1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

দুঃখিত ড. জাফরুল্লাহ, আপনার উদ্দেশ্য মহৎ নয়

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২০
  • ১৭৬ Time View

দৈনিক প্রত্যয় ডেস্কঃ তিনি মুক্তিযোদ্ধা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উনি প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। এসব কারণে আপনারা তাকে সম্মান করেন। আপনাদের প্রতিও আমার অনেক শ্রদ্ধা যে আপনারা উনার এই ভূমিকার জন্য তাকে সম্মানের আসনে বসিয়েছেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়ে খালেদা জিয়ার ‘তিন লাখ তত্ত্বে’র পক্ষে উনার জোরালো অবস্থান নিশ্চয়ই আপনারা ভুলে যান নি? বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মুক্তি দেয়ার কথাটাও তিনিই বলেছেন। প্রগতিশীল মানুষদের নাস্তিক উপাধি দেয়া মাহমুদুর রহমানের পক্ষে তার অবস্থানও নিশ্চয় ভুলে যাবার কথা নয়? মুক্তিযোদ্ধা কোটা বিরোধিতা কারীদের আন্দোলনকে উনি ভাষা আন্দোলনের সাথে তুলনা করেছিলেন (!), তার সে বক্তব্য বেশিদিন আগের নয়। স্বাধীনতাবিরোধী জামাত-শিবিরকে সঙ্গে নিয়ে অহরহ সভা সমাবেশ করা তার নিত্যদিনের কর্মসূচি। সর্বশেষ করোনা সনাক্তকরণ কিট নিয়ে প্রেস কনফারেন্সে তার পাশেই ছিলেন ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু। আমাদের গর্বের সেনাবাহিনীকে নিয়েও তিনি বিতর্কিত সব মন্তব্য করেছেন, যার কারণে তিনি মাফও চেয়েছেন।

আবিষ্কারকদের উদ্দেশ্য মহৎ, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশের প্রথিতযশা বিজ্ঞানীরাও করোনা সনাক্তকরণে র‍্যাপিড কিট আবিষ্কার করেছেন। যদিও করোনা শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে কোন দেশকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা র‍্যাপিড কিট ব্যবহারের এখনও অনুমোদন দেয়নি। আমাদের বিজ্ঞানীরাও যথাযথ প্রক্রিয়া মেনেই কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের কোনো অভিযোগ নেই।

কিন্তু ড. জাফরুল্লাহ’র উদ্দেশ্য মহৎ নয়, এটা আমি নিশ্চিত। শুধু রাজনৈতিক অবস্থান এবং রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্যেই নিজের প্রাতিষ্ঠানিক গ্রহণযোগ্যতাকে পুঁজি তিনি দেশকে বড় একটি দুর্যোগের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি খুব ভালো করেই জানেন, অধিকাংশই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি বিক্ষুব্ধ, তাই তিনি সেই সুযোগটিই নিচ্ছেন।

ডা. জাফরুল্লাহ ভালো করেই জানেন র‍্যাপিড কিট ব্যবহার করে ইতালি , স্পেনের মত দেশে করোনা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। করোনার ভয়াবহতায় সেসব দেশের সরকার প্রধানরা অসহায় হয়ে সব ঈশ্বরের উপর ছেড়ে দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এমনকি চীনও তাদের দেশে র‍্যাপিড কিট ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি। কিন্তু ডা. জাফরুল্লাহ সাহেব বাংলাদেশে র‍্যাপিড কিট ব্যবহারের জন্য এক প্রকার জিহাদ ঘোষণা করেছেন। আবেগপ্রবণ কিছু মানুষ বলছে, উনাকে সুযোগ দিলে কি হয়? দেশিদের কদর আমরা দিতে পারিনা ইত্যাদি ইত্যাদি । কিন্তু যা বাস্তব, যা সত্য, যা দেশের জন্য মানুষের জন্য মঙ্গলকর; সেক্ষেত্রে যে আবেগের চেয়ে বাস্তবতাকেই বেছে নিতে হয়। কঠিন এই বাস্তবতার সামনে আপনাদের এই আবেগের দাম রাষ্ট্র দিতে পারবে না। আর তা আপনার স্বার্থে, দেশের ও দেশের মানুষের স্বার্থেই। কোনো বিজ্ঞান-মনস্ক মানুষের পক্ষেই এই আবেগের পক্ষে যাওয়া সম্ভব না। আপনিও নিশ্চয় চান না যে, আমাদের দেশে ইতালি স্পেনের মতো ভয়াবহতা আসুক। এখনো পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন ছাড়া বাংলাদেশ কিছুই করেনি। র‍্যাপিড কিট এর ক্ষেত্রেও নিশ্চয় করবে না।

