আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় ‘নবান্ন অভিযান’ শুরু করে পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রসমাজ। যদিও সেই আন্দোলন সফল হয়নি। তখন ‘বাংলা বনধ’ কর্মসূচি ডেকে তাদের পাশে দাঁড়াতে চাইল বিরোধী দল বিজেপি। বনধ সফল করার নানা চেষ্টা করলেও শেষে ব্যর্থ হয় তারা। হুমকি, আস্ফালন এবং গায়ের জোর দিয়েও সাধারণ মানুষকে ঘরবন্দি করে রাখতে পারেনি বিজেপি। দলের নেতাকর্মীরা রক্তচক্ষু দেখালেও বেলা গড়াতেই স্বাভাবিক ছন্দেই চলাফেরা করতে শুরু করে মানুষজন।
এর মধ্যেই বিতর্কিত এক কাণ্ডে আলোচনায় এসেছেন বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক ফাল্গুনী চক্রবর্তী। এক নারী পুলিশ সদস্যকে কামড় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ উঠেছে, বুধবার (২৮ আগস্ট) রায়গঞ্জে এক নারী কনস্টেবল বনধ সমর্থকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে গেলে তার হাতে কামড়ে দেন বিজেপি নেত্রী ফাল্গুনী।
এক প্রতিবেদনে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস বাংলা জানিয়েছে, ‘বাংলা বনধ’ কর্মসূচিতে বিজেপি নেতাকর্মীরা জোর করে যানচলাচল স্তব্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যান। বাধা দেন রায়গঞ্জ থানার নারী কনস্টেবলরা। তখন বিজেপি নেত্রী ফাল্গুনী চক্রবর্তী কামড় বসিয়ে দেন এক নারী কনস্টেবলের হাতে। কারণ ওই নারী কনস্টেবল তাকে সরাতে গিয়েছিলেন। তখনই সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। সেই ভিডিও মুহূর্তেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।
এক তরুণী চিকিৎসকের ওপর নির্যাতনের সুবিচার চাইতে নেমে আরেক নারী কনস্টেবলকে এমন করে কামড়ে দেওয়ায় বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বেশ সমালোচনা হচ্ছে। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী।
তিনি বলেন, ‘বিজেপি বিচার চাইতে রাস্তায় নামছে না। বরং চক্রান্ত করে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করাই তাদের উদ্দেশ্য। একজন মহিলা নেত্রী আন্দোলনের নামে হিংসাত্মক কার্যকলাপ করছেন। পায়ের তলা থেকে মাটি সরে না গেলে কেউ এমন করতে পারেন না।
বনধ সফল করার নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার। তারা জোর করে যানচলাচল স্তব্ধ করতে যান। তখন তাতে বাধা দেন রায়গঞ্জ থানার এক নারী কনস্টেবল। এতে তাকে কামড় দেন ফাল্গুনী।
এছাড়া, নারী চিকিৎসকের ওপর নির্যাতনের সুবিচার চাইতে এমন কাণ্ড করবে বিজেপি নেত্রী, তা কেউ কল্পনা করতে পারেননি। যদিও বিষয়টি চাউর হতেই ফাল্গুনী দেবী বলেন, ‘আজকের বনধে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিলেন। সেটি দেখেই রায়গঞ্জ থানার পুলিশ অতিসক্রিয় হয়ে ওঠে। তাই আত্মরক্ষার জন্য আবেগের বশে ঘটনাটি ঘটে গেছে। এটার পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।’
এ বিষয়ে রায়গঞ্জ থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, তদন্ত চলছে।
রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার সানা আখতার বলেন, বনধকে কেন্দ্র করে ৩৮ জনকে আটক করা হয়েছে। আর ইসলামপুরে দু’জনকে আটক করা হয়েছে।