স্পোর্টস ডেস্ক: অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ইনজুরিতে। যে কারণে তিনি খেলতে পারেননি। পরিবর্তে অধিনায়কত্ব করলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। গুয়াহাটির বারসাপাড়া স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে মিরাজের নেতৃত্বে দাপটের সঙ্গেই শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। মেহেদী হাসান মিরাজের দলের জয় এলো ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে। ৪৮ বল হাতে রেখে জয় পেলো তারা।
টস জিতে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কাকে ৪৯.১ ওভারে ২৬৩ রানে অলআউট করেছিলো বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে তানজিদ হাসান তামিম, লিটন দাস এবং অধিনায়ক মিরাজের সাহসী ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে ৪২ ওভারেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
জয়ের জন্য ২৬৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সূচনাটাই দুর্দান্ত করেছিলো বাংলাদেশের দুই ওপেনার লিটন দাস এবং তানজিদ হাসান তামিম। ২০.৪ ওভার ব্যাট করে ১৩১ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন তারা দু’জন। দুশান হেমন্থর বলে লিটন দাস পাথিরানার হাতে যখন ক্যাচ দেন তখন তার নামের পাশে শোভা পাচ্ছিলো ৫৬ বলে ৬১ রান।
এরপর ওয়ানডাউনে ব্যাট করতে নেমে তানজিদ তামিমের সঙ্গে জুটি বাধেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৫২ রানের জুটি গড়ে তোলেন তারা। সেঞ্চুরির পথে হাঁটছিলেন তানজিদ তামিম। তবে শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরির দেখা পেলেন না তিনি। ৮৮ বলে ৮৪ রান করে লাহিরু কুমারার বলে আশালঙ্কার হাতে তালুবদ্ধ হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরত যান জুনিয়র তামিম। ১০ টি বাউন্ডারির সঙ্গে ২টি ছক্কার মার মারেন তিনি।
তাওহিদ হৃদয় এসে কিছুই করতে পারেননি। গোল্ডেন ডাক মেরে আউট হয়ে যান। পরের পথটুকু মুশফিকুর রহিমকে নিয়েই পাড়ি দেন মিরাজ। ৬৪ বলে ৬৭ রানে মিরাজ অপরাজিত ছিলেন। ৪৩ বলে ৩৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন মুশফিকুর রহিম। লঙ্কানদের হয়ে একটি করে উইকেট নিয়েছেন লাহিরু কুমারা, দুনিথ ভেল্লালাগে ও দুশান হেমন্থ।
এর আগে পাথুম নিশাঙ্কা ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভার জোড়া ফিফটি হাঁকালেও ৫ বল বাকি থাকতে লঙ্কানদের ২৬৩ রানে অলআউট করে দেয় টাইগাররা।
গুয়াহাটির বারসাপাড়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলংকা। শুরুটা বেশ দাপটের সঙ্গে করেন দুই ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা এবং কুশল পেরেরা। ঝোড়ো ব্যাটিং করে ১০০ রানের ওপর জুটি গড়েন তারা।
২৪ বলে ৩৪ করে কুশল পেরেরা রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে সাজঘরে ফেরত যান। কুশল মেন্ডিসও ঝোড়ো ব্যাটিং করতে চেয়েছিলেন। তবে ১৯ বলে ২২ রানেই তাকে থামিয়ে দেন নাসুম আহমেদ, ১৫তম ওভারে।
পরের ওভারে সাদিরা সামারাবিক্রমাকে ফেরান শেখ মাহেদি। পাথুম নিশাঙ্কা মারকুটে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন। ৬৪ বলে ৬৮ করা এই ব্যাটারকে ফিরতি ক্যাচ বানান মাহেদি।
চারিথ আসালাঙ্কা খেলছিলেন দেখেশুনে ধীরগতিতে। তার ইনিংসটিও বড় হয়নি। ৩২ বলে ১৮ করে মাহেদির তৃতীয় শিকার হন এই ব্যাটার। অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে খেলতে পারেননি দাসুন শানাকা। ১৭টি বল খেলে মাত্র ৩ রান করে শরিফুল ইসলামকে উইকেট দিয়ে যান তিনি।
এরপর ২৭ বলে ১৮ করা ব্যাটার দিমুথ করুণারত্নকে নন স্ট্রাইকে সরাসরি থ্রোতে রানআউট করেন মাহমুদউল্লাহ। ২১৮ রানে লঙ্কানদের ৬ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ।
দলের পক্ষে বড় রানের সংগ্রহ এনে দিতে চেষ্টা চালান ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। যদিও হাফসেঞ্চুরি করেও তা বেশিদূর এগিয়ে নিতে পারেননি তিনি।
৭৯ বলে ৫৫ রান করে মিরাজের বলে মাহমু্দউল্লাহর হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ধনঞ্জয়া। শেষ পর্যন্ত ৪৯.১ ওভারে ২৬৩ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা।
বাংলাদেশের শেখ মাহদি ৩৬ রানে নেন ৩টি উইকেট। একটি করে উইকেট শিকার তানজিম সাকিব, শরিফুল ইসলাম, মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাসুম আহমেদের।