স্পোর্টস ডেস্ক: ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে খেলতে গিয়ে সাদা পোশাকে দাপট দেখিয়েছিল ভারত। সেই ধারাবাহিকতায় তারা প্রথম ওয়ানডে ম্যাচও জিতে নেয়। তবে ক্যারিবীয়দের স্বল্প পুঁজির সামনেও রোহিত শর্মাদের ব্যাটিংয়ে দৈন্যদশা ফুটে উঠেছিল। রোহিত-কোহলিদের অনুপস্থিতিতে আরও মারাত্মক আকার ধারণ করে সেই দশা। পরবর্তীতে মাত্র ১৮১ রানে গুটিয়ে যাওয়া ভারতকে ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এর আগে সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চেন্নাইয়ে রোহিতদের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ক্যারিবীয়রা জয় পেয়েছিল। এই ফরম্যাটে পরবর্তী জয় পেতে তাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে চার বছর। শাই হোপ ও শিমরন হেটমায়ারের সেঞ্চুরিতে সেবার তারা ৮ উইকেটের বড় জয় পেয়েছিল। এবারের জয় পাওয়ার ম্যাচেও সর্বোচ্চ রান অধিনায়ক হোপের। তবে দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা হেটমায়ার ব্যাট হাতে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি।
শনিবার (২৯ জুলাই) বার্বাডোজের ব্রিজটাউনে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যেখানে হার্দিক পান্ডিয়াকে অধিনায়ক করে রোহিত-কোহলিদের ছাড়াই ভারত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছিল। যেন তরুণ নির্ভর টি-টোয়েন্টি দলটাই ওয়ানডেতে নামিয়ে দিল তারা। কিন্তু আসন্ন বিশ্বকাপের আয়োজকদের সেই পরীক্ষা পুরোপুরি ভেস্তে গেছে।
পরীক্ষা চলছে আগের ম্যাচ থেকেই। ক্যারিবীয়দের ১১৪ রানের জবাবে ব্যাটিং লাইনআপ ওলট-পালট করে নামে ভারতীয়রা। কিন্তু অল্প রান করতেও তারা ৫ উইকেট হারিয়ে বসে। এদিন টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারতের শুরুটা বেশ ভালোই ছিল। ঈশান কিষান ও শুভমান গিলের উদ্বোধনী জুটি ১০০ বলের মধ্যে ৯০ রান তুলে ফেলে। ১৭তম ওভারে প্রথম আঘাত পায় সফরকারীরা। গুদাকেশ মোতিকে লং-অফ দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে শুভমান আলজারি জোসেফের হাতে ক্যাচ দেন। এর আগে ৪৯ বলে ৩৪ রান করেন তরুণ এই ব্যাটার।
এরপরই শুরু হয় ভারতের ব্যাটিং বিপর্যয়। পরের ওভারে রোমারিও শেফার্ডের পেসে ক্যাচ দেন কিষানও। আগের ইনিংসে ফিফটি পাওয়া কিশান এবার খেলে যান ৫৫ বলে ৫৫ রানের ইনিংস। এই ইনিংসে তিনি খেলেছেন ৬টি চার ও ১টি ছয়ের বাউন্ডারি। দুই ওপেনারের বিদায়ের পরবর্তী পাঁচ ওভারে অক্ষর প্যাটেল, হার্দিক পান্ডিয়া ও সঞ্জু স্যামসনও উইকেট হারান। আগের ম্যাচের মতোই ১১৩ রানে ৫ ব্যাটার বিদায় নেন ভারতের।
পরবর্তী ব্যাটাররা সেই ধাক্কা আর সামাল দিতে পারেননি। সূর্যকুমার যাদব ২৪, শার্দূল ঠাকুর ১৬ এবং রবীন্দ্র জাদেজার ব্যাটে আসে ১০ রান। ফলে মাত্র ৪০.৫ ওভারে ১৮১ রানে থেমে যায় ভারতীয় ইনিংস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন মোতি ও শেফার্ড। বোলারদের এই সাফল্যের পথ ধরে শেষে প্রায় চার বছর জয় এনে দেন ব্যাটাররা।
রান তাড়া করতে নেমে শার্দূল ঠাকুরের বলে মাঝে খেই হারালেও শেষ পর্যন্ত জিতে মাঠ ছাড়ল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই ওপেনার কাইল মায়ার্স ও ব্র্যান্ডন কিংয়ের শুরুটা ভাল ছিল। যদিও ৩৬ রান (২৮ বল) করে দলীয় ফিফটি হতেই মায়ার্স বিদায় নেন। আক্রমণে এসে নিজের প্রথম ওভারেই জোড়া উইকেট নেন শার্দূল। দুই ওপেনারকেই তিনি ফিরিয়েছেন। কিং বিদায় নেন ১৫ রানের মাথায়।
এরপর নিজের তৃতীয় ওভারে আলিক আথানেজকেও ফেরান শার্দূল। এরপরই স্পিনারদের আক্রমণে আনেন হার্দিক পান্ডিয়া। তাতে আরও সমস্যায় পড়ে ক্যারিবীয়রা। কুলদীপের বল বুঝতে না পেরে ৯ রানের মাথায় বোল্ড হয়ে ফেরেন হেটমায়ার। তবে সেখান থেকে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক হোপ। তার সঙ্গে যোগ্য দেন কেসি কার্টি। শেষ পর্যন্ত হোপ দুটি করে চার-ছয়ে ৬৪ (৮০ বল) এবং ৪টি চারের মারে কার্টি ৪৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।
৩৬.৪ ওভারে ৬ উইকেট হাতে রেখেই ম্যাচ জিতে যায় ক্যারিবীয়রা। এ জয়ে স্বাগতিকরা সিরিজে ১-১ সমতায় ফিরল। ভারতের হয়ে শার্দূল ৩টি এবং কুলদীপের শিকার এক উইকেট।