1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

“ডাব গাছ ও সেই বিলেতি ঘড়ি” : আবুল বাশার রাজীব

  • Update Time : রবিবার, ২১ জুন, ২০২০
  • ৫৯৮ Time View

ছেলেবেলার অনেক মজার স্মৃতি আছে যেগুলো মনে হলে মনের অজান্তেই এখনও হেসে উঠি। আমি তখন ক্লাস ফাইভ- সিক্সে হয়ত পড়ি।

ঘটনা ১ঃ আমার প্রয়াত বন্ধু ওয়াসীম যে, কিনা স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারতোনা এবং কথা বলার সময় তোতলামী করত, যার মধ্যে একটা দারুণ সৌন্দর্য ও আকর্ষণ ছিল। একেবারে খাটি কিশোরগঞ্জের আঞ্চলিক উচ্চারণে কথা বলত। আমাকে ডাকত লাজিব (রাজীব) বলে৷ (রাজীব এর “র ” উচ্চারণ করতে পারতনা।) ওর কথা শুনে সবাই খুব মজা পেতাম। সবাই মজা নেয়ার জন্য, ওর আনকমন ও মজাদার উচ্চারণ শুনার জন্য, ওকে ডেকে এনে সবাই এটা ওটা জিজ্ঞেস করত আর শুনে হেসে লুটিয়ে পড়তাম সবাই। যেমনঃ ও যদি বলত “আয় ব্যাম (ব্যায়াম) করি” সেটা শুনা যেত আয় পেম(প্রেম) করি।(আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন এবং তাকে জান্নাত দান করুন।)

বন্ধু ওয়াসীম ছিল খুব বুদ্ধিমান। সে হঠাৎ বলল, আমি একটি নতুন জাদু শিখেছি, আস্তো ডাব গাছ খেয়ে ফেলতে পারি।  আমি রেগে গিয়ে বললাম আমাকে রমা ভেবেছিস তোর কথা বিশ্বাস করব?(আমাদের এলাকায় তখন বোকা ও আহম্মক টাইপের লোকদেরকে রমা বলে ডাকা হত)

ওয়াসীম আমার সাথে ২টাকার বাজী ধরল! আমি অবাক হয়ে বললাম ডাব গাছ খাবি কেবল ২টাকার বাজীতে? নিশ্চই এখানে একটা চালাকি আছে! আর যদি ডাব গাছ খেতে না পারিস, তোর খবরই আছে কিন্তু! সে শর্ত দিলো ২টাকা Advance দিয়ে দিতে হবে। তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম, আর তুই যদি হেরে যাস,তখন কি হবে? সে বলল, হেরে গেলে সে ৪ টাকা ফেরত দিয়ে দিবে, তবে কয়েকদিন পর দিবে, এখন তার কাছে টাকা নাই।  আমি ২টাকা দিয়ে দিলাম।

সে আমাকে দাড় করিয়ে রেখে বলল, ডাব গাছ খাবে তার শক্তির দরকার আছেনা! ২টাকার বিস্কুট খেয়ে নেই। মঞ্জু কাকার দোকানে নিয়ে ২ টাকা দিয়ে  ৮টা কক্সি বিস্কুট কিনে আনল। আমি ওকে বললাম তুই ডাব গাছ খাবি, তো বিস্কিট কিনেছিস কেন? সে বলল, আস্ত একটা ডাব গাছ খাব তো, তাই শক্তির দরকার। মঞ্জু কাকা একটা কাগজে বিস্কুট গুলো মুড়িয়ে দিলেন।

গেলাম ওয়াসীম উদ্দিন ছাত্রাবাসের পিছনে বেশ কিছু নারকেল/ডাব গাছ ছিল। তখনও ভেবে কোন কুল কিনারা পাচ্ছিলামনা যে, ও আসলে কি করতে যাচ্ছে! অবশেষে ওয়াসীম আমাকে ডাব গাছের নিকট নিয়ে আসল। আমি গাছের আগার দিকে তাকাই একবার, গোড়ার দিকে তাকাই একবার। কিছুতেই আমার মাথায় ঢুকছেনা, সে কিভাবে এত বড় গাছটা খাবে? আর মনে মনে যদিও ভাবছি,  নিশ্চয়ই এখানে একটা চালাকি বা টেকনিক আছে!

