বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:
বিধান নগরে নিজের বাসভবনের কাছে গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কার করতে নেমে পড়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিধান নগরের অনেক এলাকায় এখনও অনেক গাছ পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে রয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষকে কষ্ট করে অনেকটা হেঁটে ঘুর পথে যাতায়াত করতে হচ্ছে। তাই দলীয় কর্মীদের নিয়ে সোমবার সকালে বেশ কিছু গাছ কেটে রাস্তা সাফ করেন তিনি। বলা বাহুল্য, ঘটনাটি রাজ্য রাজনীতিতে রীতিমতো চর্চার বিষয় হয়ে ওঠে। যে দিলীপ ঘোষ সারাদিন সরকারের সমালোচনা করতে ব্যস্ত থাকেন, তাঁকে এ ভাবে সরকারের কাজ নিজের হাতে করতে দেখে অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেন।
এদিন এই কাজের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে দিলীপবাবু বলেন, ‘আমফান তো সাধারণ ঘূর্ণিঝড় ছিল না, ছিল সুপার সাইক্লোন। এত বড় বিপর্যয় কোনও সরকারের পক্ষেই একা সামলানো সম্ভব নয়। হয়তো তাই ঝড় চলে যাওয়ার পরেও এতদিন হয়ে গেল এখানে পুরসভার কোনও কর্মীকে এই কাজ করতে এগিয়ে আসতে দেখিনি। তাই সমস্ত নাগরিকেরই উচিত এই কাজে সরকারকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসা। সরকার তাদের মতো করে তাদের কাজ করুক। কিন্তু সাধারণ মানুষেরও নিজেদের মতো করে কাজে হাত লাগানো উচিত। তা হলে কাজটা দ্রুত করা সম্ভব হবে।’
যদিও ত্রাণের কাজে গিয়ে দিলীপ ঘোষ বারবার পুলিশের কাছে বাধা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি। গড়িয়ার পর তিনি পূর্ব মেদিনীপুরে একাধিক এলাকা পরিদর্শন করতে গেলে নন্দকুমার ব্লকে বিশাল পুলিশ বাহিনী তাঁর পথ আটকে দেয়। ক্ষুব্ধ দিলীপবাবু অভিযোগ করেন, ‘আমাকে আটকাতে যত পুলিশ পাঠাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী, তা না করে তিনি যদি তাদের ত্রাণের কাজে ব্যবহার করতেন, তা হলে সাধারণ দুর্গত মানুষেরই উপকার হত।’ শুধু দিলীপ ঘোষই নন, হুগলির উত্তরপাড়ায় এলাকা পরিদর্শন করতে গিয়ে বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ উঠেছে। সায়ন্তনবাবুর দাবি, উত্তরপাড়ার সিএ মাঠের সামনে তৃণমূল নেতা দিলীপ যাদবের নেতৃত্বে কিছু দুষ্কৃতী তাঁর এবং বিজেপি কর্মীদের ওপর চড়াও হয়।
ত্রাণ দিতে বিরোধীদের বাধা দেওয়া নিয়ে সরব হয়েছেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তিনি বলেছেন, ‘যে সব মানুষ আজ ভয়ঙ্কর সমস্যার মধ্যে পড়ে গিয়েছেন, তাঁরা কিন্তু ত্রাণ পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। তাঁরা ত্রাণের পরিচয় বা রাজনৈতিক রং দেখতে চান না। অথচ তৃণমূলের অলিখিত নির্দেশ, শাসক দল ছাড়া অন্য কোনও দল ত্রাণ নিয়ে যেতে পারবে না। মানুষ যতই বিপদে পড়ুক, তাতে তাদের কিছু এসে–যায় না।’ তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘যে রাজনীতি এই সরকার করছে, তাতে আরও বড় বিপর্যয় হতে পারে রাজ্যে।’ উল্লেখ্য, দিলীপ ঘোষ ছাড়াও শান্তনু ঠাকুর–সহ রাজ্যের অন্য বিজেপি সাংসদরা ত্রাণের কাজে বের হলে পুলিশ আটকে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।