দেলোয়ার হোসেন রিপন, তাড়াইল (কিশোরগঞ্জ): কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে জলমাহাল নিয়ে বিরোধের জেরে ৩দিনের শিশুসহ ৬জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় পর পর ২দিনে ২টি মামলা দায়ের হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধলা ইউনিয়নের কলুমা গ্রামে জলমহাল নিয়ে একই গ্রামের প্রতিপক্ষের সাথে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছিল।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ সেপ্টম্বর দিবাগত রাতে প্রতিপক্ষের হামলায় কলুমা গ্রামের মৃত আবদুর রহিমের ছেলে মাওলানা আবদুল কাদির আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এই ঘটনায় ওই দিন রাতেই কলুমা গ্রামের হাজী সাহেব আলীর ছেলে আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৮/১০জনসহ একই গ্রামের ২০জনের নাম উল্রেখ করে থানায় মামলা করেন, মামলা নম্বর-০৩।
থানায় মামলা দায়েরর খবর পেয়ে পরদিন ৭সেপ্টম্বর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে একই কায়দায় প্রতিপক্ষগন একত্রিত হয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে দোকান ও বাড়িঘরে লুটপাটসহ দেশিয় অস্রসহ হামলা চালিয়ে একই গ্রুপের ৪জনকে বল্লমের ঘা ও কুপিয়ে আহত করে।এ ঘটনায় লাঠির আঘাতে রুবেল মিয়ার স্ত্রী ফয়জুন্নেছার কোলে থাকা ৩দিনের শিশু আহত হয়।আহতদের মধ্যে মাওলানা আবদুল কাদিরের ছেলে আবদুর রহমান, মৃত লোকমান ভূঁইয়ার ছেলে আবদুল হাই, মৃত আলী উসমানের স্ত্রী সরুফা আক্তার কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন এবং আহত রুবেল মিয়ার স্ত্রী আহত ফয়জুন্নেছা নিজ ৩দিনের শিশু সন্তানকে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার শিশু হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ওই দিন আবার ২৪জনকে আসামী করে কলুমা গ্রামের রঙ্গু মিয়ার ছেলে এমদাদুল হক বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।মামলা নম্বর -০৪।
সরেজমিনে গতকাল মঙ্গলবার কলুমা গ্রামে গিয়ে দেখা যায় পরিস্থিতি থমথমে। কয়েকটি দোকান ও বাড়ীতে বল্লমের ঘা এবং দেশিয় অস্রের আঘাতের চিহ্ন।
ক্ষতিগ্রস্থ দোকানি রুবেল জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কলুমা গ্রামের আজিজুল হক ভূঁইয়া মোতাহারের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা ফকরুল আলম মুক্তার হুকুমে ৩০/৪০জনের একটি সন্ত্রাসী দল অতর্কিতে হামলা চালায়। রুবেল বলেন,তার দোকান থেকে নগদ ১লাখ টাকাসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায় প্রতিপক্ষের লোকজন।
হামলার শিকার কলুমা গ্রামের আলমগীর,রুবেল,এমদাদুল,আসাদুজ্জামান সহ এলাকার অনেকে জানান, কলুমা গ্রামের প্রায় ৩০০একর ভূমিতে অবস্থিত হলহরি, নয়াচান্দন, পুরানচান্দন, মাইজানী খাল বর্ষার সময় প্রাকৃতিকভাবে পানিতে থৈথৈ করে। তখন উক্ত জলাশয়ে প্রায় কোটি টাকার উপড়ে বিভিন্ন প্রজাতির দেশিয় মাছ ধরা পড়ে।উক্ত জলাশয়ের ভূমির মালিকগন প্রায় ১৫বছর যাবত প্রতিপক্ষের নিকট স্থানীয়ভাবে ইজারা দিয়ে আসছিল। উক্ত ভূমির মালিকগনের সকলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক চলতি বছর ইজারা না দিয়ে নিজেরা মাছ চাষের সিদ্ধান্ত নেয়।আর্থিকভাবে লাভবান না হতে পেরে প্রতিপক্ষরা হামলা চালায় বলে তাদের অভিযোগ।
মামলায় হুকুমের আসামী করা ছাত্রলীগ নেতা ফকরুল আলম মুক্তারের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে ধলা ইউপির চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মবিন জানান, হামলাকারীরা এলাকার মাদক ব্যাবসায়ী ও খারাপ প্রকৃতির লোক। আমি চাই এর সুষ্ঠু বিচার হোক।
তাড়াইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) জয়নাল আবেদীন সরকার ঘটনার জানান, মামলার প্রেক্ষিতে আসামীদের ধরার চেষ্টা চলছে।তাছাড়া অনেক আসামী আদালত থেকে আগাম জামিনে আছেন।