1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. Azharislam729@gmail.com : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
  4. bobinrahman37@gmail.com : Bobin Rahman : Bobin Rahman
  5. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  6. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  7. harun.cht@gmail.com : চৌধুরী হারুনুর রশীদ : চৌধুরী হারুনুর রশীদ
  8. shanto.hasan000@gmail.com : Rakibul Hasan : Rakibul Hasan
  9. msharifhossain3487@gmail.com : Md Sharif Hossain : Md Sharif Hossain
  10. humiraproma8@gmail.com : হুমায়রা প্রমা : হুমায়রা প্রমা
  11. dailyprottoy@gmail.com : প্রত্যয় আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রত্যয় আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  12. namou9374@gmail.com : ইকবাল হাসান : ইকবাল হাসান
  13. mohammedrizwanulislam@gmail.com : Mohammed Rizwanul Islam : Mohammed Rizwanul Islam
  14. hasanuzzamankoushik@yahoo.com : হাসানুজ্জামান কৌশিক : এ. কে. এম. হাসানুজ্জামান কৌশিক
  15. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  16. niloyrahman482@gmail.com : Rahman Rafiur : Rafiur Rahman
  17. Sabirareza@gmail.com : সাবিরা রেজা নুপুর : সাবিরা রেজা নুপুর
  18. prottoybiswas5@gmail.com : Prottoy Biswas : Prottoy Biswas
  19. rajeebs495@gmail.com : Sarkar Rajeeb : সরকার রাজীব
  20. sadik.h.emon@gmail.com : সাদিক হাসান ইমন : সাদিক হাসান ইমন
  21. safuzahid@gmail.com : Safwan Zahid : Safwan Zahid
  22. mhsamadeee@gmail.com : M.H. Samad : M.H. Samad
  23. Shazedulhossain15@gmail.com : মোহাম্মদ সাজেদুল হোছাইন টিটু : মোহাম্মদ সাজেদুল হোছাইন টিটু
  24. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  25. showdip4@gmail.com : মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ : মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ
  26. shrabonhossain251@gmail.com : Sholaman Hossain : Sholaman Hossain
  27. tanimshikder1@gmail.com : Tanim Shikder : Tanim Shikder
  28. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :
  29. Fokhrulpress@gmail.com : ফকরুল ইসলাম : ফকরুল ইসলাম
  30. uttamkumarray101@gmail.com : Uttam Kumar Ray : Uttam Kumar Ray
  31. msk.zahir16062012@gmail.com : প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক : প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক
ক্ষমার দশকের দ্বিতীয় তারাবিহতে যেসব ঘটনা ও দোয়া পড়া হবে - দৈনিক প্রত্যয়

ক্ষমার দশকের দ্বিতীয় তারাবিহতে যেসব ঘটনা ও দোয়া পড়া হবে

  • Update Time : শনিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২১
  • ২৬৩ Time View

আজ ক্ষমার দশকের দ্বিতীয় তারাবিহ। প্রসিদ্ধ দুইটি সুরার তেলাওয়াত শুনে মুগ্ধ ও পরিতৃপ্ত হবে রোজাদার। সুরা বনি ইসরাইল ও সুরা কাহফের সুন্দর ঘটনা ও প্রসিদ্ধ দোয়াগুলো মুমিন রোজাদারের অন্তরকে আলোকিত করে তুলবে। ক্ষমা প্রার্থনায় মনোযোগী করবে।

১২ রমজানের প্রস্তুততে ১২তম তারাবিহতে পুরো বনি ইসরাইল সুরা এবং সুরা কাহাফের ৭৪ আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে আজ। এ সুরায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মেরাজের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শুরু হবে। থাকবে বাবা-মার জন্য বিশেষ দোয়া। এ ছাড়াও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অনেকগুলো দোয়া ও প্রসিদ্ধ ঘটনা। বাদ যায়নি নবুয়তের সত্যতা প্রমাণে অবিশ্বাসীদের প্রশ্ন। যার উত্তর দিয়েছেন নবি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

ইসলামের ইতিহাস ও বিশ্বনবির জীবনের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় মেরাজ। এটি বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রিসালাতের অনেক বড় মুজিজাও এটি। তারাবিহ নামাজের প্রথম রাকাআতে পড়া হবে মেরাজের বর্ণনা। কুরআনুল কারিমে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মেরাজ সম্পর্কে বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-
‘পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাতের বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত। যার চারদিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি, যাতে (সে রাতে) আমি তাকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দর্শনশীল।’ (সুরা ইসরা : আয়াত ১)

