ওয়েব ডেস্ক: আমার বয়স এখন ৫০ বছর। আমার জন্মে তো দেখিইনি। আমার বাপ-দাদারাও কোনদিন এত পানি দেখেনি। এর আগে বেশ কয়েকবার বন্যা হয়েছিল। সবশেষ ২০০১ সালে। তখনও এই রাস্তাটি ডুবতে দেখিনি। এরপর তো দফায় দফায় কাজ করে রাস্তাটি উঁচু করা হল। কিন্তু এখন এই রাস্তাটিতে কোমর পানি।
শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বন্যাকবলিত ইছাপুরা এলাকায় আলাপচারিতায় এসব কথা জানান ওই এলাকার বানভাসি জহিরুল হক।
জহিরুল হক বলেন, ছোট বেলায় বাপ দাদাদের কাছে বন্যার অনেক গল্প শুনতাম। কিন্তু এখন যে পানি এসেছে, এই পানির কাছে সেসব গল্প তিলভাগও কিছু না। হঠাৎ করেই বসত ঘরের এক তৃতীয়াংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে ঘরের অনেক আসবাব। এই বন্যা ইতিহাসের যে কোনো বন্যার চেয়েও ভয়াবহ।
তিনি বলেন, স্ত্রী সন্তানদের আশ্রয় কেন্দ্রে রেখে এসেছি। দুইটা গরু আছে। সেগুলো অঢেল পানিতে। সেগুলোকে দেখতে এসেছি। সময় যত যাচ্ছে পানি ততোই বাড়ছে। গরুগুলো হয়তো পানিতে তলিয়ে যাবে, নয়তো এই পানিতে থেকে থেকে এমনিতেই মারা যাবে। কী করব? কোথায় নেব? আশ্রয় কেন্দ্রের মাঠে কোমর পানি। ওখানে নেওয়া যে কথা এখানে থাকা একই কথা। আমাদের বলার আর ভাষা নেই।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লার গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে যায় বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া এলাকায়। বাঁধ ভাঙার পর থেকে গোমতীর পানিতে তলিয়ে যায় বুড়িচং উপজেলার শতাধিক গ্রাম। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ।