প্রত্যয় নিউজডেস্ক: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনী যে নির্যাতন চালিয়েছে তার নতুন প্রমাণপত্র সংগ্রহ করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
দেশটির বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মাধ্যমে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
সম্প্রতি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির (এএ) সংঘর্ষের ঘটনা বেড়ে গেছে। এর মধ্যেই অ্যামনেস্টির এমন তথ্য-প্রমাণ সামনে এলো।
সোমবার রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের বিভিন্ন ছবি ও ভিডিসহ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি। এরপরই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ডেপুটি রিজিওনাল ডিরেক্টর ফর ক্যাম্পেইনস মিং ইউ হাহ বলেন, বর্তমানে আরাকান বিদ্রোহীদের সঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সংঘর্ষের কোনও লক্ষণ চোখে পড়ছে না।
তবুও ওই অঞ্চলে বহু বেসামরিকের মৃত্যু হচ্ছে। সেখানে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর হত্যা-নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের অবহেলার চোখে দেখছে। ফলে সেখানে হিংসার ঘটনা বেড়েই চলেছে।
অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দুটি ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি গত ১৮ সেপ্টেম্বরের। সে সময় ৪৪ বছর বয়সী এক নারী মিয়ানমারের সেনাঘাঁটির কাছে বাঁশ সংগ্রহ করতে গিয়ে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে প্রাণ হারান।
অন্যদিকে গত ৮ সেপ্টেম্বর রাখাইন প্রদেশের মাইবোন এলাকায় এক নারী ও তার মেয়েকে গুলি করে হত্যা করে মিয়ানমার সেনারা। মৃত নারীর স্বামীর অভিযোগ, আচমকা তার স্ত্রী ও মেয়ের উপর গুলি চালাতে শুরু করে সেনারা।
ওই এলাকায় কোনও আরাকান বিদ্রোহী না থাকা সত্ত্বেও কাছের সেনাঘাঁটি থেকে আক্রমণ চালানো হয়। গ্রামবাসী মনে করছেন, তাদের নিকটস্থ সামরিক ঘাঁটি থেকে ভারী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
অ্যামনেস্টির স্যাটেলাইট বিশ্নেষণে বিভিন্ন তথ্য উঠে এসেছে। এ থেকে জানা যাচ্ছে যে, গত সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে মধ্য রাখাইনের একটি গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গত ৩ সেপ্টেম্বর রাখাইনের একটি গ্রামে আক্রমণ চালায় মিয়ানমার সেনারা।
সেদিন সন্ধ্যায় সামরিক বাহিনী দু’জনকে গ্রেফতার করে এবং পরদিন সকালে তাদের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। অপরদিকে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন বলেছেন, আরাকান বিদ্রোহীরা তাদের সামরিক ঘাঁটির পাশেই একটি গাড়ির ওপর আক্রমণ করেছিল।