তৃতীয় ধাপে বগুড়ার পাঁচ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ২৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এদের মধ্যে বিদ্রোহী রয়েছে একাধিক পৌরসভায়। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগে রয়েছে তিনজন এবং বিএনপিতে রয়েছে সাতজন। বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলীয় মনোনয়ন প্রদানে ভুল করায় এবং দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবির প্রেক্ষিতে তারা প্রার্থী হয়েছেন। জয় তাদের হবেই।
শিবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তৌহিদুর রহমান মানিক। তার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুল মান্নান শেখ। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মতিয়ার রহমান মতিনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন থানা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গোফফার এবং বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মতিয়ার রহমান মতিনের স্ত্রী ফৌজিয়া খানম।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ইঞ্জিনিয়ার আবদুল মান্নান শেখ বলেন, ‘দলীয় মনোনয়ন চেয়েও পায়নি। তাছাড়া তৃণমূলের নেতাকর্মীদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রার্থী হয়েছি। সামনে যাচাই-বাছাই আছে। নেতাকর্মীরা চাইলে অবশ্যই ভোট করবো।’
বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল গোফফার বলেন, ‘পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড থেকে তিনবারের বিজয়ী কাউন্সিলর আমি। এজন্য এবার মেয়র পদে নির্বাচন করার জন্য দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। কিন্তু দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। এজন্য আমিও প্রার্থী হয়েছি। ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো আমি।’
কাহালু পৌরসভায় মেয়র পদে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন পৌর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ফেরদাউস আলম।
ধুনট পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী টিআইএম নুরুন্নবী তারিক। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান মেয়র ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এজিএম বাদশাহ।
নন্দীগ্রাম পৌরসভায় মেয়র পদে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সুশান্ত কুমার শান্ত’র বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান মেয়র বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েল।
গাবতলী পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী হলেন বর্তমান মেয়র সাইফুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন কৃষক দলের পৌর কমিটির সভাপতি আইয়ুব হোসেন রাজু এবং যুবদলের কর্মী সাজেদুল আলম রাসেল। এই পৌরসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোমিনুল হক শিলুর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত মাস্টার আবদুল বাসেদ।
বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমার মজনু বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে বলেন, ‘প্রত্যাহারের দিন পর্যন্ত দেখা হবে। তারা যদি নিজেরাই নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ায়, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বগুড়া জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রার্থী হলে, তার যদি দলীয় পদ-পদবি থাকে তবে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’
জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুব আলম শাহ জানান, আগামী ৩ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র বাছাই, ১০ জানুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহার এবং ১১ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। আগামী ৩০ জানুয়ারি এসব পৌরসভা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।