1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : Rakibul Hasan Shanto : Rakibul Hasan Shanto
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

গল্পঃ দুটো ছবি ও একটি মেয়ে | লেখাঃ তন্ময় দত্ত মিশু

  • Update Time : শুক্রবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২০
  • ২৪৩ Time View

গল্পটা তখনের যখন আমি চকবাজারে ব্যাচেলর হিসেবে থাকতাম। দোতলা বাড়ি। খুব কষ্ট করে ম্যনেজ করেছিলাম বাসাটা। সাথে দুজন বন্ধু থাকত আমার। বাসাটায় দুটোবারান্দা ছিল। একটা পূর্ব দিকে, অন্যটা দক্ষিণ দিকে মুখ করা। দুটো বারান্দায়ই আমার বিচরণ ছিল, তবে দক্ষিণেরটায় একটু বেশিই সময় কাটাতাম। রোজ নিয়ম করে বিকেল ৫টায় চারপায়ির উপর বসতাম। প্রথম প্রথম বই নিয়েই সময় কাটাতাম। তবে তার পরিধি বেশি ছিল না, এই বড়জোড় এক-দেড় ঘণ্টা। রবি ঠাকুরের শেষের কবিতা পড়েছিলাম এই বারান্দায় বসেই। রোমিও-জুলিয়েটও এখানেই পড়েছিলাম। তবে পড়াটা আর বেশিদিন চলেনি! এক বিকেলে আর্ট পেপার নিয়ে বসে আছি, ওই বারান্দায়ই। কিন্তু কিছুতেই কিছু আঁকতে পারছিলাম না। তখনি কিছু দূরের এক বিল্ডিংয়ের বারান্দায় চোখ পড়ল। সেলোয়ার কামিজ এ একটি মেয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। ভাবলাম, এইতো পেয়ে গেছি আঁকার বিষয়। আর দেরি না করে, আঁকা শুরু করে দিলাম। মেয়েটা আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিল। সন্ধ্যে নামছিল, সাথে তারাও ছিল দক্ষিণ-আকাশে। গেরুয়া রঙের সেলোয়ারে তাকে দারুণ লাগছিল। প্রায় ঘণ্টাখানেক পর সে ভেতরে চলে গেল। অবশ্য আমার আঁকাও অলমোস্ট কমপ্লিট। ফিনিশিং দিতে যাবে এমন সময় এক বন্ধুর ফোন আসল। আঁকা বাদ দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। অনেক রাতে বাসায় ফিরলাম, সেই ছবির কথা আর মনে ছিল না। অপূর্ণ ছবিটা বারান্দায়ই রয়ে গেল।

সকালে তাড়াতাড়ি করে বেরিয়ে পড়লাম। সন্ধ্যে নাগাদ বাসায় আসলাম। খুব ক্লান্ত লাগছিল, খানিক রেস্ট নিয়ে বারান্দায় গেলাম। হঠাৎ মনে পড়ল, ছবিটা সারা রাত ও সেদিন বারান্দায়ই ছিল, বাসায় ঢুকানো হয়নি। কিন্তু অবাক হলাম, বারান্দায় ছবিটা না পেয়ে। ভাবলাম, কোনো এক বন্ধু হয়তবা তা বাসায় ঢুকিয়ে রেখেছে। বাসায় তন্ন তন্ন করে খুঁজলাম, কিন্তু পেলাম না। রাতে তারা বাসায় আসলে, তাদের জিগ্যেস করলাম, কিন্তু তারাও জানালো, ছবি সম্পর্কে কিছু জানে না। আমি সত্যি অবাক হলাম, ছবিটা আসলে গেল কোথায়! দুদিন পর আবার আর্ট পেপার নিয়ে বারান্দায় বসে আছি, আঁকার কোনো টপিক পাচ্ছি না। তখনি চোখ গেলো সেই বিল্ডিং এ। সেই মেয়েটি আজও বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে, সেই একই গেরুয়া রঙের সেলোয়ার কামিজ এ।

আমি আবারও তাকেই আঁকতে শুরু করলাম। চাঁদের আলোয় তার মুখটা খুবি উজ্জ্বল দেখাচ্ছিল। কী মায়াবী তার চোখ দুটো! ছবি শেষ হবার আগেই সে ভেতরে চলে গেল। ছবির ফিনিশিং দিচ্ছি এমন সময় কলিং বেলের আওয়াজ। কিছু পুরাতন বন্ধু-বান্ধবের আগমন। ছবি বারান্দায়ই রয়ে গেল। আমি তাদের সাথে আড্ডায় মেতে গেলাম। ছবির কথা আর মনে নেই। সকালে তাড়াতাড়িই বেরিয়ে গেলাম। সন্ধ্যে নাগাদ বাসায় ফিরলাম। বারান্দায় গিয়ে দেখি ছবি গাঁয়েব! বাসায়ও খুঁজলাম, পেলাম না। কী হচ্ছে এসব, দু-দুটো ছবি গাঁয়েব! রাতে আর ঘুমাতো পারলাম না। বেশ কয়েকদিন আর বারান্দায় যাই না।

একদিন সন্ধ্যে নাগাদ বাসায় ফিরছিলাম, সেই বিল্ডিং এ চোখ গেল। ভাবলাম একটু ঘুরে আসি। দেখে মনে হলো বেশ পুরোনো বিল্ডিং, মেইন গেইটে তালা ঝোলানো। অনেকদিন বোধহয় খোলা হয়নি। একটু শঙ্কা হলো, পাশের দোকানদারের কাছ থেকে জানলাম, বছর কুড়ি হচ্ছে বিল্ডিংটা তালাবন্ধ। কোনো এক মেয়ে ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্নহত্যা করেছিল। তার পরনে, গেরুয়া রঙের সেলোয়ার ছিল। আমি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারিনি। তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসলাম। মাথাটা কেন জানি না ঘুরতে লাগলো। খেয়ে দেয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লাম। সকালে উঠেও একই কথা ভাবতে লাগলাম, আধুনিকতার যুগে এ রকম হতে পারে? আমার আঁকা ছবিগুলোও বা কোথায়? এটা আমার হ্যালোসিলেশন নাকি বাস্তব? কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি। তারপর অনেক দিন সেই বারান্দায় যাই না। হঠাৎ একদিন মনে হলো বারান্দায় যাই। সময়টা সন্ধ্যে নাগাদ। বারান্দায় গিয়েই আমি অবাক। সেই দুটো ছবি চারপায়ির উপর রাখা! আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না। ছবিগুলো অসম্পূর্ণ ছিলো, কিন্তু এগুলো তো সম্পূর্ণ!  বলা যায়, আগের থেকেও বহুগুন সুন্দর ও জীবন্ত।

 

গল্পঃ দুটো ছবি ও একটি মেয়ে

লেখাঃ তন্ময় দত্ত মিশু

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..