নিজস্ব প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক ও ফুটপাত দখল করে করে ব্যবসার কারণে বাসিন্দাদের ব্যাপক দূর্ভোগ পোহাতে হতো। শহরের হাতে গোনা কয়েকটি সড়ক ছাড়া সড়ক ও ফুটপাত দিয়ে হাঁটার জো ছিল না। এসব সড়ক ও ফুটপাত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অবৈধ দখলে থাকার কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হতো । এ সমস্যার সমাধানে গত সোমবার (৮ জানুয়ারি) থেকে সোমবার (১৫ জানুয়ারি) পর্যন্ত জেলা পুলিশের উদ্যোগে শহরের বিভিন্ন সড়ক ও ফুটপাতে গড়ে উঠা হকারদের প্রায় ৩০০ দোকান উচ্ছেদ করা হয়।
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শহরের একটি প্রভাবশালী চক্র গৌরাঙ্গ বাজার, অভিযোগ রয়েছে একরামপুর ব্রিজ, তেরি পট্টি, পুরানথানা-বড়বাজার সংযোগ ব্রিজের সড়ক ও ফুটপাত দখল করে প্রত্যেক হকারের কাছ থেকে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানত নিয়ে দোকান ভাড়া দিত ও ভাড়া বাবদ প্রতিদিন হকারদের কাছ থেকে ২০০ টাকা করেও নিত ওই প্রভাবশালী চক্র। প্রভাবশালী ওই চক্রের মদদের কারণে সড়কে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে কিনা তা তোয়াক্কা করতেন না হকারেরা।
জেলা শহরের বাসিন্দারা বলেন, শহরে যানজটের কারণে ব্যাপক ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। যানজট সৃষ্টির অনেক কারণের মধ্যে একটি কারণ হলো সড়ক ও ফুটপাত দখল করে হকারদের ব্যবসা। দিনের বেলায় যানজট পেরিয়ে গাইটাল এলাকা থেকে সৈয়দ নজরুল ইসলাম হাসপাতালে যেতে সময় লাগে দেড় ঘন্টা। অথচ যানজট না থাকলে ওই পথটা যেতে সময় লাগে ২০ মিনিট। এসব দোকানপাট উচ্ছেদের কারণে যদি এখন একটু স্বস্তি পাওয়া যায়। আর নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষেরা এবং হকারেরা যেন উপকৃত হয় সেজন্য একটা হলিডে মার্কেট প্রয়োজন পৌর শহরে। এটা আমাদের দাবি। এতে করে উচ্ছেদকৃত হকারদেরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
উচ্ছেদ অভিযানের নেতৃত্ব দেন কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহে শহরের বিভিন্ন সড়ক ও ফুটপাতের প্রায় ৩০০ দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও সমন্বয় সমাজকল্যাণ সংস্থার সভাপতি এ এম ওবায়েদ বলেন, ফুটপাতে যত্রতত্র ভ্রাম্যমান দোকান গড়ে উঠলে চলাফেরার ক্ষেত্রে যেমন জনসাধারণের কষ্ট হয় পাশাপাশি যানজটও সৃষ্টি হয়। প্রশাসনের সূদৃষ্টি ছাড়া এ সমস্যা সমাধান কখনো সম্ভব না। উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার জন্য প্রশাসনের সকলকে সাধুবাদ জানাই। পাশাপাশি ভ্রাম্যমান দোকান উচ্ছেদ অভিযান নিয়মিত পরিচালনা করতে হবে। এছাড়া উচ্ছেদকৃত হকার ও নিম্ন এবং নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষেররা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেজন্য হলিডে মার্কেটের জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
পৌর মেয়র মোঃ পারভেজ মিয়া বলেন, হলিডে মার্কেট করার পরিকল্পনা আছে। হলিডে মার্কেট হলে খুব কম টাকায় নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্তরা তাদের দৈনিক ব্যবহার্য জিনিসপত্র কেনাকাটা করতে পারবেন।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, শহরকে যানজট মুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এতে করে শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিও পাবে।