1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

জনঘনত্ব বিতর্কে আটকে আছে ড্যাপ

  • Update Time : মঙ্গলবার, ৩০ মার্চ, ২০২১
  • ২৭৯ Time View
রাজউকের মাস্টারপ্ল্যান
সড়ক, উন্মুক্ত স্থান, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, স্যুয়ারেজসহ সেবা সরবরাহের সামর্থ্য বিবেচনায় নতুন ভবনের উচ্চতা নির্ধারণ করার সুপারিশ করেছে রাজউক

প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক :

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সংশোধিত ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যানের (ড্যাপ) জনঘনত্ব ইস্যুতে বিতর্ক এখন তুঙ্গে। বিশেষ করে ভবনের উচ্চতা কমিয়ে দেয়ার প্রস্তাবে মাঠ বেশি সরগরম। চলছে পক্ষে-বিপক্ষে কথার লড়াই।

তবে সার্বিক বিবেচনায় ভবনের উচ্চতা বাড়ানোর পক্ষেই জোরালো মতামত বেশি। বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, শহর এবং শহরের কাজকে বিকেন্দ্রীকরণ না করে ভবনের উচ্চতা কমানোর সিদ্ধান্ত হিতে বিপরীত হতে পারে।

মূলত এসব কারণে ড্যাপের মূল কাজ শেষ হলেও জনঘনত্ব বিতর্ক নিরসন না হওয়ায় মাস্টারপ্ল্যানের খসড়াও চূড়ান্ত করতে পারছে না রাজউক। এ বিষয়ে সুরাহা করতে আগামী মাসে সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের নিয়ে সভা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে রাজউক। সেখানে সুরাহা হলে শিগগির খসড়া চূড়ান্ত হতে পারে।

সূত্র জানায়- সড়ক, উন্মুক্ত স্থান এবং পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, স্যুয়ারেজসহ সেবা সরবরাহের সামর্থ্য বিবেচনায় নতুন ভবনের উচ্চতা নির্ধারণ করার সুপারিশ করেছে রাজউক। জনঘনত্ব নিয়ন্ত্রণ করতেই মূলত এ ধরনের সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে শুরুতেই যৌক্তিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। যে কারণে চূড়ান্ত হওয়ার আগে এর একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান হতে হবে।

এজন্য সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে ওয়ার্কশপ করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজউক। সবার মতামতের ভিত্তিতে ড্যাপের খসড়া চূড়ান্ত করতে চায় তারা। কেননা সবার মতামতের ভিত্তিতে সমাধান না হলে ড্যাপ বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মুহাম্মদ খান যুগান্তরকে বলেন, ‘পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে পরিকল্পনা মেনেই অংশীজনরা কাজ করেন। কিন্তু আমাদের দেশের অংশীজনরা তাদের মতো করে পরিকল্পনা প্রণয়ন করার চেষ্টা করেন। এখানেই আমাদের ভিন্নতা। এ বাস্তবতা মেনেই কাজ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘রাজউক সবাইকে নিয়েই কাজ করতে চাচ্ছে। সে লক্ষ্যে তারা সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে ওয়ার্কশপের আয়োজন করতে চাচ্ছে। এমনও হতে পারে- এরপরও সবাই একমত হবেন না। তবুও পরিকল্পনা কার্যক্রম এগিয়ে নিতে হবে। কেননা, সব পরিকল্পনার মত-ভিন্নমত থাকবে। এ বাস্তবতা মেনেই সামনে এগোতে হবে।’

এ বিষয়ে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট কামাল মাহমুদ যুগান্তরকে বলেন, ‘বহুতল ভবন, ফ্ল্যাটের কারণে রাজধানীর জনসংখ্যা বাড়ছে। এটা সঠিক নয়। কারণ প্রথমত শহরে মানুষ আসে মূলত বিভিন্ন কাজের প্রয়োজনে। একপর্যায়ে কাজের প্রয়োজনেই এখানে কিছু মানুষ স্থায়ীভাবে থাকার চিন্তা করেন। এজন্য তারা প্লট কিংবা ফ্ল্যাট কেনেন।’