কেন সম্ভব না আসেন এর সহজ সমাধানে আসি। করোনা ভাইরাসটি শরীরে ঢোকার সাথে সাথেই সোয়াব টেস্টের মাধ্যমে জানা সম্ভব যে, মানুষটি আক্রান্ত হয়েছে কিনা৷ এমনকি সিম্পটম (জ্বর, কাশি, হাঁচি, ক্লান্তি, ডায়রিয়া, মাংসপেশি ব্যথা ইত্যাদি) শুরু হবার আগেই সেটা জানা সম্ভব৷ এখন পর্যন্ত সিংহভাগ দেশই এই পদ্ধতি অনুসরণ করছে৷ বাংলাদেশও এখনো পর্যন্ত তাই করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনে।

র‍্যাপিড কিট এর সমস্যা হলো, ডায়াবেটিস ও প্রেগনেন্সি টেস্টের মতো র‍্যাপিড কিট রক্ত পরীক্ষা করে করোনা ভাইরাস সনাক্ত করে। তাও ৭০% ভুল ফলাফল আসে। কিন্তু করোনা ভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হলে তা রক্তে সংক্রমিত হতে সময় লাগে ৮/১০ দিন। অনেক ক্ষেত্রে বেশি সময়ও লাগতে পারে। এখন করোনাতে আক্রান্ত কেউ র‍্যাপিড কিট দিয়ে টেস্ট করে নিশ্চিত হলো সে আক্রান্ত হয়নি। তাহলে কি হবে? তখন এই দেশের অবস্থা ঠিকই ইতালি-স্পেনের মতো ভয়াবহ হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিটি রক্তে সংক্রমিত হবার আগে সতর্ক না হয়ে আরো শত শত মানুষকে সংক্রমিত করবে। কারণ র‍্যাপিড কিট তাকে বলে দিয়েছে যে সে সংক্রমিত না।

হ্যাঁ, এখন অনেকে বলতে পারেন- তাহলে সরকার কেন প্রথমে অনুমতি দিলো। সরকার অনুমতি দিয়ে ঠিক কাজটিই করেছে। এখন ঠিক কাজটি ডা. জাফরুল্লাহ সাহেবদের করতে হবে। সকল প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এইসব নিয়ে রাজনীতি করা কোনো সমাধান না।

এখন আপনারা কোন যুক্তিতে বলবেন ডা. জাফরুল্লাহ’র উদ্দেশ্য মহৎ? তার উদ্দেশ্য যে রাজনৈতিক না এর প্রমাণ কি? যিনি এই র‍্যাপিড কিট তৈরির প্রধান বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল, তারও কোনো অভিযোগ নেই। তিনি বলছেন কেউ কোনো ঘুষ চায়নি। সবকিছু নিয়ম মেনেই হচ্ছে। ডা. জাফরুল্লাহ টিমের সদস্য ড. ফিরোজ কবিরের ক্ষোভ তাকে ওষুধ প্রশাসনের অফিসে দূরত্ব মেইনটেইন করে দূরে বসতে বলেছিলো। তাই তিনিও বিপ্লবী হয়ে উঠেছেন। সরকারের কাজের প্রশংসা করে গণস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সরকারকে তিনটি চিঠিও দিয়েছে। সর্বশেষ দিয়েছে ২১ এপ্রিল।

এতকিছুর পরও ডা. জাফরুল্লাহ কেন সংবাদ সম্মেলনে এসে অবান্তর কথা বললেন? যেখানে আবার তার পাশে বসেছিলেন, ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি!

লেখক: আশরাফুল আলম খোকন, প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেসসচিব

দৈনিক প্রত্যয়/ জাহিরুল মিলন

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..