মো. আশিকুর রহমান টুটুল, নাটোর প্রতিনিধিঃ শরতের মাঝে নাটোরের লালপুরে মধুবৃক্ষ খেজুরের রস সংগ্রহের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে আগাম গাছ ঝুড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে এই অঞ্চলের গাছিরা। যদিও এই মধুবৃক্ষের রস ও গুড় তৈরি হয়ে থাকে শীতকালে।
স্থানীয়রা বলছেন, ‘এই উপজেলায় মধৃবৃক্ষ খেজুরের গাছ একটি অন্যতম সম্পাদ। হেমন্তের প্রথমে উপজেলার বাজার গুলিতে উঠতে শুরু করবে সুস্বাদু খেজুরের পাটালি গুড়। মধুবৃক্ষ খেজুরের রস, গুড় ও পাটালি উৎপাদনে লালপুর উপজেলা প্রসিদ্ধ। এ অঞ্চলের খেজুর গুড়ের পাটালি রাজশাহী, ঢাকা, চাঁপাই, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম, খুলনা, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয়ে থাকে। অবহেলায় বেড়ে উঠা খেজুরের গাছের কদর এখন অনেক বেশি। সকাল থেকে শুরু হয় মধুবৃক্ষ খেজুরের গাছ ঝুড়ার কাজ। কিছুদিন পরে এ সকল গাছ থেকে শুরু হবে রস সংগ্রহের পালা। গাছ ঝুড়া ও রস সংগ্রহকে ঘীর এই জনপদের গ্রামীণ জীবনে শুরু হয়েছে কর্মচাঞ্চল্য। খেজুরের রস ও গুড় দিয়ে তৈরি করা হয় হরেক রকমের পিঠা-পুলি, ক্ষির ও পায়েস। তবে কিছু অসাধু মুনাফালোভী গুড় উৎপাদনকারীর কারণে উপজেলার এই ঐতিহ্য এখন ম্লান হতে চলেছে।
বর্তমানে উপজেলার কয়েক হাজার পরিবারের আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে খেজুর গাছের ওপর নির্ভরশীল। সরকারের সুদৃষ্টির মাধ্যমে এই খাতের উন্নয়নের আশা করেন স্থানীয়রা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায় অনেক গাছিই খেজুরের গাছ ঝুড়ছেন। এ সময় কথা হয় সাইদুল ইসলাম, হাসিবুল ইসলাম নামের কয়েকজন গাছির সঙ্গে তারা বলেন, ‘সময় না হলেও আমরা একটু আগামই খেজুর গাছ ঝুড়ছি। আগাম রস নামাতে পারলে বাজারে চাহিদা ও দাম ভালো পাওয়া যাবে। গ্রাম-বাংলার সম্ভাবনাময় লাভজনক এই খাতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় দিনে দিনে খাতটি বিলুপ্তির পথে।’
লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মুল বানীন দ্যুতি বলেন,‘খেজুর গাছ এই উপজেলার অন্যতম সম্পদ। কোনো অসাধু ব্যবসায়ী ভেজাল খেজুরের গুড় উৎপাদন করতে না পারে সে ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানান তিনি ।