এ আয়াতে উল্লেখিত ঘটনাটি ঘটে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুওয়ত লাভের ১১তম বছরের কোনো এক রাতে। অনেকে ২৬ রজব দিবাগত রাতের কথা বলে থাকেন। সেই সময়ে তা ছিল সৃষ্টিজগতের সেরা আলোড়ন সৃষ্টিকারী ‘ঐতিহাসিক মেরাজের ঘটনা।

মেরাজের আশ্চর্যজনক ও তৎপর্যপূর্ণ ঘটনায় বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্মান ও উচ্চ মর্যাদাই প্রকাশ পেয়েছে। মেরাজের এ ঘটনায় বিশ্বাস স্থাপন করা প্রতিটি মুসলমানের জন্য তার আক্বিদা-বিশ্বাসের অংশও বটে। মেজারে ঘটনায় মুসলিম উম্মাহর জন্য রয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। বিশ্বনবির মেরাজ নিয়ে আছে হাদিসের সুস্পষ্ট নির্দেশনা।

সুরা বনি ইসরাঈল (১-১১১)
সুরা বনি ইসরাইল পবিত্র নগরী মক্কায় নাজিল হয়। সুরাটি ১২ রুকু ও ১১১ আয়াতে সন্নিবেশিত। যদিও সুরার নাম বনি ইসরাইল কিন্তু বনি ইসরাইল এ সুরার আলোচ্য বিষয় নয়। বরং প্রতীকী হিসেবে নামটি সুরার চার নম্বর আয়াত থেকে নেয়া হয়েছে। এ সুরার প্রথম আয়াত থেকে বুঝা যায় যে, সুরাটি মিরাজের সময় নাজিল হয়েছে। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী হিজরতের এক বছর পূর্বে এ সুরাটি নাজিল।

সুরাটি মুসলি উম্মাহর জন্য সতর্কবার্তা। মক্কার কাফের অবিশ্বাসীদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। তাদের বলা হয়েছে, বনি ইসরাইল ও অন্যান্য জাতি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করো। আল্লাহর দেয়া অবকাশ তথা সময় শেষ হয়ে আসছে তা শেষ হওয়ার আগেই নিজেদের সামলে নাও।

মানুষকে সৎ পথে চলার জন্য নসিহত করা হয়েছে। আবার ভালো মন্দ কাজের যার যার আমলনামা তাকেই পড়তে হবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে এ সুরায়। আল্লাহ তাআলা বলেন-
– ‘পাঠ কর তুমি তোমার কিতাব (আমল)। আজ তোমার হিসাব গ্রহণের জন্যে তুমিই যথেষ্ট। যে কেউ সৎপথে চলে, তারা নিজের মঙ্গলের জন্যেই সৎ পথে চলে। আর যে পথভ্রষ্ট হয়, তারা নিজের অমঙ্গলের জন্যেই পথ ভ্রষ্ট হয়। কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কোনো রাসুল না পাঠানো পর্যন্ত আমি কাউকেই শাস্তি দান করি না।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ১৪-১৫)

বাবা-মার জন্য বিশেষ দোয়া ও আনুগত্যের নির্দেশ
এ সুরায় আল্লাহর ইবাদতের সঙ্গে সঙ্গে পিতামাতার প্রতি উত্তম ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আবার পিতামাতার জন্য দোয়া শেখানো হয়েছে এ সুরায়। আল্লাহ তাআলা বলেন-
– ‘তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে `উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ২৩)
‘তাদের সামনে ভালবাসার সাথে, নম্রভাবে মাথা নত করে দাও এবং বল-
رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا
উচ্চারণ : ‘রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানি সাগিরা’
অর্থ : ‘হে আমার প্রভু! তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমনিভাবে তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ২৪)

আত্মীয়-স্বজন গরিব-দুঃখী ও মুসাফিরকে দান করার নির্দেশের পাশাপাশি মানুষকে অপচয় থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এ সুরায়। কেননা অপচয়কারীদের শয়তানের ভাই হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন-
– আত্মীয়-স্বজনকে তার হক দান কর এবং অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরকেও। এবং কিছুতেই অপব্যয় করো না। নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান স্বীয় পালনকর্তার প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ২৬-২৭)

