স্পোর্টস ডেস্ক: মাঠে চলছে এশিয়ান অঞ্চলের ক্রিকেট শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই এশিয়া কাপ। ৬ দলের এই টুর্নামেন্টকে বলা যেতে পারে এবারের বিশ্বকাপের ড্রেস রিহার্সেল। বিশ্বকাপের আগে নিজেদের স্কোয়াড যাচাই আর প্রস্তুতি পরখ করে দেখার বড় মঞ্চ এবারের এশিয়া কাপ। ক্রিকেটের শক্তিশালী এশিয়ান বলয়ের লড়াই বলেই কিনা এই টুর্নামেন্টে বাড়তি নজর রাখছে পুরো বিশ্ব। বাদ নেই ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি।
এশিয়া কাপ শুরুর দিনে টুর্নামেন্টের ছয় জাতির ছয় তারকা ক্রিকেটারকে নিয়ে বিশেষ আয়োজন সাজিয়েছে আইসিসি। ১৩ ম্যাচের এই টুর্নামেন্টে আলো ছড়াতে পারেন এমন ক্রিকেটারদে নিয়েই আইসিসির এই প্রতিবেদন। যেখানে বাংলাদেশ থেকে ঠাঁই করে নিয়েছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। সাম্প্রতিক সময়ে বল হাতে আগুন ঝরিয়েছেন। পেস বিভাগের নেতৃত্বটাও দিচ্ছেন তিনিই। বাংলাদেশের মত আইসিসির নজরটাও তাই তাসকিনের উপরেই।
আইসিসির সেই বিশেষ তালিকা একবার দেখে নেওয়া যাক
তাসকিন আহমেদ: তাসকিন নিয়ে আপনি বলতেই পারেন, ‘এভাবেও ফিরে আসা যায়।’ শেষ দুই বছরে তাসকিনের উন্নতির গ্রাফটা বেশ চোখে পড়ার মতো। পুরো বাংলাদেশই এখন পেস বোলিং এর দিক থেকে বেশ শক্তিশালী এক নাম। আর তাতে নেতৃত্বের ভূমিকায় থাকছেন ২৮ বছর বয়েসী এই পেসার। ঘরে বা বাইরে যেকোন কন্ডিশনেই তাসকিনের গতি আর সুইং বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভরসার নাম। এশিয়া কাপে ভালো কিছু করতে চাইলে তাসকিনের ওপর নির্ভর করতেই হবে বাংলাদেশকে।
বাবর আজম: ক্রীড়া জগতের খুবই জনপ্রিয় এক লাইন ‘Captain leading from the front’ পাকিস্তানের বাবর আজম সম্পর্কে এই কথাটা একেবারে ধ্রুবসত্য হয়েই ধরা দিবে। ব্যাট হাতে সময়টা দারুণ কাটছে তার। অনেকের মতেই ওয়ানডে ক্রিকেটে এই মুহূর্তে সেরা ব্যাটার বাবর আজম। আইসিসি র্যাঙ্কিংয়েও শীর্ষে আছেন তিনি। গতকাল টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেও পেয়েছেন শতকের দেখা। ক্যারিয়ারের ১৯তম শতকের পথে গড়েছেন রেকর্ডও। ঘরের মাঠের এই টুর্নামেন্টে ২৮ বছর বয়সী বাবর দারুণ কিছু করবেন বলেই আশা সকলের।
জাসপ্রীত বুমরাহ: রাজকীয় প্রত্যাবর্তন অনেকেই করেছেন। ইনজুরি থেকে ফিরে এসে নিজের ফেলে আসা ফর্ম ফিরে পাওয়া খুব একটা সহজ কিছু নয়। কিন্তু খেলোয়াড়ের নাম যখন জাসপ্রীত বুমরাহ, তখন ফর্মে ফিরে না আসাটায় বরং কঠিন। ৩২৭ দিন পর বল হাতে নিয়েই আইরিশদের বিপক্ষে দারুণ বল করেছিলেন বুমরাহ। আইসিসির মতে, এশিয়া কাপে বিশেষ কিছুই করে দেখাতে পারেন বুমরাহ।
মহেশ থিকসানা: একেবারেই ইনজুরি জর্জরিত এক দল শ্রীলঙ্কা। দলের বোলিং স্তম্ভের পুরোটাই নড়বেড়ে। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, দুশমান্থ চামিরা, লাহিরু কুমারাদের কেউই নেই। বাধ্য হয়েই ২৩ বছর বয়েসী মহেশ থিকসানার উপর বিশেষভাবে নির্ভর করতে হচ্ছে লঙ্কানদের। টুর্নামেন্টের বেশিরভাগ হবে ঘরের মাঠে। আলাদা করেই তাই নির্ভরতা বাড়বে তার উপর। যদিও সদ্য সমাপ্ত লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগটা ভাল যায়নি এই বোলারের। তবে, বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে নিয়েছেন ২১ উইকেট। আলাদা করে নজর তাই রাখতেই হচ্ছে এই স্পিনারের ওপর।
রশিদ খান: আফগানিস্তান দলের পোস্টারবয় বলা চলে রশিদ খানই। সময়ের সেরা লেগ স্পিনার তিনি। স্পিননির্ভর আফগান বোলিং লাইনআপের নেতৃত্বে থাকছেন তিনি। দলের প্রয়োজনে ব্যাটটাও চালাতে পারেন ঠিকঠাকভাবে। ২৪ বছর বয়সী এই তারকাকে কেন্দ্র করেই পরিকল্পনা সাজিয়েছে দলটি। বিশ্বব্যাপী ফ্র্যাঞ্চাইজ ক্রিকেটের বড় নাম তিনি। এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের ভালো করার দিকটাও নির্ভর করছে রশিদ খানের ওপরেই।
গুলশান ঝা: বাকিদের তুলনায় অপরিচিত এক নাম গুলশান ঝা। নেপালের সবচেয়ে বড় তারকা অবশ্য সন্দীপ লামিচানের। কিন্তু পাদপ্রদীপের আড়ালে থাকা গুলশানের উপরেই এবার নজর রাখতে বলছে আইসিসি। এর পেছনে যুক্তিও আছে অবশ্য। এশিয়া কাপে হিমালয়ের পাদদেশের দেশটির সুযোগ পাওয়ার পেছনে লামিচানের পাশাপাশি দারুণ অবদান রেখেছেন গুলশান। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বেও দারুণ খেলেছিলেন। বড় কোনো লক্ষ্য না থাকলেও ভারত ও পাকিস্তানের গ্রুপে থাকা দলটা চমকে দিতে চায় ফেবারিটদের।