প্রত্যয় নিউজডেস্ক: ফসফিন গ্যাসের সন্ধান মিলেছে শুক্র গ্রহে। এই গ্যাস পৃথিবীতে জীবিত প্রাণীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। আর তাদের এই দাবি পৃথিবীর নিকটতম গ্রহটিতে প্রাণের অস্তিত্ব সম্পর্কে নতুন ধারণা হাজির করেছে।
প্রাণের অস্তিত্ব মেলার ইঙ্গিত পেতেই এবার শুক্র গ্রহকে অগ্রাধিকার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। ভিনগ্রহে প্রাণের সন্ধানে শুক্রকে অগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংস্থাটির প্রধান জিম ব্রিডেনস্টাইন।
গত সোমবার নেচার অ্যাস্ট্রোনমি জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলেন, তারা শুক্রের বায়ুমণ্ডলে ফসফিন নামক একটি গ্যাস শনাক্ত করেছেন, যা গ্রহের মেঘের মধ্যে জীবনের উপস্থিতির নির্দেশ করতে পারে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলেও এই গ্যাস রয়েছে।
জিম ব্রিডেনস্টাইন এক টুইটে লেখেন, ‘শুক্র গ্রহে অ্যানেরোবিক বায়োলজির উপজাত পণ্য ফসফিন আবিষ্কার পৃথিবীর বাইরে জীবনের সন্ধানে একটি সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। প্রায় ১০ বছর আগে নাসা পৃথিবীর উপরের বায়ুমণ্ডলে ১২ হাজার ফুট উপরে মাইক্রোবিয়াল জীবন আবিষ্কার করেছিল। এখন শুক্রকে অগ্রাধিকার দেয়ার সময় এসেছে।’
শুক্র গ্রহের তাপমাত্রার ব্যাপারে বলা হয়, এই গ্রহের যে উচ্চ তাপমাত্রা রয়েছে, তা সাধারণত সীসা গলানোর জন্য উত্তপ্ত চুলার মতো। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, শুক্র গ্রহের তাপমাত্রা ৪৬৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রায় প্রাণের অস্তিত্ব টিকে থাকার সম্ভাবনা একেবারে ক্ষীণ।
শুক্রের উপরের দিকে মেঘের তাপমাত্রা যদি ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অবধি হয়, সেটাও অবিশ্বাস্যভাবে অ্যাসিডিক। এই গ্রহ প্রায় ৯০ শতাংশ সালফিউরিক অ্যাসিডে ভরা। সেখানে বেঁচে থাকা যেকোনো জীবাণুর জন্য বড় সমস্যা তৈরি করে। তবে শুক্রের বায়ুমণ্ডলে শনাক্ত হওয়া ফসফিনের উৎসটি বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এটি জীবিত কিছু থেকেই আসতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও জাপানের গবেষকদের যে দল এ নিয়ে গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, তাদের বিশ্বাস, এই আবিষ্কারটি তাৎপর্যপূর্ণ। তারা ফসফিন তৈরির অনেক বিকল্প উপায়কেই বাতিল করতে পেরেছেন। তবে জীবনের উপস্থিতি নিশ্চিতের জন্য আরও অনেক বেশি কাজ করা দরকার বলে স্বীকার করেছেন তারা।
নাসা জানিয়েছে, তাদের পরবর্তী চারটি মিশনের মধ্যে দুটি শুক্র গ্রহকে কেন্দ্র করে। ইউরোপের এনভিশন মিশনও হবে শুক্রকে কেন্দ্র করে, যেখানে নাসাও অংশীদার।