আল্লাহ তাআলা মানুষকে যেমন জীবিকা দান করেন আবার তাদের জীবিকা সংকুচিতও করে দেন তিনি। অভাবের সন্তান হত্যা করার মারাত্মক পাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এ সুরায়। ব্যভিচার ও হত্যার মতো জঘন্য পাপ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন-
‌- ‘নিশ্চয় তোমার পালকর্তা যাকে ইচ্ছা অধিক জীবনোপকরণ দান করেন এবং তিনিই তা সংকুচিতও করে দেন। তিনিই তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে ভালোভাবে অবহিত,-সব কিছু দেখছেন। দারিদ্রের ভয়ে তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই জীবনোপকরণ দিয়ে থাকি। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মারাত্নক অপরাধ। আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ। সে প্রাণকে হত্যা করো না, যাকে আল্লাহ হারাম করেছেন; কিন্তু ন্যায়ভাবে। যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে নিহত হয়, আমি তার উত্তরাধিকারীকে ক্ষমতা দান করি। অতএব, সে যেন হত্যার ব্যাপারে সীমা লঙ্ঘন না করে। নিশ্চয় সে সাহায্যপ্রাপ্ত।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ৩০-৩৩)

দ্রব্যসামগ্রী মাফে বা ওজনে কম দিলে আল্লাহ তাআলা মানুষের ওপর দুর্যোগ ও বালা-মুসিবত চাপিয়ে দেন বলেছেন বিশ্বনবি। কুরআনুল কারিমের এ সুরায় আল্লাহ তাআলা মানুষকে সঠিক উপায়ে মাফ দেয়ার কথা বলেছেন। আল্লাহ বলেন-
– ‘মেপে দেয়ার সময় পূর্ণ মাপে দেবে এবং সঠিক দাঁড়িপালায় ওজন করবে। এটা উত্তম; এর পরিণাম শুভ। (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ৩৫)

আল্লাহ তাআলা মানুষকে এ কথা স্মরণ করিয়ে দেন যে, তোমদের হাড়-অস্থি যদি মাটির সঙ্গে মিশেও যায়, আল্লাহ সেখান থেকে তোমাদের জীবিত করবেন। তিনি তাতে সক্ষম। যে বিষয়ে অবিশ্বাসীরা প্রশ্ন তুলেছিল। আল্লাহ তাআলা সে বিষয়টি এভাবে তুলে ধরেছেন-
– ‘তারা বলে, যখন আমরা অস্থিতে পরিণত ও চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যাব, তখনও কি নতুন করে সৃষ্টি হয়ে উঠবো? (হে নবি আপনি) বলুন, তোমরা পাথর হয়ে যাও কিংবা লোহা। অথবা এমন কোন বস্তু, যা তোমাদের ধারণায় খুবই কঠিন। তথাপি তারা বলবেঃ,আমাদের পুনরায় কে সৃষ্টি করবে? (হে রাসুলঃ! আপনি) বলুন, যিনি প্রথমবার তোমাদের সৃষ্টি করেছেন। অতঃর তারা আপনার সামনে মাথা নাড়বে এবং বলবে, এটা কবে হবে? বলুন, হবে, সম্ভবত খুব শিগগিরই।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ৪৯-৫১)

এ সুরায়ও হজরত আদম আলাইহিস সালামের সৃষ্টি ও তাকে সেজদার বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। যা করতে শয়তান অস্বীকার করেছিল। এ সুরায় মানুষের অকৃতজ্ঞতার বিষয়টি ওঠে এসেছে। যখন বিপদ থেকে উদ্ধার করার পর তারা সে বিষয় অস্বীকার করে। আল্লাহ বলেন-
– ‘যখন সমুদ্রে তোমাদের উপর বিপদ আসে, তখন শুধু আল্লাহ ব্যতিত যাদেরকে তোমরা আহবান করে থাক তাদেরকে তোমরা ভুলে যাও। অতপর তিনি (আল্লাহ) যখন তোমাদের স্থলে ভিড়িয়ে উদ্ধার করে নেন, তখন তোমরা (আবার) মুখ ফিরিয়ে নাও। মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ৬৭)