অত:পর সে আমাকে অবাক করে দিয়ে একটি বিস্কুট মুখের ভিতর দিয়ে বলল, এই যে একটা ডাবগাছ খেলাম। এবার দ্বিতীয়টা খাচ্ছি। সেই সঙ্গে ও আমাকে বিস্কিটের মাঝখানে ডাব গাছের ছবি দেখিয়ে একটার পর একটা মুখে দিয়ে খেতে থাকল।

মানে বিস্কিটের মধ্যেই ছিল ডাব গাছের ছবি। ও একটা বিস্কুট মুখে দিচ্ছে, মানে একটা ডাব গাছ খাচ্ছে। অবশেষে ওকে বিজয়ী মেনে নিলাম।পরবর্তীতে ওয়াসীম আর আমি এভাবে অনেকের কাছ থেকে বাজী জিতে বিস্কুট খেয়েছি। বন্ধু তোকে প্রায়ই ভীষনভাবে feel করি।

ঘটনা ২ঃ মাঠে একদিন এলাকার বড়রা ফুটবল খেলছেন। আমি বসে বসে খেলা দেখছি। একজন এ্যামেচার খেলোয়াড় হঠাৎ এসে তার হাত ঘড়িটা, তার শার্টের পকেটে ঢুকিয়ে শার্টটা আমার হাতে দিয়ে বললেন, “এগুলো একটু রাখ, হাত থেকে কোথাও রাখবেনা। আর কোথাও যাবেনা খেলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত।” আমি আর না করতে পারলাম না। পড়েছিনা বিপদে!

এদিকে ঘুড়ি কেটে কেটে আসে আমার মন তো আর মানেনা। কিন্তু যেতেও পারছিনা। মনে হচ্ছে আমাকে শিকল দিয়ে কেউ বেধেঁ রেখেছে। অস্থির হয়ে গেলাম৷ অবশেষে আর পারলামনা এক হাতে শার্ট ছেপে ধরে দিলাম ঘুড়ির পিছনে দৌড়। এভাবে প্রায় ঘন্টা খানেক পুরো মাঠ জুড়ে ঘুরলাম। এখানে সেখানে ঘুরাঘুরি শেষ করে খেলা শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে আগের জায়গাতে এসে বসে পড়লাম।

খেলা শেষে শার্ট ফেরত দিলাম। উনি তখন জিজ্ঞেস করলেন ঘড়ি কই। আমি বললাম শার্টের ভিতরেই তো, আমি তো বের করি নাই। আমার কাছে কোথায় কোথায় গিয়েছিলাম জানতে চাইলে সব বলি। বুঝলাম এখানে সেখানে দৌড়াদৌড়ির কারণে কোথাও হয়ত পড়ে গেছে। সন্ধ্যা নেমে অন্ধকার ঘন হয়ে আসছে তখন, তাৎক্ষনিক মাঠের সব খেলোয়াড় ও উপস্থিত জনতা সবাই মিলে পুরো মাঠে খুজাখুজি করেও আর পেলাম না। পরদিন সকালে এসেও খুঁজলাম, কিন্তু পেলামনা। কি আর করা! পরিবারের পক্ষ থেকে নতুন আরেকটা অন্য ঘড়ি কিনে দেয়া হল। কিন্তু সেই হারানো ঘড়িটি ছিল বিদেশী ও উনার অনেক শখের। তিনি তা মেনে নিলেও, এই ঘড়িটি আসলে তাঁর মনের মতো হয়নি। তাকে দেখলেই  সেই হারিয়ে ফেলা বিলেতি ঘড়িটির কথা মনে পড়ে যায়।

লেখক:আবুল বাশার রাজীব

 

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..