পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘পুলিশে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন এসেছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সফলতার সঙ্গে কাজ করছে বাংলাদেশ। প্রশিক্ষণ ও প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নজর। আমরা দক্ষিণ এশিয়ার লিডিং ফোর্স হতে চাই। এজন্য পুলিশ সদস্যদের বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।’
মঙ্গলবার (৯ মার্চ) দুপুর ১২টায় রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত পুলিশ স্টাফ কলেজের ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে মাস্টার্স ইন অ্যাপ্লাইড ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ ম্যানেজমেন্ট (এমএসিপিএম) ডিগ্রির সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে আমরা একটি পুলিশকে সুসংহত ও পেশাগত বাহিনী হিসেবে গড়তে চাই। সেজন্য প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। এজন্য পুলিশের প্রত্যেকটি স্তরের সদস্যদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হচ্ছে।’
‘পুলিশ একটি ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস পুলিশকে ছাড়া কোনো দেশ চিন্তা করা যায় না। বাংলাদেশ সরকার পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। মানুষের প্রত্যাশা বাড়ছে, পুলিশও এগিয়ে যাচ্ছে।’
আইজিপি বলেন, ‘প্রশিক্ষণের পুরাতন কাঠামো বাদ দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নতুন কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। বেসিক ট্রেনিং পাঠ্যক্রম আধুনিকায়ন করা হয়েছে। সে অনুযায়ী পুলিশের প্রত্যেক স্তরের কর্মকর্তা-সদস্যদের প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। পুলিশ স্টাফ কলেজ এক্ষেত্রে থিংক ট্যাঙ্ক হিসেবে কাজ করছে। আশা করছি আগামী দু বছর পর জনগণ এর ফল পাবে।’
পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর ড. মো. নাজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মো. মশিউর রহমান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এমডিএস (একাডেমিক অ্যান্ড রিসার্চ) মো. গোলাম রসুল। ডিগ্রি অর্জনকারীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গোপালগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা। তিনটি ব্যাচে ডিগ্রি অর্জনকারী ৫৭ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ ফল লাভ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজি (এঅ্যান্ডও) ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, অতিরিক্ত আইজি এসবি মীর শহীদুল ইসলাম, এপিবিএন’র অতিরিক্ত আইজি মো. মোশাররফ হোসেন, টিএন্ডআইএম’র অতিরিক্ত আইজি মো. ইব্রাহিম ফাতমী, অতিরিক্ত আইজি (অর্থ) এস এম রুহুল আমিন, অতিরিক্ত আইজি (এইচআরএম) মো. মাজহারুল ইসলাম, এটিইউর অতিরিক্ত আইজি মো. কামরুল আহসান, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ দফতর সূত্রে জানা যায়, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ব্যাচের মোট ৫৭ জন ডিগ্রি অর্জনকারীকে সার্টিফিকেট দেয়া হয়। এর মধ্যে প্রথম ব্যাচে ১৪ জন, দ্বিতীয় ব্যাচে ১৯ জন এবং তৃতীয় ব্যাচে ২৪ জন রয়েছেন। তাদের মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশের ৩১ জন, সশস্ত্র বাহিনীর ৬ জন, আইনজীবী ৩ জন, কর্পোরেট সার্ভিস ৭ জন, শিক্ষক ৩ জন, চিকিৎসক ১ জন, সাংবাদিক ১ জন এবং অন্যান্য সরকারি চাকরিজীবী ৫ জন রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বাংলাদেশ পুলিশের অ্যাপেক্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ থেকে মাস্টার্স ইন অ্যাপ্লাইড ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ ম্যানেজমেন্ট ডিগ্রি দেয়া হচ্ছে।