মানুষকে নামাজের সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন মহান আল্লাহ। যাতে মানুষ যথা সময়ে নামাজ আদায় করতে পারে। আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-
– ‘সূর্য ঢলে পড়ার সময় থেকে রাত্রির অন্ধকার পর্যন্ত নামাজ প্রতিষ্ঠা করুন আর ফজরের কুরআন পাঠও। নিশ্চয় ফজরের কুরআন পাঠ মুখোমুখি হয়। রাত্রির কিছু অংশ কুরআন পাঠসহ (তাহাজ্জুদে) জাগ্রত থাকুন। এটা আপনার জন্যে অতিরিক্ত। হয়ত বা আপনার পালনকর্তা আপনাকে মর্যাদাসম্পদন্ন উচ্চ স্থানে পৌঁছাবেন।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ৭৮-৭৯)

এ সুরায় গুরুত্বপূর্ণ আবেদন ও প্রার্থনা ওঠে এসেছে। যে প্রার্থনায় রয়েছে মানুষের সত্যবাদী হওয়ার আবেদন। রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা লাভের আবেদন। আর তাহলো-
رَّبِّ أَدْخِلْنِي مُدْخَلَ صِدْقٍ وَأَخْرِجْنِي مُخْرَجَ صِدْقٍ وَاجْعَل لِّي مِن لَّدُنكَ سُلْطَانًا نَّصِيرًا
উচ্চারণ : ‘রাব্বি আদখিলনি মুদখালা সিদকিও ওয়া আখরিঝনি মুখরাঝা সিদকিও ওয়াঝআললি মিল্লাদুংকা সুলতানান নাসিরা।’
অর্থ : ‘হে পালনকর্তা! আমাকে দাখিল করুন সত্যরূপে এবং আমাকে বের করুন সত্যরূপে এবং দান করুন আমাকে নিজের কাছ থেকে রাষ্ট্রীয় সাহায্য।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ৮০)

আল্লাহ তাআলা এ কুরআনে রোগের চিকিৎসা ও নেয়ামত দান করেছেন। অথচ বান্দা আল্লাহকে ছাড়া অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। আল্লাহ তাআলা বলেন-
– ‘আমি কুরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের সুচিকিৎসা এবং মুমিনের জন্য রহমত। গোনাহগারদের তো এতে শুধু ক্ষতিই বৃদ্ধি পায় আমি মানুষকে নেয়ামত দান করলে সে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং অহংকারে দুরে সরে যায়; যখন তাকে কোনো অনিষ্ট স্পর্শ করে, তখন সে একেবারে হতাশ হয়ে পড়ে।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ৮২-৮৩)

সুরাটির শেষ আয়াতে আল্লাহ নিজের পরিচয় ও অংশীদারিত্ব থেকে মুক্ত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন-
‘(হে রাসুল! আপনি) বলুন, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর; যিনি না কোনো সন্তান রাখেন, না তাঁর সার্বভৌমত্বে কোনো শরিক আছে এবং যিনি দুর্দশাগ্রস্ত হন না, যে কারণে তাঁর কোনো সাহয্যকারীর প্রয়োজন হতে পারে। সুতরাং আপনি স-সম্ভ্রমে তাঁর মাহাত্ম বর্ণনা করতে থাকুন।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ১১১)

সুরা কাহফ (১-৭৪)
আসহাবে কাহাফের ঘটনা সমৃদ্ধ সুরা কাহাফ মক্কায় নাজিল হয়েছে। সুরাটিতে ১১০ আয়াত এবং ১২টি রুকু রয়েছে। সুরাটি বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়তের সত্যতা প্রমাণের অনেক বড় দলিল হিসেবে সমাদৃত। এ সুরার ৯নং আয়াতের কাহাফ শব্দটি এসেছে।

এ সুরাটিতে আসহাবে কাহাফের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। পাহাড়ে আশ্রয় গ্রহণ করা যুবকরা আল্লাহর কাছে এভাবে সাহায্য কামনা করেছে-
رَبَّنَا آتِنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً وَهَيِّئْ لَنَا مِنْ أَمْرِنَا رَشَدًا
উচ্চারণ : ‘রাব্বানা আতিনা মিল্লাদুংকা রাহমাতাও ওয়া হাইয়িই লানা মিন আমরিনা রাশাদা’
অর্থ : ‘হে আমাদের পালনকর্তা! নিজের কাছ থেকে আমাদের রহমত দান করুন এবং আমাদের জন্যে আমাদের কাজ সঠিকভাবে পূর্ণ করুন।’ (সুরা কাহফ : আয়াত ১০)

