাসে হাসিমাখা মুখে হন হন করে সুধাংশু এগিয়ে চলতো। অপচয় করার মতো সময় অধ্যবসায়ী ওর ছিলো না। বিশ্ববিদ্যালয়ে অত্যন্ত ভালো ফলাফলের পাশাপাশি অনেকগুলো এডভানসড পেশাদারী কোর্স করে ফেললো। সহজেই মোটা বেতনের কর্পোরেট চাকুরী জুটলেও সে সরকারের মধ্যে থেকে দেশের মানুষের জন্যে কাজ করতে চাইতো। তার দুচোখে ছিলো দেশ ও জাতির সেবা করার স্বপ্ন।
সুধাংশু মর্যাদাপূর্ণ সরকারি চাকুরী পেল। আমাদেরই আরেক বান্ধবী মানসীকে বিয়ে করলো এবং এক কন্যাসন্তানের বাবা হলো। পেশাগত দায়িত্ব আর স্বভাবসুলভ পরোপকারের পাশাপাশী তুমুল জ্ঞানচর্চা চালিয়ে যেতে লাগলো। প্রাণশক্তিতে ভরা সুধাংশু অলস বসে থাকতে পারতো না। বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার পর খুব বেশি দেখা সাক্ষাৎ হয়েছে তা নয়। তবে খবরাখবর পেতাম। একজন সৎ ও পরিশ্রমী মানুষের উন্নতির কথা শুনে আনন্দ লাগতো।
এরকম লড়াকু একজন মানুষের এভাবে অসময়ে চলে কি মেনে নেওয়া যায়? মৃত্যুর অবস্থান কি আমাদের দুই নিঃশ্বাসের মাঝামাঝি নাকি আরও কাছে। মহান সৃষ্টিকর্তা যেন সুধাংশুকে চিরশান্তি দেন। ওর মতো একজন ভালো মানুষের জন্যে সবার কাছে দোয়া-আশীর্বাদ চাই। ওর পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা আমাদের দায়িত্ব।
লেখক: