রাকিব শান্ত, উত্তরবঙ্গ ব্যুরো প্রধান: বগুড়া জেলার সদর থানাধীন কলেজ ছাত্রীর সহিত সোহান নামক এক ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্কের জের ধরে বিভিন্ন সময়ে ফুসলিয়ে মেয়ের কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের গোপন ছবি ও ভিডিওচিত্র ইমোতে তার প্রেমিকের নিকট প্রেরণ করে।
প্রতারক প্রেমিক সোহান ও তার বন্ধু সিরাজুল ভিকটিমের অশ্লীল ছবি, ভিডিও প্রদর্শন ও ব্ল্যাকমেইল করে টাকা এবং স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেওয়ায় সময় ও সুযোগ খুঁজতে থাকে। বিষয়টি মেয়ের বাবা সোহান ও সিরাজুল এর অভিভাবক ও আত্মীয়স্বজনকে জানানোর পর সোহান ও সিরাজুল আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে এবং কিছুদিন যাবত মোবাইল ফোন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর বেশ কিছু ছবি ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখায় এবং শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে ভিকটিম তার ভুল বুঝতে পেরে সম্ভ্রম হারানোসহ প্রাণনাশের কথা ভেবে কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে র্যাব-১২ সিপিএসসি, বগুড়া ক্যাম্পে এসে ঘটনাটির বিস্তারিত জানায়। র্যাবের পরামর্শে ভিকটিম আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ১৮(১)(ক)/২৫(১)(ক)/ ২৯/২৩(১) তৎসহ ২৮৫/৩৮৬ পেনাল কোড ধারায় মামলা রুজু করেছে। এর পর থেকেই র্যাব-১২, বগুড়া ক্যাম্পের গোয়েন্দা দল ও আভিযানিক দল বগুড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় এবং এক পর্যায়ে র্যাব ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন, (জি), বিএন এর নেতৃত্বে র্যাব-১২, বগুড়া ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল ০১ জুলাই ২০২১ ইং তারিখ ভোর ০৫.০০ ঘটিকায় বগুড়া জেলার সদর থানাধীন রেলগেইট এলাকা হতে আসামী ১। মোঃ শামীম প্রামানিক সোহান (২৩),পিতা- মোঃ শেরেকুল প্রামানিক, সাং-কালিবালা (উত্তরপাড়া), থানা ও জেলা বগুড়া, ২। মোঃ সিরাজুল প্রামানিক (২০), পিতা- মোঃ জাহিদুল প্রামানিক,সাং-মধ্য কাতুলী, থানা-গাবতলী, জেলা-বগুড়াদ্বয়কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামীদ্বয় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মেয়ের সাথে প্রেমের অভিনয় করে। তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের গোপন ভিডিওচিত্র ধারণ করে তাদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করে টাকা হাতিয়ে নেয়।
আসামীরা ভিকটিমের নিকট ২ লাখ টাকা দাবী করে ভিডিও ফেরৎ দিবে বলে শর্তদেয় এবং ভিকটিম তার স্বর্ণালংকার ও নগদ ৩৭,০০০/-টাকা প্রদান করে। তারপরও তারা বাকী টাকা আদায় এবং শারীরিক সম্পর্কের জন্য চাপ দেয়। আসামীদের মোবাইল হতে ভিডিওচিত্র ও ছবি উদ্ধার করা হয়েছে। আসামীদ্বয় এলাকায় বখাটে বলে পরিচিত এবং তাদের বিরুদ্ধে এলাকার জনসাধারণের অনেক অভিযোগ রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বগুড়া জেলার সদর থানায় সোপর্দ হয়েছে।