প্রত্যয় নিউজ ডেস্কঃ তালেবানদের রক্তচক্ষু ও রক্ষণশীল সমাজের বেড়াজাল ভেঙ্গে ভিন্ন এক ইভেন্টে নিজের ক্যারিয়ার গড়েছেন আফগান কিশোরী নেগিন আফসার। দেশটির প্রথম নারী মোটরসাইক্লিস্ট তিনি। জাম্পিং স্কিলও দারুণ নেগিনের। নারীদের মোটরসাইকেল চালানোর ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, নেগিন সব বাধা জয় করে আন্তর্জাতিক মঞ্চে আফগানিস্তানের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে চান। এ যাত্রায় তাকে সহযোগিতা করছে পরিবার ও দেশটির ন্যাশনাল মোটরসাইক্লিং ফেডারেশন।
পূর্ব আকাশে কেবল উকি দিচ্ছে সূর্য। ভোরের আলো পুরোপুরি ফোটেনি তখনও। কিন্তু বিছানা ছেড়ে ঠিকই উঠে গেছেন ১৬ বছর বয়সী নেগিন আফসার। মোটর সাইকেল নিয়ে কাবুলের রাস্তায় ছুটে চলা। গতির সাথেই সখ্যতা নেগিনের। ভোরের আলোয় কঠোর অনুশীলন। এরপর মোটর সাইকেল নিয়েই দু:সাহসিক সব কৌশল রপ্ত করেন নেগিন।
নেগিন আফসারের জন্ম এমন একটা সময়ে যখন আফগানিস্তানে তালেবানদের আধিপত্য। রক্ষণশীলতার বেড়াজাল ডিঙ্গিয়ে ঘরের বাইরে বের হয়ে আসেন নেগিন। সাহসী পদক্ষেপে তাকে উৎসাহ যুগিয়েছেন তার মা ফ্রেশতা আফসার। শুরুটায় অ্যাথলেটিক্সকে বেছে নিয়েছিলেন নেগিন। দুবাইয়ে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা স্বর্ণও জিতেছিলেন। কিন্তু মনটা ঠিক বসছিলোনা ট্র্যাক এন্ড ফিল্ডে।
কাবুলের পথে একদিন ছেলেদের মোটর সাইকেল নিয়ে চ্যালেঞ্জিং এক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেখেন নেগিন। এতেই পাল্টে যায় তার জীবন। নারী হয়েও বেছে নেন মোটরসাইক্লিং। রক্ষণশীল তালেবানদের হুমকি ধামকি। কিংবা সমাজের রক্তচক্ষু কোনটাই আটকে রাখতে পারেনি এই ষোড়শীকে। কঠোর অনুশীলন আর একাগ্রতায় আফগানিস্তানের প্রথম নারী সাইক্লিস্ট তিনি। দেশকে নিয়ে যেতে চান বিশ্ব দরবারে।
আফগানিস্তানের নারী সাইক্লিস্ট নেগিন আফসার বলেন, শুরুতে আমি অ্যাথলেটিক্সে ছিলাম। কিন্তু মোটরসাইকেল নিয়ে আমি যে রোমাঞ্চ অনুভব করি, তা অন্য কোথাও পাইনা। আমি আন্তর্জাতিক মঞ্চে আফগানিস্তানকে নিয়ে যেতে চাই। আমাকে দেখে অনেক মেয়ে বর্তমানে এ খেলার প্রতি আগ্রহী হচ্ছে। তালেবানরা আবারো এলে হয়ত আমাদের এ খেলা বন্ধ করে দিতে পারে। কিন্তু আমি ভয় পাইনা। আমি আমার লক্ষ্য পূরণে কাজ করে যেতে চাই।
নেগিনের এ যাত্রায় তাকে সব ধরণের সহায়তা দিচ্ছে দেশটির মোটরসাইক্লিং ফেডারেশন।
আফগানিস্তানে ২০১৫ সালে মোটরসাইক্লিং ফেডারেশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানে এ ফেডারেশন ৬০০ নারী অ্যাথলিটকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
ডিপিআর/ জাহিরুল মিলন