তিনি বলেন, ‘কাজের প্রয়োজনে এ শহরে শ্রমজীবী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং অন্যান্যরা আসছেন। প্রথমে তারা বস্তি, ছোট্ট ভবনে বসবাস করেন। অন্যদিকে ১ হাজার, ২ হাজার থেকে শুরু করে এ শহরে ৭ হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাটেও মানুষ বসবাস করছেন। রাজউক যেসব কথা বলছে, সেটা হয়তো বই-পুস্তকে লেখা আছে। কিন্তু, বাস্তবতা ভিন্ন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভবনের উচ্চতা কমিয়ে দিলে স্বল্প আয়তনের ফ্ল্যাটের দাম অনেক বেড়ে যাবে। তখন ৫০ হাজার টাকা রোজগারকারীর বাসাভাড়া দিতে হবে ৩৫ হাজার টাকা। এ লোকগুলোর তখন কোনো উপায় থাকবে না। কেননা সরকার তো ঢাকার বাইরে তাদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে না। এজন্য বলব, আগে ঢাকার বাইরে কর্মসংস্থান ও বসবাস উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করুন। তারপর ঢাকার ওপর কঠোরতা আরোপ করুন। নইলে এটা বাস্তবায়নযোগ্য হবে না।’

একই বিষয়ে স্থপতি কাজী গোলাম নাসির যুগান্তরকে বলেন, ‘রাজউকের সংশোধিত ড্যাপে জনঘনত্বসহ অন্তত ১৫টি ইস্যু রয়েছে। যেগুলো নিয়ে পেশাজীবীসহ অংশীজনদের ভিন্নমত ও উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষার বিষয় রয়েছে। সে কারণে রাজউক একটি ওয়ার্কশপ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সেখানে তারা এ বিষয়গুলোর সুরাহা করতে চায়।’

তিনি বলেন, ‘এটা সত্য যে, জনঘনত্ব ইস্যু ছাড়া অন্যগুলো সহজে সমাধান করা সম্ভব। কিন্তু, জনঘনত্ব বিষয়ে রাজউক যে প্রস্তাব করছে, সেটার সুরাহা বড় বিষয়। কেননা, বিকল্প ব্যবস্থা না করে ঢাকার জনসংখ্যা কমানোর উদ্যোগ এটা। এ কারণে এ বিষয়টি সুরাহা করাটা খুবই জরুরি।’

তিনি আরও বলেন, ‘জনঘনত্ব ইস্যুর ভালো ও মন্দ দুটি দিকই রয়েছে। ঢাকার জনসংখ্যা কমলে এ শহর পরিপাটি থাকবে। অন্যদিকে ঢাকার বাইরে কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও বসবাস উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি না করে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হলে অর্থনৈতিক অগ্রগতি ব্যাহত হবে। এসব সার্বিক দিক বিবেচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে।’

সূত্রমতে জানা যায়, রাজউকের ১ হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে জনঘনত্বের বিবেচনায় কেন্দ্রীয়, বহিস্থ ও অন্যান্য- এ তিনটি অঞ্চলে ভাগ করা হচ্ছে। আর এখানে কেন্দ্রীয় এলাকা বলতে রাজধানীর মূল এলাকাকে বোঝানো হয়েছে।

