আগের কার্যদিবসের মতো রোববারও (১৪ ফেব্রুয়ারি) দেশের শেয়ারবাজারে দামের দিক থেকে শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলোর শেয়ার দাম বাড়লেও পতন হয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। ফলে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচকের পতন হয়েছে।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই বহুজাতিক কোম্পানি রেকিট বেনকিজার, ইউনিলিভার কনজুমার কেয়ার, ম্যারিকো বাংলাদেশ এবং বার্জার পেইন্টসের শেয়ার দাম বাড়তে থাকে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত দামের দিক থেকে শীর্ষে থাকা এই চার কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ে।
এর মধ্যে দামের দিক থেকে শীর্ষে থাকা রেকিট বেনকিজারের শেয়ার দাম ২২৩ টাকা ৩০ পয়সা বেড়ে ৪ হাজার ৬৯১ টাকা ১০ পয়সায় উঠেছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইউনিলিভার কনজুমার কেয়ারের শেয়ার দাম ১৫৭ টাকা বেড়ে ৩ হাজার ২৯৮ টাকা ১০ পয়সা হয়েছে। ১৬ টাকা দাম বেড়ে ম্যারিকোর শেয়ার ২ হাজার ১৪০ টাকা ৯০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। আর বার্জারের শেয়ার দাম ৮৮ টাকা ৮০ পয়সা বেড়ে ১ হাজার ৬১৬ টাকা ৬০ পয়সা হয়েছে।
গত সপ্তাহেও এই চার বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ে। এতে দফায় দফায় দাম বেড়ে দামের দিক থেকে শীর্ষে থাকা এই বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর শেয়ার দাম আরও দামি হয়েছে। দামি এই শেয়ারগুলোর দাম বাড়লেও ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে অন্যান্য কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে।
আগের কার্যদিবসের মতো রোববারও লেনদেনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের প্রবণতা দেখা যায়। তবে লেনদেনের শেষ দিকে কিছু প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ে। এতে পতনের মাত্রা কিছুটা কমলেও বড় পতনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি শেয়ারবাজার।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র ৫৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে পতনের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ১৯৩টি। আর ১০১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টা থেকেই একের পর এক প্রতিষ্ঠানের দরপতন হওয়ায় এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৫৬ পয়েন্ট পড়ে যায়। দিনের লেনদেন শেষে সূচকটি আগের দিনের তুলনায় ৩৭ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৪৪৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
প্রধান সূচকের পাশাপাশি পতনের তালিকায় নাম লিখিয়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট কমে সূচকটি ২ হাজার ৯৯ পয়েন্টে নেমে গেছে। অবশ্য এই পতনের মধ্যেও ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৩৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
পতনের বাজারে ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮০১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ৫৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ২৫৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ২১৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ১০২ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৪৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মা।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে ডিএসইতে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- রবি, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, সামিট পাওয়ার, মীর আখতার, বিডি ফাইন্যান্স, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার এবং আইএফআইসি ব্যাংক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই কমেছে ৯৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২১৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৭টির এবং ৪৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।