বিশেষ সংবাদদাতা:
একদিকে ভারত জুড়ে যখন করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠছে, অন্যদিকে লকডাউনে জনজীবন স্তব্ধ হয়ে রয়েছে, ঠিক তার মাঝেই বিভিন্ন অভিযোগে পশ্চিমবাংলার সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধারাবাহিক সমালোচনা করে চলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পালটা মুখ খুলেছেন মন্ত্রী সুজিত বসু এবং ফিরহাদ হাকিমও।
রবিবারও রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় কড়া আক্রমণ শানান মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। এদিন টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘রাজ্যের অবস্থা খুবই খারাপ। করোনা পরিস্থিতিতে মানুষ খুবই দুর্গতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। অথচ মুখ্যমন্ত্রী পরিকল্পিত ভাবে সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে ‘সব ঠিক আছে’ বলে প্রচার করছেন। এটা একটা কল্পচিত্র ছাড়া আর কিছুই নয়।’ তিনি রীতিমতো ক্ষোভ জানিয়ে লিখেছেন, ‘এর ফলে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সব কিছু ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’
এদিন রাজ্যপাল সরকারের আধিকারিকদেরও সমালোচনা করেন। টুইটে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মন তুলোর চেয়েও নরম। তিনি রাজ্যবাসীর দুর্দশা সহ্য করতে পারছেন না। তাই মুখ খুলছেন। কিন্তু তাঁর এই মনোভাব কারও কারও পছন্দ হচ্ছে না। তাই তাঁর বিরুদ্ধে অশুভ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু তাঁকে এ ভাবে আটকানো যাবে না বলেও এদিন তিনি জানিয়ে দেন। তিনি লিখেছেন, ‘মানুষের যন্ত্রণা লাঘব করার জন্য আমি কাজ করে যাব। আমার মন নরম হলেও চাপ নেওয়ার ক্ষমতা আমার আছে।’ তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘প্রশাসনের আচরণ রীতিমতো বিরক্তিকর। বিশেষ করে এখন সময় এসেছে আধিকারিকদের নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করার। শিরদাঁড়া সোজা করে তাঁদের কাজ করা উচিত। কিন্তু তাঁরা আত্মসমর্পণ করে ফেলেছেন।’
রাজ্যপালের এই তোপের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন সরকারের দুই মন্ত্রীও। এদিন ফিরহাদ হাকিম রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সমালোচনা করে বলেন, ‘রাজ্যপাল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মুখ্যমন্ত্রী ও সরকারের সমালোচনা করছেন। তিনি যদি সত্যিই মানুষের ভালো চাইতেন, তা হলে কেন্দ্রীয় সরকার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সমালোচনা করতেন। তাঁর সেই ক্ষমতা নেই।’ মন্ত্রী সুজিত বসুও তীব্র সমালোচনা করেন রাজ্যপালের। তিনি বলেন, ‘বিজেপির সুবিধা করে দিতেই তিনি মুখ্যমন্ত্রী ও সরকারের সমালোচনা করছেন। তাঁর উচিত, রাজ্যপালের পদ ছেড়ে দিয়ে বিজেপি অফিসেব বসা।’