দেশের তিন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চুয়েট, কুয়েট ও রুয়েটকে নিয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করতে চায় বুয়েট। দুটি ধাপে ভর্তি পরীক্ষা হবে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) এ প্রস্তাব পাঠিয়েছে বুয়েট কর্তৃপক্ষ।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করবে বুয়েট। চারটি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে এ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হবে। বুয়েট অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বলা হয়েছে, দুটি ধাপে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে। প্রথম ধাপে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার আয়োজন করা হবে। প্রিলিমিনারিতে পাস করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে পরের ধাপে শুধু বুয়েট ক্যাম্পাসে চূড়ান্ত পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। এ পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষার্থীদের ফলাফল অনুসারে এ চার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হবে।
এ বিষয়ে বুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিন বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে আমরা গত ২৯ ডিসেম্বর ইউজিসিকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। চার প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় মিলে আলোচনা করে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে পরবর্তী প্রস্তুতি শুরু করা হবে।
জানা গেছে, চার প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা হলেও সেখানে নেতৃত্বে থাকতে চায় বুয়েট। এ ভর্তি পরীক্ষার সিংহভাগ হবে বুয়েট ক্যাম্পাসে। এ সিদ্ধান্তে অন্য বিশ্ববিদ্যালয় রাজি না হলে আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেবে বুয়েট কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করবে বুয়েট। দুটি ধাপে তারা ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করবে বলে লিখিতভাবে আমাদের জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় ভোগান্তি কমাতে আমরা চাই সকল বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করুক। আমরা কারও ওপর কিছু চাপিয়ে দিতে চাই না, তারা নিজেরা নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।
জানা গেছে, এবার দেশের আটটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে গুচ্ছ পদ্ধতিতে একটি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। এছাড়া সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এমন ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে চারটি ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। আগামী ১৯ ডিসেম্বর গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার পরবর্তী ধাপের কার্যক্রম শুরু করতে উপাচার্যদের বৈঠক করার কথা রয়েছে।
১৯টি বিশ্ববিদ্যালয় হলো- ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্বদ্যিালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্বদ্যিালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
পাশাপাশি টেক্সটাইল, এভিয়েশন ও মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করার সম্মতি জানিয়েছে জানা গেছে।