প্রত্যয় নিউজডেস্ক: থাইল্যান্ডে টানা দ্বিতীয় দিন জরুরি অবস্থা অমান্য করে বিক্ষোভ করেছেন সরকারবিরোধীরা। এদিন তাদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান দিয়ে রাসায়নিক মিশ্রিত পানি নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এছাড়া গ্রেফতার করা হয়েছে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী নেতাকে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শুক্রবার ব্যাংককে জরুরি অবস্থার নির্দেশনা অমান্য করে জড়ো হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। তাদের প্রতিহত করতে আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল হেলমেট পরা দাঙ্গা পুলিশ।
এদিন সেখানে অনেকটা হংকংয়ের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পুলিশ যন্ত্রণাদায়ক পানি ছুড়লেও ছাতা হাতে সেখানেই অনড় থাকেন অনেক বিক্ষোভকারী।
তাত্তেপ রুয়াংপ্রাপাইকিতসিরি নামে বিক্ষোভকারীদের এক নেতা বলেন, স্বৈরাচারী এই সরকার জনতার আন্দোলন ঠেকাতে সহিংসতা ব্যবহার করছে। এ বক্তব্যের কিছুক্ষণ পরে আরও ছয় বিক্ষোভকারীসহ গ্রেফতার করা হয় তাত্তেপকে।
প্রায় তিন মাস ধরে সরকারের পতন ও রাজতন্ত্রের সংস্কারসহ বেশ কিছু দাবিতে বিক্ষোভ করছে থাইল্যান্ডের জনগণ। শান্তিপূর্ণ এ বিক্ষোভের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত অতিরিক্ত কঠোর কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। তবে গত কয়েকদিনে একাধিক নেতাসহ প্রায় অর্ধশত বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিক্ষোভ সরাসরি সম্প্রচারের সময় গ্রেফতার হয়েছেন এক সাংবাদিকও।
বিক্ষোভ ঠেকাতে গত বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে থাই সরকার। এ পরিস্থিতিতে এক জায়গায় পাঁচজনের বেশি সমবেত হওয়া নিষিদ্ধ হলেও তা অমান্য করেই ব্যাংককের রাস্তায় নেমে এসেছেন হাজারও মানুষ।
পুম নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, আমি নিজের জন্য ভীত নই। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়েই আমার বেশি ভয়।
বিক্ষোভকারীদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- থাই প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, সরকার ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচন, সামরিক সরকারের লেখা সংবিধান সংশোধন, ভিন্নমতের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধ এবং রাজশাসন সংস্কার।
তবে আন্দোলনের মুখেও পদত্যাগ করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন ২০১৪ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা থাই প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচা। সমালোচকদের দাবি, ক্ষমতায় থাকতে গত বছরের নির্বাচনে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন থাই প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়া, বিক্ষোভের বিষয়ে সরাসরি কিছু বলেননি থাই রাজা মাহা ভাজিলংকর্ন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক বক্তব্যে তিনি বলেছেন, এই মুহূর্তে থাইল্যান্ডের এমন লোকজন দরকার যারা দেশ ও রাজতন্ত্রকে ভালোবাসে।