এ এলাকায় ওয়ার্ডভিত্তিক জনঘনত্বের ব্যাপারে দিকনির্দেশনা থাকবে। আর বহিস্থ এলাকা বলতে রাজধানী শহরের খুব কাছের এলাকাকে বোঝানো হয়েছে। যেসব এলাকায় নগরায়ণ ঘটবে দ্রুততম সময়ে। এসব এলাকা সিটি করপোরেশনভুক্ত হলে ওয়ার্ডভিত্তিক জনঘনত্ব নির্দেশনা থাকবে। আর ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা হলে ইউনিয়নভিত্তিক জনঘনত্ব এবং ভবনরে উচ্চতার ব্যাপারে নির্দেশনা থাকবে। আর ড্যাপে অন্যান্য এলাকা বলতে কেন্দ্রীয় ও বহিস্থ এলাকার বাইরের এলাকাকে বোঝানো হয়েছে। এসব এলাকা মূলত রাজউকভুক্ত উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা। এ ক্ষেত্রে ইউনিয়নভিত্তিক ভবনের উচ্চতা ও জনঘনত্বের ব্যাপারে নির্দেশনা থাকবে।

সূত্রমতে আরও জানা যায়, এবার প্রথম ড্যাপের খসড়া বাংলায় প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাতেই ড্যাপ গেজেটভুক্ত হবে। বাংলাতে ড্যাপের খসড়া প্রকাশ করায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এবং পেশাজীবীরা সহজে মতামত ব্যক্ত করতে পেরেছেন। সবার মতামতকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে খসড়া ড্যাপের বিজ্ঞানভিত্তিক যৌক্তিক কিছু সংশোধন করছেন তারা।

এছাড়া ড্যাপের গেজেটভুক্ত করার পাশাপাশি ইমারত নির্মাণ বিধিমালা সংশোধনেরও কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার। ড্যাপ এবং ইমারত নির্মাণ বিধিমালার মধ্যে সমন্বয় সাধন করেই দুটোকে গেজেটভুক্ত করা হবে। এ দুটি বিষয়ের সমন্ব^য় করে ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর) নির্ধারণ করা হবে। সে ক্ষেত্রে আইনগত কোনো জটিলতা থাকবে না।

এ প্রসঙ্গে রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ ও ড্যাপ প্রকল্পের পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ‘পেশাজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের যৌক্তিক দাবিগুলো আমলে নেয়া হয়েছে। সেগুলোর নিখুঁত বিশেষণ করে সংশোধিত ড্যাপের খসড়ায় কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। তবে খসড়া চূড়ান্ত করার আগে পেশাজীবী ও অংশীজনদের নিয়ে একটি ওয়ার্কশপ করা হবে। সবার মতামত আমলে নিয়েই ড্যাপের খসড়া চূড়ান্ত করে জাতীয় সেমিনারের প্রস্তুতি নেয়া হবে।’

বিদ্যমান ড্যাপের মেয়াদকাল শেষ হওয়ার আগে রাজউক ২০১৬-৩৫ সাল পর্যন্ত বা ২০ বছরের জন্য নতুন মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। এ ড্যাপ প্রণয়নের আগে নতুন করে ঢাকা স্ট্রাকচার প্যান ২০১৬-৩৫-এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। ২০১৫ সালে শুরু হওয়া নতুন ড্যাপ প্রণয়নের কাজ শুরু হয়ে ২০১৭ সালে এটা শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে পরে দফায় দফায় সময় বাড়িয়ে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় নতুন ড্যাপ প্রণয়নের লক্ষ্যে ৬০ দিনের গণশুনানির সময় বেঁধে দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। ৬ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া এ গণশুনানি চলে গত বছরের ৪ নভেম্বরে শেষ হয়েছে।

এরপর ড্যাপ রিভিউসংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি গণশুনানির মেয়াদ আরও দুই মাস বাড়ায়। গণশুনানি শেষে এখন রাজউক খসড়া চূড়ান্তকরণ কার্যক্রম করছে। এরই মধ্যে ড্যাপের মেয়াদকাল ২০২১-৪১ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া জনঘনত্ব ইস্যুসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেশ কিছু পরিবর্তন আসছে। সেটা নিয়ে অংশীজনদের মধ্যে তুমুল বিতর্ক জমে উঠেছে।সূত্র : যুগান্তর

আরও পড়ুনশিলাবৃষ্টিসহ ৫ বিভাগে কালবৈশাখীর আভাস

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..