বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা:ফের রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে একাধিক টুইট করলেন রাজ্যপাল। জানালেন, এই সময় যখন রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে করোনার বিরুদ্ধে সকলের লড়াই করা উচিত, তখন মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য তাঁকে ব্যথিত করেছে। পালটা রাজ্যপালের সমালোচনা করে রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু অভিযোগ করেছেন, তিনি বিজেপির মুখপাত্রের মতো কথা বলছেন। ফলে রাজ্যপাল–রাজ্য সঙ্ঘাত আরও জটিল হল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।বুধবার নবান্নয় সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি জানান, রাজ্য সরকার যখন করোনার বিরুদ্ধে লড়ছে, তখন বিরোধী দলগুলি তাতে ব্যাঘাত ঘটানোর চেষ্টা করছে।
সাংবাদিকদের সামনে তখনই তিনি এমন কথাও বলেন, রাজ্যে কেউ কেউ শকুনির মতো অপেক্ষা করে বসে রয়েছে, কখন একজন মারা যাবে, আর তারা ঠুকরে খাবে। বুধবার তার আক্রমণের নিশানায় ছিল মূলত বিজেপিই। তাদের বিরুদ্ধে তিনি সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করার অভিযোগও তোলেন। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য প্রচারিত হওয়ার পরই মুখ খোলে বিজেপি। তারা মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ও করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার তীব্র সমালোচনা করে।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার টুইট করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় বলেন, ‘এখন মাথায় ছাদ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা। এই সময় আমাদের একসঙ্গে কাজ করা উচিত। এটা রাজনীতির সময় নয়। সব দলকেই আমি সঙ্ঘবদ্ধভাবে কাজ করতে বলছি। করোনা মোকাবিলায় বিরোধীদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী যে আচরণ করছেন, তা দুঃখজনক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিরোধীরা এমন ব্যবহার করছে যেন শকুন মৃতদেহের জন্য অপেক্ষা করছে। তাঁর এই মন্তব্য আমায় ব্যথিত করেছে।’ শুধু এখানেই থেমে থাকেননি রাজ্যপাল। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার অভিযোগও করেছেন। বলেছেন, ‘সংবাদ মাধ্যমের প্রতিও আপনার আচরণ ঠিক নয়। আপনি সংবাদ মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে লুকোনোর মতো কিছু থাকার কথা নয়। সংবাদ মাধ্যম গণতন্ত্রের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। মিশর, লিবিয়া, টিউনিসিয়ায় শাসক দলের ক্ষমতাচ্যুত করার ক্ষেত্রে সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।’
রাজ্যপালের টুইটের পরই তাঁর সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠেন মন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় আমাদের মুখ্যমন্ত্রী রাস্তায় নেমে যে কাজ করছেন, তার তুলনা হয় না। অথচ তাঁকে ক্রমাগত আক্রমণ করে চলেছেন রাজ্যপাল। তিনি মোটেও রাজ্যপালের মতো আচরণ করছেন না। তাঁর আচরণ হয়ে গিয়েছে বিজেপি মুখপাত্রের মতো। তাঁর উচিত, রাজভবন ছেড়ে দিয়ে বিজেপির অফিসে বসা। তিনি বিজেপি একজন নেতার মতোই এখন কথা বলছেন।’