ভাস্কর্য ভাঙচুরকারীদের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেছেন, ‘রাতের আঁধারে তোরা জাতির পিতার ভাস্কর্যে আঘাত হানবি! পারলে সামনে আয়। দেখব তোরা কত পারিস। তোদের মোকাবিলায় আমি ছাত্রলীগ সভাপতি একাই একশ।’
কুষ্টিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের প্রতিবাদে শনিবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত এক বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের সহস্রাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘আজকের এই ডিসেম্বর মাসে আমরা কী দেখলাম! যিনি তিল তিল করে তার জীবনের সবকিছু দিয়ে আমাদেরকে বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। সেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের অবমাননা করা হয়েছে। আপনারা সকলেই জানেন এ ডিসেম্বরে এ কাজ কে করতে পারে? সে আমাদের সকলের পরিচিত। যারা একাত্তর সালে বাংলাদেশকে স্বীকার করেনি। যারা পাকিস্তানিদের সঙ্গে রাজাকারি করেছে। সেই পাকিস্তানের পেতাত্মারা আজকের স্থিতিশীল বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য রাতের অন্ধকারে চোরের মতো বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের অবমাননা করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে জাতির পিতাকে তারা ভয় পায়, তার ভাস্কর্যকে তারা ভয় পায়। এই কারণে বঙ্গবন্ধুর সেই তর্জনী তারা যখন সারা বাংলাদেশে দেখতে পায়, তখন তাদের ঘুম হারাম হয়ে যায়। তারা রাতে ঘুমাতে পারে না। তাদের বুকের পানি শুকিয়ে যায়।’
ভাস্কর্য ভাঙচুরকারীদের উদ্দেশে আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘আপনারা যদি রাতের আঁধারে চোরের মতো এসে আমাদের জাতির পিতার ভাস্কর্যে আঘাত হানেন এই চোরকে আমরা কিছু বলব না। দিনের আলোকে আমাদের সামনে আসেন। আমরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সবসময় রাজপথে আছি, মাঠে আছি। কান ধরে ওঠবস করিয়ে পাকিস্তানিদের দেশছাড়া করেছি। এখন আপনাদের কানে ধরে ওঠবস করানোর সময় এসেছে।’
মামুনুল হকের উদ্দেশে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘মিছিল করেন আবার দৌড়িয়ে পালান। আমাদের মাদরাসা ভাইদের কী শিক্ষা দিচ্ছেন? ধর্মের অপব্যাখ্যা করে আপনারা কী বোঝাতে চান? জাতির পিতার উপহার দেয়া এই বাংলাদেশকে নিয়ে যদি আপনারা অরাজকতা করার চেষ্টা করেন। তাহলে কানধরে ওঠবস করে কিন্তু দিশা পাবেন না। একজনেরও কিন্তু পিঠের চামড়া থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘সারাদেশে ছাত্রলীগের প্রতিটা নেতাকর্মী জাতির পিতার আদর্শ ধারণ করে চলে। জাতির পিতাকে মন থেকে মুছে দিতে পারবেন না। আপনারা যারা মূর্তি ও ভাস্কর্যকে সামনে এনে বিভাজন সৃষ্টি করতে চান তাদের উদ্দেশ্য আমরা বুঝে গেছি। আপনাদের পেয়ারের পাকিস্তানের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। আপনাদের বাপেরা পাকিস্তানের ভালোবাসা এখনো ছাড়তে পারেনি। সেই পাকিস্তানের বীর্য দিয়ে তৈরি তাদের সন্তানেরা আজকে অরাজকতা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। আমাদেরকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তোদেরকে দাঁতভাঙা জবাব দেবে, তোরা মনে রাখিস। তোরা ফেসবুকে বড় বড় কথা বলিস, পারলে সামনে আয়। দেখব তোদের কত বড় সাহস। রাতের আঁধারে তোরা জাতির পিতার ভাস্কর্যে আঘাত হানবি। পারলে সামনে আয়।’
নাহিয়ান জয় বলেন, ‘আমি ছাত্রলীগের সভাপতি, আমি প্রটোকল ছাড়া চলি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রত্যেকটা নেতাকর্মী প্রটোকল ছাড়া চলে। তোরা সামনে আসিস। আমি একাই একশ, ছাত্রলীগের প্রতিটা নেতাকর্মীই একাই একশ।’
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে আগামীকাল রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় সারাদেশের সকল ইউনিটকে একযোগে বিক্ষোভ করার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম শামীম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান আল ইমরান, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দীন, উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদার, ফরিদা পারভিনসহ কেন্দ্রীয়, ঢাক বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।