প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) থেকে বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ, সময়ের হিসেবে প্রায় নয় মাসের ব্যবধান। গত ১৫ জানুয়ারি বিপিএলে শেষ ম্যাচ খেলেছিলেন ডানহাতি পেসার রুবেল হোসেন। আর প্রেসিডেন্টস কাপের শেষ ম্যাচটি খেললেন ২৫ অক্টোবর। নয় মাসের ব্যবধানে দুই টুর্নামেন্টেই সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর নাম রুবেল হোসেন।
মাঝের সময়টায় বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ, পাকিস্তান সফর ও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের প্রতিটিতে ১টি করে মোট ৩ ম্যাচ খেলেছেন রুবেল। সেই তিন ম্যাচে তার শিকার মাত্র ৪টি উইকেট। কিন্তু ফের পূর্ণাঙ্গ টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ পেয়েই আলো ছড়ালেন রুবেল।
বিপিএলে যেমন ২০ উইকেট নিয়ে ছিলেন যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী, তেমনি প্রেসিডেন্টস কাপেও যুগ্মভাবে সেরা বোলার তিনিই। আসরের সেরা বোলার হিসেবে জিতেছেন ১ লাখ টাকার অর্থ পুরস্কার।
নাজমুল শান্ত একাদশের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে উইকেটশূন্য ছিলেন রুবেল। তবে পরের চার ম্যাচেই নিয়েছেন একের বেশি উইকেট। মাহমুদউল্লাহ একাদশের ফাইনালে খেলার পেছনে তার আক্রমণাত্মক বোলিংয়ের অবদান অনেক বেশি। বিশেষ করে তামিম একাদশের বিপক্ষে নিজেদের শেষ ম্যাচে মাত্র ৩৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে মূল ধাক্কাটা দিয়েছিলেন রুবেলই।
সেই ম্যাচে একপর্যায়ে রুবেলের বোলিং ফিগার ছিল ৫-৩-৫-৩; তামিম একাদশের টপঅর্ডার রীতিমতো একাই ধসিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। শেষপর্যন্ত ১০ ওভারে ৪ মেডেনের সহায়তায় ৩৪ রান খরচায় ৪ উইকেট নেন তিনি, দলের ৪ উইকেটের জয়ে জেতেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। ফাইনালের আগে তিন ম্যাচে যথাক্রমে ৩, ৩ ও ৪ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর তালিকায় দুই নম্বরে ছিলেন।
রোববারের ফাইনাল ম্যাচে নাজমুল একাদশের ইনিংসে প্রথম আঘাতটাও হানেন রুবেল। প্রথম ওভারেই বোল্ড করে দেন ওপেনার সাইফ হাসানকে। পরে স্লগ ওভারে ফিরিয়েছেন ইনিংসের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ইরফান শুক্কুরকেও। রুবেলের ওভারে স্কুপ করতে গিয়ে সরাসরি বোল্ড হয়ে যান ৭৭ বলে ৭৫ রান করা শুক্কুর।
শেষের এ উইকেটটি নেয়ার মাধ্যমেই যৌথভাবে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী হয়েছেন রুবেল। সবমিলিয়ে পাঁচ ম্যাচে মাত্র ১৩.৪১ গড়ে ১২ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ইকোনমিটাও ঈর্ষনীয়, ওভারপ্রতি খরচ করেছেন মাত্র ৪.০২ রান। এছাড়া আসরের সর্বোচ্চ ৮টি মেইডেন ওভার এসেছে রুবেলের হাত থেকেই। সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় দলে অনিয়মিত হয়ে পড়লেও ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করে দলে ফেরার দাবিটা জোরালোই রাখছেন রুবেল।
অবশ্য দারুণ টুর্নামেন্ট কাটালেও এককভাবে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী হতে পারেননি রুবেল। তার সমান ১২টি উইকেট নিয়েছেন তামিম ইকবাল একাদশের ডানহাতি পেসার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও। ফাইনালের আগেই বাদ পড়ায় রুবেলের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলতে পেরেছেন সাইফ। আসরের সেরা বোলিং ফিগার ২৬ রানে ৫ উইকেটও রয়েছে তার নামের পাশে।
এছাড়া উইকেটশিকারে দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি আর কোনো বোলার। ফাইনাল ম্যাচে আগুনে বোলিং করে ৫ উইকেট নেয়ার সুমন খানের তিন ম্যাচে মোট শিকার ৯ উইকেট। সাইফ ছাড়া শুধুমাত্র তিনিই ম্যাচে ৫ উইকেট নিতে পেরেছেন।
বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী
১/ রুবেল হোসেন : পাঁচ ম্যাচে ১২ উইকেট, সেরা বোলিং ৪/৩৪
২/ মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন : চার ম্যাচে ১২ উইকেট, সেরা বোলিং ৫/২৬
৩/ সুমন খান : তিন ম্যাচে ৯ উইকেট, সেরা বোলিং ৫/৩৮
৪/ মোস্তাফিজুর রহমান : চার ম্যাচে ৮ উইকেট, সেরা বোলিং ৩/১৫
৫/ আল-আমিন হোসেন : পাঁচ ম্যাচে ৮ উইকেট, সেরা বোলিং ৩/৪৩