বরিশাল প্রতিনিধি: বরিশাল নগরীর রুপাতলী এলাকায় মাদক নিরাময় কেন্দ্রের কর্মীদের সাথে ধস্তাধস্তি করার সময় এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় ড্রিম লাইফ নামক ওই মাদক নিরাময় কেন্দ্রের ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিয়ে আসলেও যুবককের স্বজনদের হত্যা দাবির প্রেক্ষাপটে পরবর্তীতে ওই ৫জনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়। বুধবার বিকেলে রুপাতলীর রেডিও স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনায় নিহত যুবকের নাম সুমন খান (৩০)। তিনি রুপাতলী রেডিও স্টেশন এলাকার খান বাড়ির মৃত ছাত্তার খানের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিহত সুমনের কিছুটা মানসিক বিকারগ্রস্ত হওয়ায় সে প্রায়ই বাসায় সকলকে মারধর করতো। এই কারণে তাকে এর আগেও ড্রিম লাইফ মাদক নিরাময় কেন্দ্রে রাখা হয়েছিলো। গত দেড়মাস যাবৎ সে বাসায় ছিল। গত মঙ্গলবার রাতেও সুমন তার মাকে মারধর করায় বিষয়টি সুমনের অপর দুই ভাই জানতে পেরে তারা ড্রিম লাইফ সেন্টারে জানায়। পরবর্তীতে বিকেলে ড্রিম লাইফ সেন্টার থেকে ৬ থেকে ৭ জন লোক আসে সুমনকে নিয়ে যেতে।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, পরিবারকে অবগত না করেই সুমনকে নিয়ে যেতে উদ্যত হয় মাদক নিরাময় কেন্দ্রের সদস্যরা। এর একপর্যায়ে ধস্তাধস্তিতে ঘরের আসবাবপত্রের সাথে সুমনের আঘাত লাগার পর তাকে ঘর থেকে বের করে মাটিতে ফেলে পিঠের ওপর ৩ থেকে ৪ জন যুবক উঠে চেপে ধরাসহ গামছা ও রশি দিয়ে বাধার চেষ্টা করে। এতে সুমন নিস্তেজ হয়ে পড়লে পরিস্থিতি বেগতিক বুঝতে পেরে তড়িঘড়ি করে একটি অটোরিকশায় তাকে ওঠায়। কিন্তু এর আগেই তার মৃত্যু নিশ্চিত হয়। পরে বিষয়টি স্থানীয়রা টের পেলে মাদক নিরাময় কেন্দ্রের কর্মীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের ৪ জনকে আটক করে। এবং ওই সময় প্রতিষ্ঠান মালিক বাপ্পী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তাকেও আটক করা হয়। এ ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড দাবি করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্র্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে মৃত যুবকের পরিবার অভিযোগ করে। সেই অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে ওই ৫ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে এবং আদালতে প্রেরণ করে। অন্যদিনে যুবকের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার সকালে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।