স্পোর্টস ডেস্ক: ‘ক্যাম্প ন্যু’ কাতালান ক্লাব বার্সেলোনার অবিচ্ছেদ্য অংশ। ৬৬ বছরের পুরনো এই স্টেডিয়ামে আসছে নতুনত্ব। তাই তো নতুন করে সংস্কারের জন্য আগামী মৌসুমে আর ক্যাম্প ন্যুতে স্বয়ং বার্সেলোনাকেও খেলতে দেখা যাবে না। ১৯৫৭ সালে যাত্রা শুরু করা ক্যাম্প ন্যু ৯৯ হাজার ৩৫৪ আসনসংখ্যার বিচারে ইউরোপের সবচেয়ে বড়। এছাড়াও এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফুটবল স্টেডিয়াম। যার পরিধি আরও বাড়ছে। স্টেডিয়ামের ধারণ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে করা হচ্ছে ১ লাখ ৫ হাজার।
২০১৪ সালে গৃহীত এসপাই বার্সা প্রকল্পের অধীনে ক্যাম্প ন্যু সংস্কার করা হচ্ছে। আগামী মৌসুম শেষে ক্যাম্প ন্যুতে খেলা ফিরলেও সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৬ সালে। এই কাজে বিভিন্ন বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ১ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ইউরো পেয়েছে বার্সেলোনা কর্তৃপক্ষ।
ব্রিটিশ একটি গণমাধ্যমের দাবি, মোট আসনের পাঁচ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ভিআইপি আসনের জন্য। যার জন্য সংস্কারের পর স্টেডিয়ামের মোট আসনসংখ্যা বাড়বে।
স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজের উদ্বোধন করেন বার্সেলোনা সভাপতি হুয়ান লাপোর্তা। এই সময় সেখানে ছিলেন বার্সা কোচ জাভি হার্নান্দেজ ও ক্লাব কিংবদন্তী সার্জিও বুসকেটস। বার্সায় পুরো ক্যারিয়ার কাটানো নারী দলের সাবেক ফুটবলার মেলানি সেরানোও উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে। ওই সময় সংস্কার শুরু করতে রূপকভাবে প্রথম প্রস্তর-ফলক স্থাপন করেছেন বার্সার প্রতিনিধিরা। এর মধ্য দিয়ে বাস্তবতার পথে যাত্রা শুরু করল এসপাই বার্সা প্রকল্প।
ক্যাম্প ন্যুতে একটু মাটি খুঁড়ে তাতে বিচিত্র সব স্মৃতি সংরক্ষণ করে রাখার মাধ্যমে এই কাজের উদ্বোধন করা হলো। কোচ জাভি তাতে রেখেছেন বার্সার একটি জার্সি, বুসকেটস রেখেছেন অধিনায়কের আর্মব্যান্ড, নারী দলের সাবেক লেফটব্যাক মেলানি সেরানো একটি বল রাখেন গর্তে। বয়সভিত্তিক দলের দুজন খেলোয়াড় রেখেছেন কিছু বুট, আর সভাপতি হুয়ান লাপোর্তা ওই গর্তে বার্সা ও কাতালুনিয়া অঞ্চলের পতাকা রেখেছেন। গর্তটি ভরাট করার মধ্য দিয়ে সংস্কারের কাজও শুরু হলো ক্যাম্প ন্যু’র।
লাপোর্তা বলেন, ‘বার্সালোনার সঙ্গে থাকার জন্য আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার পর ক্যাম্প ন্যু আগের চেয়েও দৃষ্টিনন্দন হবে। আমরা সমর্থকদের বিশ্বের সেরা একটি স্টেডিয়াম উপহার দিতে চাই।’
কাতালান ক্লাবটি সংস্কার কাজ চলাকালে আপাতত অন্য মাঠে নিজেদের হোম ম্যাচগুলো খেলবে। আগামী মৌসুমের পুরোটাই বার্সেলোনা অলিম্পিক স্টেডিয়ামে খেলবে। এই স্টেডিয়ামটিও প্রায় শতবর্ষ পুরনো। বার্সেলোনার নগর প্রতিদ্বন্দ্বী এস্পানিওল ১৯৯৭ থেকে ১২ বছর এই ভেন্যুতে খেলেছে। প্রায় ৫৬ হাজার ধারণ ক্ষমতার মাঠটি বার্সা প্রথমবারের মতো হোম ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করবে।
পরিসংখ্যানভিত্তিক টুইটার অ্যাকাউন্ট ‘মিস্টারচিপ’ বলছে, সবমিলিয়ে ক্যাম্প ন্যু-তে ১৬৭৭ ম্যাচ খেলেছে বার্সা। জিতেছে ১২৪৮ ম্যাচ, ড্র ২৬৮ ও হার ১৬১ ম্যাচে। ৪৩২৪ গোল করার পথে তারা ১৩৩২ গোল হজম করেছে। এই মাঠে বার্সা (৪৩২৪) যত গোল করেছে, তার মধ্যে ৫২৮ গোলে অবদান (গোল করা ও করানো) রয়েছে লিওনেল মেসির, যা মোট গোলের ১২ শতাংশ।