শেষ হচ্ছে শীতকালীন সবজির মৌসুম। শেষ সময়ে কৃষকরা তাদের ক্ষেতের অবশিষ্ট সবজি তুলে সেখানে নতুন করে তরমুজসহ অন্যান্য ফসলের চাষ করায় ব্যস্ত রয়েছেন। সবজির মৌসুম শেষ দিকে হলেও বাজারে কোনো সবজির দাম বাড়েনি। তবে চালের বাজারে অস্থিরতা বেড়েই চলেছে। নতুন ওঠা চাল বা আমদানি করা চাল প্রভাব ফেলতে পারছে না বাজারগুলোতে। তবে আলু আর পেঁয়াজের কোনো কমতি নেই খুলনার কাঁচাবাজারগুলোতে। পেঁয়াজের দাম একটু বেড়েছে।
শনিবার সকালে (১৩ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে খুলনার গল্লামারী কাঁচাবাজার, মিস্ত্রিপাড়া বাজার, রূপসা বাজার ও টুটপাড়া জোড়কল বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে সবজির সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। বাজারগুলোতে শীতকালীন সব সবজিরই দাম রয়েছে আগের মতোই।
নগরীর মিস্ত্রিপাড়া বাজারে গিয়ে দেখা যায়, নতুন আলু প্রতি কেজি ১৪ দরে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ২৫, বেগুন ৩০, বিটকপি ১০, পালং শাক ২০, শিম ২০, লাউ ৩০, মুলা ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি। বিদেশ থেকে আমদানি করা কালী হয়ে যাওয়া পেঁয়াজের দিকে এখন আর কেউ ফিরেও চাইছেন না। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা।
মিস্ত্রিপাড়ায় বাজার করতে আসা বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম সাগর, মহিতুর রহমান, জেসমিন আরা বলেন, শীতের সবজির দাম আগের মতোই। তবে চালের দাম নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে তারা বলেন, সব পণ্যেরই ঘুরে ঘুরে দাম বাড়ছে। কখনো চাল, কখনো পেঁয়াজ আবার কখনো তেলের দাম বাড়ছে।
তাদের মতে, বাজার মনিটরিং না থাকা ও অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় না আনার কারণে সব ব্যবসায়ীরাই জনগণের ক্ষতি করে চলেছেন।
টুটপাড়া জোড়কল বাজারের চাল বিক্রেতা আবু বক্কর, গোলাম আলী, লিটন জানান, বর্তমানে তারা আমদানিকৃত চাল ৫০ থেকে ৫৩ টাকা দরে পাইকারি বাজার থেকে কিনছেন এবং খুচরা পর্যায়ে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি করছেন। মিনিকেট সরু ৬৬ টাকা, মাঝারি মানের ৫৮ টাকা, বাসমতি ৬৩ টাকা, ভালো মানের চাল ৬৪ টাকায় বিক্রি করছেন। দু-একদিনের মধ্যে আরও একদফা এই দাম বাড়তে পারে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
মিস্ত্রিপাড়া বাজারের সবজি বিক্রেতা খালেক হাওলাদার ও গোলাম রসুল বলেন, শীত এখন অনেক কমে গেছে। শীতকালীন সবজিও এখন শেষ পর্যায়ে, কিন্তু দাম রয়েছে আগের মতোই। তারা আরও বলেন, গত মাসে আলুর চাহিদা ছিল অনেক বেশি। কিন্তু সেই চাহিদা কমে গেছে।
তবে সবজির বাজারে দাম যেমন স্থির রয়েছে মাছের বাজারও তেমনি স্বাভাবিক রয়েছে। এই সময়ে বাজারে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে টেংরা মাছের। এক কেজি টেংরা মাছ (মাঝারি সাইজের) ৩৮০ টাকা, শোল মাছ ৪৫০ টাকা, ভেটকি মাছ ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পারশে মাছ ৫০০ টাকা, শিং মাছ ৫০০ টাকা, রুই মাছ (এক কেজি সাইজের, দেশি) ২৫০ টাকা, কাতলা মাছ ২০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাকা চিংড়ি ৪৮০ টাকা। আর পাঙ্গাশ ৭০ থেকে ১২০ টাকা, তেলাপিয়া ৮০ টাকা থেকে ১২০ টাকা এবং সামুদ্রিক মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা প্রতি কেজি।