আল্লাহর স্মরণ ব্যতিত কোনো কাজ আগামী কাল বা ভবিষ্যতে করার কথা বলা ঠিক নয়। এসব ক্ষেত্রে কোনো কিছু ভুলে গেলে এ আয়াত তেলাওয়াত করা যেতে পারে। তবে আল্লাহ সঠিক পথ দান করবেন। এ বিষয়ে কুরআনে এসেছে-

‘আপনি কোনো কাজের বিষয়ে বলবেন না যে, সেটি আমি আগামীকাল করব।`আল্লাহ ইচ্ছা করলে’ বলা ব্যতিরেকে। যখন ভুলে যান, তখন (পড়ুন)-
وَاذْكُر رَّبَّكَ إِذَا نَسِيتَ وَقُلْ عَسَى أَن يَهْدِيَنِ رَبِّي لِأَقْرَبَ مِنْ هَذَا رَشَدًا
‘আপনার পালনকর্তাকে স্মরণ করুন এবং বলুন, আশা করি আমার পালনকর্তা আমাকে এর চাইতেও নিকটতম সত্যের পথ নির্দেশ করবেন।’ (সুরা কাহফ : আয়াত ২৪)

এ সুরায় হজরত মুসা আলাইহিস সালাম ও খিজির আলাইহিস সালামের কিছু ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। অতপর কিছু ঘটনা বা কাজের প্রসঙ্গে মুসা আলাইহিস সালাম নিজের ভুল কাজে আল্লাহর কাছে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। মুমিন মুসলমানও নিজেদের ভুল ও গাফলতির অন্যায় থেকে মুক্ত থাকতে কুরআনের এ ভাষা ব্যবহার করে আল্লাহর কাছে এ আবেদন করতে পারেন নিঃসন্দেহে-
لَا تُؤَاخِذْنِي بِمَا نَسِيتُ وَلَا تُرْهِقْنِي مِنْ أَمْرِي عُسْرًا
উচ্চারণ : লা তুআখিজনি বিমা নাসিতু ওয়া লা তুরহাক্বনি মিন আমরি উসরা’
অর্থ : ‘আমাকে আমার ভুলের জন্যে অপরাধী করবেন না এবং আমার কাজে আমার উপর কঠোরতা আরোপ করবেন না।’ (সুরা কাহফ : আয়াত ৭৩)

উল্লেখ্য, মক্কার মুশরিকরা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পরীক্ষা নেয়ার জন্য আহলে কিতাবের অনুসারীরা তাঁর সামনে তিনটি প্রশ্ন করেছিল। সে প্রশ্নের জবাবে আল্লাহ তাআলা সুরা কাহাফ নাজিল করেছেন।

প্রশ্ন তিনটি হলো-
>> আসহাবে কাহাফ কারা ছিল?
>> হজরত খিজিরের ঘটনা ও তাৎপর্য কি কি? হাদিসের বর্ণনা মতে দ্বিতীয় প্রশ্নটি ছিল রূহ সম্পর্কে।
>> জুলকারনাইনের ঘটনাটি কি?

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুরা কাহাফের মাধ্যমে বনি ইসরাইলদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন। আর তাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়ের সত্যতা প্রকাশিত হয়েছে। এভাবেই আল্লাহ তাআলা ইসলামকে বিজয়ী করেছেন।

আজকের তারাবিহর শেষ আয়াতে মুসা আলাইহিস সালামের সামনে একজন নিষ্পাপ ছোট্ট বালককে মেরে ফেলার ঘটনা ঘটে। আর তা ছিল এমন-
‘অতপর তারা চলতে লাগল। অবশেষে যখন একটি বালকের সাক্ষাত পেলেন, তখন তিনি তাকে হত্যা করলেন। মূসা বললেন, আপনি কি একটি নিস্পাপ জীবন শেষ করে দিলেন প্রাণের বিনিময় ছাড়াই? নিশ্চয়ই আপনি তো এক গুরুতর অন্যায় কাজ করলেন।’ (সুরা কাহফ : আয়াত ৭৪)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের এ গুরুত্বপূর্ণ সুরা দুটি বুঝে পড়ার এবং তাওহিদ রেসালাত ও পরকালের ওপর গভীর বিশ্বাস রেখে নিজেদের আকিদা-বিশ্বাসকে শিরকমুক্ত রাখার তাওফিক দান করুন। কুরআনি জিন্দেগি যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..